অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব-জোয়ার কর্মসূচির মাঝেই রাজ্যজুড়ে তল্লাশি অভিযানে নেমেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো। সরব তৃণমূল। মালদায় নব-জোয়ারের সভায় যা নিয়েই আগাগোড়া কেন্দ্র ও বিজেপিকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'যা চলছে, একদিন সব সামনে আসবে। আমি যদি বেঁচে থাকি না থাকি। আমি মরে গেলেও ক্ষতি নেই, পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি করে যাচ্ছি। আমার মৃত্যুর পর ববি, অভিষেকরা ওদের গেঁথে দেবে। এই জন্যই তো তৈরি করে যাচ্ছি।'
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সামনেই দলের 'পুরনো সৈনিক' ফিরহাদ হাকিমের প্রতি নেত্রীর এই আস্থা ঘাস-ফুলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যথেষ্ট তাৎপর্যবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে। কানাঘুষো খবর যে, মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাজ অভিষেকের কাছে তেমন গুরুত্ব পায় না। কলকাতা পুর এলাকায় গাড়ির পার্কিং ফি বৃদ্ধি নিয়ে ফিরহাদের বিরুদ্ধে মমতার কানে
স্বয়ং অভিষেকেই অভিযোগ তুলেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী কাছে তিরস্কৃত হন মেয়র। প্রত্যাহার করেন বর্ধিত পার্কিং ফি। এছাড়াও অভিষেক 'এক ব্যক্তি-এক পদে'র নীতি তৃণণূলে চালু করতে চাইলেও পারেননি। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের সামনের সারিতে নিয়ে আসচে মরিয়া অভিষেক। কিন্তু, ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে নারদা মামলা রয়েছে। সবমিলিয়ে 'দিদি' কাছাকাছি থাকলেও ফিরহাদের গুরুত্ব অভিষেকের কাছে যেন ততটা নয় বলেই ধারনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
আরও পড়ুন- বিক্ষোভের মুখে অভিষেক, পথ আটকালেন ‘বিদ্রোহী’ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাই
এদিন মালদায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন নব-জোয়ার কর্মসূচিতে প্রথমবার যোগ দেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কর্মসূচি মানুষের সমর্থন পাচ্ছে বলেই তাঁর যোগদান বলে দাবি করেন। সেই মঞ্চেই দলের পরবর্তী কান্ডারি হিসাবে মমতার মুখে একসঙ্গে ববি-অভিষেকের নাম উচ্চারণ যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইডি, সিবিআইয়ের পাশাপাশি এদিন বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মমতা। সীমান্তবর্তী জেলার দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, 'আগে বিএসএফ এইরকম ছিল না। বিজেপি এসে এটা করিয়েছে। এরা এখন ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকার দখল নিতে চাইছে। ওদের বিরুদ্ধে এলাকায় এলাকায় সংগঠন গড়ে তুলুন। তুলতে এলে ফাইট করুন।'
বাংলায় বিভিন্ন ঘটনায় কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে এসেছে। এই প্রসঙ্গে দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্নারত কুস্তিগিরদের উপর পুলিশি 'হামলা' নিয়ে মমতার প্রশ্ন, 'এই বেলা কেন্দ্রীয় টিম কোথায় গেল? আর বাংলায় ১৫১টা কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়েছে দু’বছরে। একটা চকোলেট বোম ফাটলেও এনআইএ দিচ্ছে আর ধূপ জ্বললেও সেন্ট্রাল টিম আসছে।'