নূপুর শর্মা, নবীন জিন্দালদের পয়গম্বর নিয়ে মন্তব্যের বিরোধীতার আঁচ পড়ল বাংলায়। হাওড়া জেলার অঙ্কুরহাটিতে ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চালাচ্ছে ইমাম-মোয়াজ্জেমদের অ্যাসোসিয়েশন। ডোমজুড়ের জাতীয় সড়কেও একই অবস্থা। জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হওয়ায় গরমে নাকাল মানুষ। শয়ে শয়ে গাড়ি আটকে পড়েছে। এই অবস্থায় জাতীয় সড়ক থেকে অবরোধ তোলার আর্জি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
নবান্নে মন্ত্রী তথা কলকাতা মেয়রকে পাশে বসিয়ে এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'আমি সকাল থেকে নবান্নে বসে দেখছি, হাজার হাজার গাড়ি আটকে রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স আটকে রয়েছে, ফায়ার ব্রিগেড আটকে রয়েছে। মানুষের দুর্ভোগের কোনও সীমা নেই। জাতীয় সড়ক আটকে দেওয়া মানে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। এতে কার লাভ হচ্ছে? ঘৃণার রাজনীতিকে আমরাও কোনমতেই সমর্থন করি না। বাংলা সাম্প্রদায়িক সংহতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু প্রশ্ন হল, দিল্লির বুকে কিছু ঘটলে কেন বাংলায় তার প্রতিবাদ হবে? কারও রাগ হলে দিল্লি যান। নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। ওনার পদত্যাগ দাবিতে মিটিং, মিছিল করুন। আর এখানে থানায় থানায় অভিযোগ ডায়েরি করুন, ডেপুটেশন দিন। আইন অনুসারে ব্যবস্থা হবে। কিন্তু, বাংলা মতো শান্তিরপূর্ণ জায়গায় অবরোধ করে মানুষকে বিব্রত করা ঠিক নয়।'
এর আগে টুইটে বিদ্বেশমূলক বক্তব্যের জন্য নাম না করেই নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তোপ দেগেছেন বিজেপিকে নিশানা করে। বলেছেন, 'বিজেপির কেউ কেউ উসকে দিয়ে চলে যাবে। কিন্তু তারপর দাঙ্গা লাগলে রোখা মুশকিল। আগে বাংলাদেশের ভিডিও দেখিয়ে ওরা উসকানোর চেষ্টা করেছিল। বাংলার অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে প্রসাশন পদক্ষেপ করে। এ ধরণের ঘটনা হলেই গ্রেফতার করতাম। সুতরাং বাংলায় অবরোধ রাজনীতির প্রয়োজন নেই। সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হলে সংখ্যাগুরুদের প্রতিবাদ করতে দিন। আর সংখ্যাগুরুদের উপর অত্যাচার হলে সংখ্যালঘুরা গর্জে উঠুন।' হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রী জাতীয় সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- নূপুর শর্মার বিষ্ফোরক ধর্ম-মন্তব্যের জের! কাতার বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ হচ্ছেন ভারতীয়রা
ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে জাতীয় সড়ক অবরোধের কথা বলেও বাস্তবে এই ধরণের কোনও সংস্থাই নেই বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। নাখোদা মসজিদের ইমামের ভিডিও ফুটেজও শোনান মুখ্যমন্ত্রী। তিনিও রাজ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখতে ও অবরোধ প্রত্যাহারের অবেদন করেছেন।