একসময়ে সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা তৈরি নিয়ে টাটা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছিলেন। বাম জমানায় তাঁর ২৬ দিনের অনশন আজ ইতিহাস। রাজ্য ছেড়েছিল টাটা গোষ্ঠী। তার কয়েক বছর বাদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হন। এক যুগ পর আবার মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে বাংলার বিপুল বিনিয়োগ সেই টাটা গোষ্ঠীর। লক্ষ্মীবারে খড়গপুরে টাটা মেটালিক্সের সম্প্রসারিত কারখানার ইউনিটের উদ্বোধন করলেন মমতা।
এই ইউনিটের জন্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে টাটা গোষ্ঠী। এই ইউনিটে স্থানীয় ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থান বলে আশা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্তত হাজার খানেক স্থানীয় বাসিন্দা চাকরি পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম টাটাদের কোনও প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মমতা। যা রাজনৈতিক ভাবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ক্ষমতা হারানোর পর বামেরা, এবং পরে বিজেপি-কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, সিঙ্গুরদের থেকে টাটাদের তাড়িয়ে ছিলেন মমতা। বাংলার শিল্পের মৃত্যুঘণ্টা তখনই বেজে গিয়েছিল, এমন কটাক্ষও করা হয়েছিল।
ক্ষমতায় আসার এক যুগ পর সেই মমতার হাতেই টাটাদের ইউনিটের উদ্বোধন এক আশ্চর্য সমাপতন। প্রসঙ্গত, খড়গপুরে টাটা মেটালিক্সের এই ইউনিট আগেই ছিল। ২০১৯ সাল থেকে ৬০০ কোটি বিনিয়োগে সেই কারখানার সম্প্রসারণ হয়েছে। নয়া ইউনিটের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন চা-ঝালমুড়ি-ঘুগনি, চপশিল্পের পর ফের বিকল্প কর্মসংস্থানের দিশা দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী
এদিন টাটা গোষ্ঠীর আধিকারিকরা তখন মঞ্চে, সেইসময় তাঁদের সামনেই কর্মসংস্থান নিয়ে কেন্দ্রকে মোক্ষম তোপ দাগলেন মমতা। বললেন, "কর্মসংস্থানই আমাদের সরকারের লক্ষ্য। আর আমাদের রাজ্যে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে। দেশে ৪৫ শতাংশ বেকারত্বের হার। সেখানে আমরা কর্মসংস্থান তৈরি করেছি।"
আরও পড়ুন উত্তাল বিধানসভা, দুর্নীতি ইস্যুতে সোচ্চার BJP, ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’ টিপ্পনিতে তুমুল বিক্ষোভ তৃণমূলের
এদিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মমতা বলেন, "আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে কর্মসংস্থানে বাংলাকে এক নম্বরে নিয়ে যাবই! এটা আমার চ্যালেঞ্জ। আমরা চুপচাপ কাজ করি, কেউ জানতে পারেন না। অন্ডাল বিমানবন্দরকে আমরা আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট করব। পুরুলিয়াতেও বিমানবন্দর হবে। দেউচা-পাঁচামিতে এক লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। এ কারণেই বিজেপি-সিপিএম বাধা দিচ্ছে। কয়লাখনি হলে লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। রাজনীতি করবে কী করে?"