বিরোধীদের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছেটানোর দাওয়াই মালদহের তৃণমূল নেত্রীর, কারণ ব্যাখ্যাও করলেন

পঞ্চায়েত ভোটের মুখে জেলায়-জেলায় হুঙ্কার-হুঁশিয়ারির রাজনীতি।

পঞ্চায়েত ভোটের মুখে জেলায়-জেলায় হুঙ্কার-হুঁশিয়ারির রাজনীতি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
maldah tmc leader threatened to throw chili powder in the eyes of the opposition

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পঞ্চায়েত ভোট আসতেই রাজ্যের সর্বত্র হুঙ্কার, হুঁশিয়ারি জারি রয়েছে। এতদিন পেটানো, প্রতিরোধের কথা শোনা যাচ্ছিল। এবার তা ছাপিয়ে গেল মালদহের এক সভায় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর বক্তব্যে। বিরোধীরা গ্রামে গেলে চোখে লঙ্কার গুঁড়ো দেওয়ার নিদান দিলেন ওই নেত্রী। পাশাপাশি বললেন, 'গাছে বেঁধে চণ্ডীপাঠ পড়াবে মানুষ'। মঞ্চ থেকে এই হুঁশিয়ারি মালদহ তৃণমূলের মহিলা ব্লক সভানেত্রীর।

Advertisment

শাসক বিরোধীর বাক-যুদ্ধে পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে সরগরম মালদহের রাজনীতি। রবিবার মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুরে। সেই কর্মসূচি থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য ওই তৃণমূল নেত্রীর। বিজেপি এবং সিপিআইএমকে একযোগে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। লঙ্কার গুঁড়ো দেওয়ার দাওয়াই দেন।

রবিবার বিকেলে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক কর্মসূচি ছিল বরোই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা সভানেত্রী মৃণালিনী মাইতি, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদিকা শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী সুজাতা সাহা, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস, মহিলা জেলা সদস্যা পপি চক্রবর্তী সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। এদিন সভা মঞ্চ থেকে প্রকাশ্যে একের পর এক বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল নেত্রীদের। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

Advertisment
publive-image
হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূলের সভা। ছবি: মধুমিতা দে।

আরও পড়ুন- চড় কষিয়েও অধরা তৃণমূলকর্মী, থাপ্পড় খাওয়া BJP নেতার নামেই উল্টে মামলা

ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরোধীদের মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দেন, 'বিরোধীরা গ্রামে গেলে চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দিন। গাছে বেঁধে রেখে রাজ্য সরকারের সব প্রকল্পের নাম গুলো চণ্ডীপাঠ করে পড়াবে মানুষ।' এই মঞ্চ থেকেই ভোটের আগে ফের জয় শ্রীরাম স্লোগান নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন মহিলা তৃণমূলের জেলা সম্পাদিকা শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য। তিনি প্রকাশ্য সভা মঞ্চ থেকে বলেন, 'বিজেপিকে ভোট দিয়ে জয় শ্রীরাম বলে ঠিক লক্ষীর ভাণ্ডার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। তাঁদেরকে বোঝাতে হবে রামকে নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না।'

তিনি অভিযোগ করেন, 'আবাস যোজনার নাম করে বিরোধীদের পাঠানো এজেন্টরা গ্রামে গ্রামে টাকা তুলছে মানুষের কাছ থেকে।' তৃণমূল নেত্রীদের একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে সরগম মালদহের রাজনীতি। এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। জনসাধারণ লঙ্কার গুঁড়ো কাদের ছেটাবে সেটা তাঁরাই ঠিক করবে। শাসক-বিরোধীর বাকযুদ্ধে পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে কনকনে শীতের মাঝেই ঊর্ধ্বমুখী রাজনীতির পারদ।

আরও পড়ুন- লালন মৃত্যু: অত্যন্ত কড়া CBI, ২ অফিসার-সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

মালদহ জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৃণালিনী মাইতি বলেন, 'আগামী ১৮ জানুয়ারি মালদা জেলায় চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আসছেন। আজ এখানে তার প্রস্তুতি সভা ছিল। রাজ্য সরকার যখনই কোনও প্রকল্প বের করে বিরোধীরা চক্রান্ত করে গ্রামে গ্রামে কিছু এজেন্ট পাঠায়। তাঁরা মানুষের কাছ থেকে অল্প অল্প করে টাকা নেয়। হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে নিয়ে সেটাই বিশাল পরিমাণ দুর্নীতি হয়ে দাঁড়ায়।'

কেন লঙ্কার গুঁড়ো ছেটানোর দাওয়াই দিলেন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী সুজাতা সাহা। তিনি বলেন, 'এখানে হুমকির কিছু নেই। বিরোধীদের পায়ের তলায় মাটি নেই তাই কুৎসা করে যাচ্ছে। মানুষ সেই জন্যই লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেবে। রাজ্য সরকারের যত উন্নয়ন মূলক প্রকল্প বিরোধীরা দেখতে পাচ্ছে না। তাই চন্ডীপাঠ করে পড়াবে মানুষ।'

আরও পড়ুন- FD-তে ৮.৩০% পর্যন্ত সুদ, ৪ সরকারি ব্যাঙ্কের তাক লাগানো স্কিম সম্পর্কে জানুন

উত্তর মালদহ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, 'মানুষ লঙ্কার গুঁড়ো কাকে ছেটাবে সেটা মানুষ ঠিক করবে। প্রকল্পের টাকা দেয় কেন্দ্র সরকার। রাজ্য খেলা, মেলা ছাড়া কিছু করে না। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ সব জবাব দেবে।'

tmc bjp West Bengal Maldah Oppositions