বাংলায় প্লাবন পরিস্থিতি। এ জন্য ডিভিসিকে দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাফ জানালেন, ডিভিসির না জানিয়ে জল ছেড়েছে। পাশাপাশি খাল ও বাঁধ না সংস্কার করার জন্য ঝাড়খণ্ড সরকারকেও নিশানা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
সংবাদ মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ঝাড়খণ্ডে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওরা আমাদের না বলে রাত ৩টের সময় আসানসোলে জল ছেড়েছে। আবার আসানসোলের বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় ৩৪৫ মিলিমিটার। আগে এত বৃষ্টি হয়নি। ফলে আসানসোল পুরো ডুবন্ত। একই হাল বাঁকুড়া, পুরুলিয়াও। তার পর কাল আবার ডিভিসি ১ লক্ষ কিউসেকের উপর জল ছেড়ে দিয়েছে। সমস্যা হল যে, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলেই আমাদের সমস্যা ফেস করতে হচ্ছে, বিহারে বৃষ্টি হলে আমাদের ফেস করতে হয়। ওরা যদি ওদের ড্যামগুলো একটু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখে, তা হলে অনেক জল জলাধারে ধরতে পারে। মাইথন, পাঞ্চেতে তো অনেক জল ধরার ক্ষমতা। কিন্তু ওরা প্রায় ৫০ বছর ধরে কোনও পরিষ্কার করে না। ড্রেজিং হয় না। ফলে খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের। এটা অন্যায়।'
ড্যাম ড্রেজিং না করায় ঝাড়খণ্ড সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান মমতা। বলেন,' যদি বৃষ্টির জলে আমাদের বন্যা হতো আমি বুঝতাম। বৃষ্টি বেশি হচ্ছে, আমি সামলাতাম। কিন্তু বন্যাটা হচ্ছে জল ছাড়ার জন্য। অর্থাৎ ম্যান মেড ফ্লাড।'
এই প্রথম নয়। মাস খানেক আগেই রাজ্যে অতি বৃষ্টি, সঙ্গে ডিভিসির জল ছাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি হয়েছিল। সে জন্যও ডিভিসিকে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তুলেছিলেন টম্যান মেড বন্যাটর অভিযোগ।
বিরোধী নেত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী, একাধিক বার বাংলার প্লাবনের কারণ হিসাবে ডিভিসিকে দায়ী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খাড় করেছেন 'ম্যান নেড বন্য'র তত্ত্ব।
আরও পড়ুন- জলের তোড়ে ভাঙল বাঁধ, প্লাবিত খানাকুল-আরামবাগের বিস্তীর্ণ প্রান্ত, নামল সেনা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শনিবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন তিনি। এছাড়া বন্যা কবলিত নির্দিষ্ট জেলা ভাগ করে রাজ্যের মন্ত্রীদেরও দুর্গত মানুষদের সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ অবশ্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায়, 'যাতে মানুষদের সরানো যায় চতাই জল ছাড়ার অনেক আগেই ডিভিসির তরফে রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সেই চিঠি আমার হোয়াটস্যাপে কাছে আছে। যিনি পাঠিয়েছেন তিনিই জানিয়েছিলেন যে রাজ্যের তরফে এই ধরনের অভিযোগ আসবে।'
এপ্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'নাচতে না পারলে উঠোন বাঁকাই হয়। ম্যান মেড নাকি রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা তা জানি না। তবে রাজ্য যদি মনে করে এই অবস্থা ম্যান মেড, তা হলে তো আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে।'
বৃষ্টি বাড়তেই জল ছাড়ার পরিমাণও বাড়িয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ। তাতেই বিপত্তি। হুগলির আরামবাগ, খানাকুল, পুরশুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত। হাজার-হাজার পরিবার জলবন্দি। খানাকুল-আরামবাগে মোট ৬টি বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনা নামানো হয়েছে। কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। দুর্গতদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন