বছরের শুরুতেই বোমা ফাটালেন শুভেন্দু অধিকারী। মুকুল রায়কে জড়িয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা। নন্দীগ্রামের বিধায়কের দাবি, শুথের আগে রাজভবনে গিয়ে মুকুল রায়কে বিরোধী দলনেতা করার জন্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অনুরোধ করতে প্রাক্তন রাজ্যপাল ধনকড়ের কাছে আর্জি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী?
সোমবার উলুবেড়িয়ায় জনসভা ছিল বিজেপির। সেখানেই বক্তব্য পেশ করেন শুভেন্দু অধিকারী। চাঁচাছোলা ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সবর হন বিরোধী দলনেতা। বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে বঞ্চিতদের কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরতের জন্য ধর্নার অনুরোধ করেন তিনি।
সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে বোমা ফাটান শুভেন্দু। বলেন, 'অমি একটা অপ্রকাশিত কথা প্রকাশ করছি। ২০২১ সালের ২রা মে ভোটের ফল বেরহয়। ৩ তারিখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলেন। তখনই উনি প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় মহোদয়কে বলেছিলেন যে, মুকুল রায়কে যেন বিরোধী দলনেতা করা হয়। ধনকড়জি যেন বিজেপির দিল্লির নেতাদের সেই অনুরোধ করেন। ওইদিন তারপরই আমি ও এখন অন্য দলে চলে যাওয়া তৎকালীন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম। তখন রাজ্যপাল এইকথা আমাদের বলেছিলেন। বিজেপি সেটা করেননি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হতাশ, বারেবারে দেউলিয়াপনার পরিচয় দিচ্ছেন।'
বিরোধী দলনেতার এই দাবিকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল রায়। তিনি বলেছেন, 'আবার প্রমাণ হল যে শুভেন্দু অধিকারীর মস্তিষ্কের ভারসাম্য ঠিক নেই।'
আরও পড়ুন- ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীকে কড়া ধমক মমতার, সংগঠনের বিশেষ দায়িত্বে দেব-রাজ, ছাড় কোন কোন তারকাদের?
তারিখ নির্দিষ্ট করে তৃণমূল সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু, ডিসেম্বর অতিক্রম করলেও ওই হুঁশিয়ারিই সার হয়েছে। সেদিক থেকে নজর ঘোরাতেই কী এবার প্রাক্তন রাজ্যপালকে জড়িয়ে মুকুল প্রসঙ্গ সামনে এনে মমতাকে আক্রমণ করতে মরিয়া শুভেন্দু অধিকারী? প্রশ্ন শাসক দলের।
মুকুল রায়কে কেন্দ্র করে বিজেপি তৃণমূল আকছাআকছি অব্যাহত। গেরুয়া দলের হয়ে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। একুশে কৃষ্ণনগর থেকে বিজেপির প্রতীকে বিধায়ক হলেও বর্তমানে মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসের বলে অভিযোগ পদ্ম বাহিনীর। দলের নানা কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। তা সত্ত্বেও মুকুল রায়ের বিধায়কপদ খারিজ করেননি বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে আদালতে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
আরও পড়ুন- ‘একটা ধানে পোকা হলে সমূলে বিনাশ করতে হয়’, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য মমতার
এসবের মধ্যেই মুকুল রায়কে গত একবছর ধরে পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান করেছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি ছিল, বিধানসভার বাইরে কে কী দল করছে সেটা বিবেচ্য নয়, খাতায়-কলমে যেহেতু মুকুল রায় বিজেপির বিদায়ক তাই তাঁকেই ওই পদের জন্য বেছে নেওয়া হয়। প্রতিবাদে মুখর হয় গেরুয়া বিধায়করা।
আরও পড়ুন- দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত তৃণমূল, মমতা সূচনা করলেন ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’
আরও পড়ুন- বাংলার বকেয়া নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে কড়া কথায় নারাজ! মমতার হল কী?