নবজোয়ারে তুফান তুলতে জনসংযোগ যাত্রা মাঝপথেই থমকে গিয়েছে। সিবিআইয়ের তলবে বাঁকুড়া থেকে সোজা কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের ২২ মে থেকে জনসংযোগ যাত্রার সূচনা হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের 'যুবরাজ'। হঠাৎ কলকাতায় ডাক পড়ায় পাত্রসায়রের জনসভার হাল ধরেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুঙ্কার ছেড়ে মমতা জানিয়ে দিলেন, অভিষেককে ডেকে নবজোয়ার যাত্রা বন্ধ করা যাবে না। তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা, নবজেয়ার নবপ্লাবনে পরিণত হবে।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বঙ্গে বিপুল জয়ের পর তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক হন অভিষেক বন্দ্যপাধ্যায়। দলের সামগ্রিক সাংগঠনিক দায়-দায়িত্ব বর্তায় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের ওপর। এই ঘোষণার পর একাধিক নয়া সাংগঠনিক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছেন অভিষেক। দলের নানা স্তর থেকে বিভিন্নভাবে বাধাও পেয়েছেন তিনি। 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতি তো তিনি কার্যকর করতে পারেননি বরং আরও বেশি গেড়ে বসেছে কারও কারও ক্ষেত্রে।
একাধিক শীর্ষ নেতা প্রকাশ্যে বলতে থাকেন অভিষেক নয় মমতাই তাঁদের নেত্রী। জেলায়-জেলায় পর্যবেক্ষক পদের অবসান ঘটান। কিন্তু পরে ঘুরিয়ে দলের পক্ষে জেলায় জেলায় প্রতিনিধি মনোনীত করতে হয়। ২০২২ পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নাস্তানাবুদ হতে হয়। রাজনৈতিক মহলের মতে, নবজোয়ার যাত্রায় জনসংযোগের মাধ্যমে সরাসরি জনভিত্তি স্থাপন করাই অভিষেকের মূল লক্ষ্য। তবে এই যাত্রায় বাধা পেয়ে ভরসা সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়।
আরও পড়ুন- আজ CBI হাজিরা অভিষেকের, তার আগেই ‘কালীঘাটের কাকু’র বাড়িতে ED-র হানা
অভিষেক কলকাতা রওনা দেওয়ায় পাত্রসায়রের জনসভায় ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাছাড়া নবজোয়ার বাধাপ্রাপ্ত হলে তিনি যে জনসংযোগে যোগ দেবেন বলেও জানিয়ে দেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, অভিষেক দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব নিলেও এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের প্রধান ভরসা মমতাই। যখনই সাংগঠনিক ভাবে দলের অন্দরে অভিষেক সমস্যায় পড়েছেন তখনও ত্রাতা হয়েছেন মমতাই। সামগ্রিক ভাবে দলনেত্রী ফের সাংগঠনিক হাল ধরায় দলের অন্দরেও কানাঘুষো শুরু হয়েছে। অভিষেকের ক্ষেত্রে এ যেন এক পা এগিয়ে দু'পা পিছানো। নবজোয়ার স্থগিত করা বিজেপির চক্রান্ত বলেই মনে করছে মমতা-অভিষেক।
আরও পড়ুন- ধনুকভাঙা পণ আর হার না মানা লড়াই! পায়ে লিখেই মাধ্যমিকে ইতিহাস গড়ল জগন্নাথ!
২৫ দিনের মাথায় অভিষেকের জনসংযোগ বন্ধ রাখতে হল। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, অভিষেক সরাসরি নেতৃত্বে আসার পর তৃণমূলের একটা বড় অংশ অস্বস্তিতে থাকেন। সেই অস্বস্তি নিয়ে তাঁরা অনেক সময় দলের অভ্যন্তরে তো চর্চা করেন, কেউ কেউ প্রকাশ্যেও মন্তব্য করে দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি জনসংযোগের হাল ধরেন তাহলে তাঁরাও হাফ ছেড়ে বাঁচবেন বলেই অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।