/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/26/mamata-2025-08-26-15-58-40.jpg)
Mamata Banerjee: বক্তব্য রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Mamata Banerjee: যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি ফেরানোর দাবিতে উত্তপ্ত রাজ্য। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে ফের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি জানান, যাঁরা শিক্ষক পদে চাকরি হারিয়েছেন বা অযোগ্য বলে চিহ্নিত হয়েছেন, তাঁদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে চাইছে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাঁরা দশ বছর চাকরি করেছেন, তাঁরাও আজ 'অযোগ্য' প্রমাণিত হয়েছেন। আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। সুপ্রিম নির্দেশে হয়তো শিক্ষক তাঁরা হতে পারবেন না, কিন্তু অন্তত গ্রুপ সি পদে চাকরি পান, তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। আমাদের সরকার মানবিক সরকার।”
আরও পড়ুন- মমতার মন্তব্যের তীব্র বিরোধীতা, মেয়ো রোডে এবার ধরনা প্রাক্তন সেনাকর্তাদের
এদিন রাজ্যের মোট ৭৩ জন শিক্ষককে ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মান প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৩৯ জন স্কুলশিক্ষক, ২১ জন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ১৩ জন ভোকেশনাল ও আইআইটি বিষয়ক শিক্ষক রয়েছেন। পাশাপাশি শিক্ষা ও খেলাধুলায় উৎকর্ষের জন্য সেরা ১২টি স্কুলকেও বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়। এই মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী ও মেধাশ্রীর মতো প্রকল্পের ফলে রাজ্যে স্কুলছুটের হার কার্যত শূন্যে নেমে এসেছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন মমতা। তিনি বলেন, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার সময় রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল মাত্র ১২টি, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭-এ। আরও পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব রাজ্যপালের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। পাশাপাশি নতুন মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠেছে, কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষণ পেয়েছেন প্রায় ৪৪ লক্ষ পড়ুয়া এবং প্রায় ৪ কোটি ৫৬ লক্ষ ছাত্রছাত্রী স্কলারশিপ পাচ্ছেন।
শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন মামলার কারণে বহু শূন্যপদ আটকে আছে। তবে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে স্কুল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এরপর গ্রুপ সি ও ডি নিয়োগের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। চাকরিহারা শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, “শিক্ষকদের চাকরি চলে যাওয়ায় আমি মানসিকভাবে খুশি নই। আমাদের সরকার মানবিক সরকার। আমরা সব কিছু মানবিকভাবে দেখি। অন্তরের অন্তস্তল থেকে শিক্ষকদের শুভেচ্ছা জানাই।”
আরও পড়ুন- বুক কাঁপানো দুর্ঘটনা, মর্মান্তিক মৃত্যুমিছিল, হাসপাতালে হাহাকার, কান্নার রোল
বর্তমানে রাজ্যে মোট ৫৬ হাজার শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে ৩৫ হাজার ৭২৬টি পদের জন্য ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আরও ২১ হাজার পদ এখনও খালি রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “আমরা নিয়োগ করতে চাই। কিন্তু আইনি জটিলতায় সেটা অনেক সময় সম্ভব হয় না। আদালতকে দোষ দেব না। আমাদেরই মধ্যে কিছু কিছু লোক আছে, তাঁদের জন্য এমন হচ্ছে। কত লোকের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেল। যাঁরা আনটেন্টেড, তাঁদের কথা ভেবেই বয়সসীমা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের হাত-পা বাঁধা। কিন্তু আমরা তাঁদের সুযোগ দিচ্ছি, যাতে তাঁরা পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে ফিরতে পারেন।”
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী যখন চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন ঠিক তখনই বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ চাকরিহারা শিক্ষকদের। কেন যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না, প্রশ্ন চাকরিহারা সুমন বিশ্বাসের। তিনি বলেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা স্থগিত করুক। যোগ্যদের নির্ভুল তালিকা প্রকাশ করুন। শিক্ষাকর্মীদের অবস্থা ভয়াবহ।"