scorecardresearch

‘মুকুল বিজেপি বিধায়ক’, ‘চাণক্য’ দিল্লি যেতেই বললেন মমতা

মুকুল নিয়ে আর কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?

mamata banerjee says mukul roy is bjp mla , 'মুকুল বিজেপি বিধায়ক', 'চাণক্য' দিল্লি যেতেই বললেন মমতা
একুশের জুন মাসে তৃণমূল ভবনের ছবি।

মুকুল রায়ের দিল্লি সফর ঘিরে বঙ্গ রাজনীতিতে জোর চর্চা। এসবের মধ্যেই বুধবার সকালে মুকুল নিজেই বলেছেন, ‘আমি বিজেপিতেই ছিলাম, আছি, থাকব।’ আর বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়ে দিলেন, ‘মুকুল বিজেপি বিধায়ক।’ পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় স্পষ্ট করেছেন যে, কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়কের যাওয়া আসাকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। তবে মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশুর কথা টেনেই মুখ্যমন্ত্রীর বলেছেন, ‘হতে পারে তাঁকে কোনও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।’

কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?

মুকুল রায়ের অবস্থান ঘিরে নানা জল্পনা। এদিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকেও মুকুল প্রসঙ্গ উঠে আসে। এই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেউ কোথাও যেতেই পারেন। উনি তো বিজেপির বিধায়ক। ওঁর ছেলে একটা মিসিং ডায়েরি করেছেন বলে শুনেছি। কেউ যদি বাবা মিসিং বলে ডায়েরি করে, তবে প্রশাসনের কাজ তিনি কোথায় আছেন, ভাল আছেন কি না তার খোঁজ নেওয়া।’

আরও পড়ুনফের কী বাংলার চাণক্য মুকুলের আড়ম্বরপূর্ণ ‘প্রত্যাবর্তন’? ভয়ঙ্কর দ্বিধায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব

মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশুর অভিযোগ ছিল, তাঁর বাবাকে দিল্লি নিয়ে যেতে টাকার খেলা হয়েছে। মুকুল রায়ের রাজধানী সফরের নেপথ্যে কী তাহলে এজেন্সি যোগ রয়েছে? জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘ওঁর ছেলেই এফআইআরে বলেছেন, আমার বাবা মিসিং। দু’জন নিয়ে গিয়েছে কোনও এজেন্সির মাধ্যমে। বিজেপি কি না আমি বলতে পারব না। হতে পারে তাঁকে কোনও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।’ মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘এটা ছোট ব্যাপার। আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। তবে মিসিং অভিযোগটা গুরুত্বপূর্ণ।’

আরও পড়ুন- ‘মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেব’, হঠাৎ কেন বললেন প্রচণ্ড ‘ক্ষুব্ধ’ মমতা?

দলে পরিবারতন্ত্র স্থান পেয়েছে। সেখানে আর কাজ করার পরিবেশ নেই। এমনকী দলের অন্দরে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এইসব অভিযোগ করেই ২০১৭ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মুকুল রায়। সেখানে গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি হন একদা তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। তারপর বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ১৮ আসন লাভের নেপথ্যে মুকুল রায় যে অন্যতম কারিগর, তা স্বীকার করে নিয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারাও। তৃণমূল অবশ্য সেই সময় দাবি করেছিল, সারদা থেকে নারদ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই, ইডি-র নিশানায় ছিলেন মুকুল রায়। বাধ্য হয়ে দল ছাড়েছেন তিনি।

এরপর একুশের বিধানসভা ভোটে বাংলায় ফের পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন মুকুল রায়। কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা আসন থেকে লড়াই করে বিজেপির বিদায়ক হন তিনি। দলের অন্দরের খবর ছিল, মুকুল সংঘটেন বড় দায়িত্ব পালনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, কিন্তু তাঁকে স্রেফ বিধায়ক করেই রেখে দেয় পদ্ম বাহিনী। যা নিয়েই তাঁর অসন্তোষ। এরপরই একুশের জুনে বাংলার রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়িয়ে সপুত্র মুকুল ফের জোড়-ফুলের পতাকা হাতে নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে। ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দলত্যাগী বিধায়ক হিসাবে মুকুলের বিরুদ্ধে বিধানসভায় পদ খোয়ানোর আবেদন করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই ইস্যু হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টও ওঠে। চার মাঝেই অবশ্য স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল রায়কে বিজেপি বিধায়ক বলেই ঘোষণা করেছিলেন। এমনকী বিতর্কের মাঝেই তাঁকে ১ বছরের জন্য পিএসি-র চেয়ারম্যানও করে সাসক শিবির। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল বিজেপি। শেষ পর্যন্ত এদিন খোদ মমতাই মুকুল রায়কে বিজেপির বিধায়ক বলে দাবি করেলন।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Mamata banerjee says mukul roy is bjp mla