Mamata’s visit to Furfura Sharif: দিদিকে সামনে পেয়ে আপ্লুত পীরজাদারা। কেউ করলেন অনুরোধ, কেউ রাখলেন দাবি। বিজেপির সঙ্গে ধর্মযুদ্ধের মধ্যে দীর্ঘ ৯ বছর পর ফুরফুরা শরীফে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পীরজাদাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পাশাপাশি নবনির্মিত মুসাফির খানায় পিরজাদাদের সঙ্গে ইফতার অনুষ্ঠানেও সামিল হন মমতা।
এদিনের অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই তালিকায় ছিলেন ভাঙরের বিধায়ক তথা ফুরফুরা শরীফের বাসিন্দা নৌশাদ সিদ্দিকী ও তার ভাই আব্বাস সিদ্দিকী। কিন্তু তারা কেউই এ দিন আসেননি। নৌশাদের বাড়িতে তিনি ছিলেন না। ফোনে ও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ইফতারে মিলিত হয়ে সরাসরি ফুরফুরার উন্নয়ন ও সমস্যা নিয়ে কথা বলার সুযোগ মেলায় আপ্লুত পীরজ্বাদাদের একাংশ।
এদিকে ফুরফুরা শরিফের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছেই বলেন তাঁর এখানে আসা নিয়ে সকাল থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে কটাক্ষ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে এখানে ভোটের সমীকরণ করতে আসছেন । তিনি বুঝিয়ে দেন, বিরোধীদের এই ধর্মীয় রাজনীতির অভিযোগে তিনি বিরক্ত। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘আমি যখন দুর্গাপুজো করি, কালীপুজো করি তখন তো কেউ এইসব প্রশ্ন তোলেন না। তাহলে ইফতারে যোগ দিলে এমন প্রশ্ন উঠছে কেন? সম্প্রীতি, শান্তি, ঐক্যই আমাদের বার্তা।’ তারপরই হুগলিতে একটি পলিটেকনিক কলেজ এবং ১০০ বেডের একটি হাসপাতাল আবু বক্কর সিদ্দিকীর নামে হবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, "আমি প্রয়াত আকবর আলী খন্দকারের সঙ্গে ১৫-১৬ বার ফুরফুরা শরীফে এসেছি। কিন্তু আমি আসার সময় দেখলাম সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে ভোট রাজনীতির সমীকরণ। আমি সব জায়গাতে যাই"। সোমবার ফুরফুরা আসা নিয়ে এভাবেই নিজের অবস্থান ব্যাখা করে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই তাঁর সংযোজন, "আমি গুজরাটিদের ডাণ্ডি নাচেও যাই। আমি দোল পূর্ণিমাতেও যাই। আমি গির্জাতেও যাই। জৈন মহাবীরের উৎসবেও যাই। তিনি বলেন,'আমি মনে করি বাংলার মাটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাটি। আমি যেমন দোলের শুভেচ্ছা জানিয়েছি। তেমনি ইদের মুবারকও জানিয়েছি। সবাই শান্তিতে থাকুন। শান্তি,সম্প্রীতি, ঐক্য সবাইকে ভালো রাখার জন্য এটাই আমাদের বার্তা'।
পাশাপাশি এদিন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের পাশাপাশি মসজিদ নির্মাণেরও আবেদন জানান। তিনি বলেন, মন্দির হোক আমিও চাই। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বুঝতে হবে ওইখানে শুধু হিন্দু ভাই নয়, মুসলিম ভাইয়েরাও যান। তাঁদের জন্য একটা মসজিদ কীভাবে করা যায় এটাও ওঁকে চিন্তাভাবনা করতে হবে। একই সঙ্গে উন্নয়ন ইস্যুতে রাজ্যের শাসক বিধায়ককেই নিশানা করেন ত্বহা সিদ্দিকী। জাঙ্গিপাড়া বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন ত্বহা। তিনি বলেন, "ওনার দেখা পাওয়া যায় না । যখন আসেন পাউডার মেখে আসেন । উনি ১৪ বছরে ১৪ হাজার টাকা খরচ করতে পারেননি। ফুরফুরার উন্নয়ন নিয়ে উনি ভাবেন না"।