বাংলায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম ও প্রাপ্য অর্থ নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে বিতর্ক-বিবাদ চলছেই। এরইমধ্যে শহিদ দিবসে তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতৃত্বের দু'রকম বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছে রাজনৈতিক মহল। এদিকে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, প্রকল্পের নাম বদলালে বরাদ্দ কেন্দ্রীয় অর্থ পাবে না বাংলা। কোনও কোনও জায়গায় প্রকল্পের নাম পরিবর্তনকে 'স্টিকার' সরকার বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর প্রথম ২১ জুলাইয়ের দায়িত্বভার সামলালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও প্রধান বক্তা ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় এজেন্সির বাড়বাড়ন্ত, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ থেকে বঞ্চিত হওয়া, জিএসটিসহ নানা বিষয় নিয়ে বিজেপির মুন্ডুপাত করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য এক রাজনৈতিক অবস্থানে না হওয়ায় প্রমাদ গুনছে রাজনৈতিক মহল।
গত বছর ডিসেম্বর থেকে ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা বকেয়া রয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্য সরকার। তৃণমূলের দাবি, এছাড়া আরও নানা প্রকল্পের টাকাও বাংলায় পাঠাচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। প্রকল্পের নাম নিয়ে টানাপোড়েন চলছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে। কেন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করা হবে? সেই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। তৃণমূলের বক্তব্য, কেন্দ্র যে টাকা বরাদ্দ করে তার মধ্যে রাজ্য় থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া করের টাকা রয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থ বলে চিৎকার করলেই তো হবে না। শহিদ দিবসে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেছেন, ‘বাংলাকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। কেন? বাংলায় তোমরা হেরেছ বলে। ১০০ দিনের টাকা জলদি দাও। প্রাপ্য টাকাটুকু দাও। দরিদ্র মানুষের সব হরণ করে নিচ্ছে। গরিবের টাকা কেন আটকে রেখেছো? না হলে দিল্লিতে গিয়ে ঘেরাও হবে।’ তবে কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ভিন্ন মত রেখেছেন।
শহিদ দিবসের মঞ্চেই এবিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘প্রকল্প হবে, বাংলার নামে হবে। না হলে কেন্দ্রের টাকা আমাদের দরকার নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি দেড় কোটি মহিলাকে লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার দিতে পারে, রাস্তার উন্নয়ন করতে পারে, তাহলে উনিই সব দেবেন আপনাদের। এই মডেলই অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করব।’ একই ইস্যুতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি দিল্লি ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছেন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রকল্পের নাম বাংলার নামেই হবে, তাতে কেন্দ্রীয় টাকা না দিলেও চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, দুই শীর্ষ নেতৃত্বের কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে ভিন্ন মতামত স্পষ্ট। কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে তৃণমূলের প্রকৃত অবস্থান কী তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে অভিজ্ঞমহলে।