Swapan Debnath: রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনামঞ্চে শনিবার উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ঝড়-জলের মধ্যে আপনারা রাস্তায়। তাই আপনাদের পাহারাদার হিসেবে আমাকে জেগে থাকতে হয়। আর, এবার রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ নিজেকে যাঁদের পাহারাদার বলে দাবি করলেন, তা শুনলে কার্যত চমকে উঠতে হয়। তিনি বলেছেন, 'আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাত জাগো কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মহিলাদেরকে এবং গভীর রাতে মদের দোকানে মদ খেতে যাওয়া মহিলাদেরকে আমাদেরই (তৃণমূল কংগ্রেস) পাহারা দিতে হচ্ছে।' রাজ্যের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর এহেন মন্তব্য যথেষ্টই শোরগোল ফেলেছে। স্বভাবতই, গোটা ঘটনায় বিরোধীরাও সুর চড়িয়েছেন।
বিশ্বকর্মা পুজোকে সামনে রেখে কালনায় নতুন বাসষ্ট্যান্ডে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে উঠেই মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে চলা আন্দোলনের কথা বলতে গিয়ে বেফাঁস নানা মন্তব্য করে বসেছেন। তিনি বলেন, 'রাত ২ টোয় হোক বা ১১টা, মিছিল করা কিংবা রাত জাগোয় অংশ নেওয়ার পরিবেশ বাংলায় আছে বলেই তো মায়েরা তা করতে পারছেন। আরজি কর-কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থন আছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা অর্থাৎ ফাঁসির দাবি মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছেন। আমিও তাই চাইছি।'
মদের দোকানে মহিলারা
এরপরই মন্ত্রী মহিলাদের রাত-বিরেতে মদের দোকানে গিয়ে মদ খেতে যাওয়া নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, 'আমার এলাকায় (পূর্বস্থলি দক্ষিণ বিধানসভা) আমি দেখেছি যে একটি দোকান থেকে রাত্রিবেলা মেয়েরা মদ কেনে। ওই দোকানটা পরিচিত 'বিকাশের দোকান' নামে। এই খবরটা পাওয়ার পর আমি দু'দিন পরপর সেখানে রাত্রিবেলায় গিয়েছি। কোন মেয়েরা হোটেলে মদ খেতে যায় তা দেখতে। আমি হোটেলওয়ালাকে বলে এসেছি এখন থেকে আর কোনও মহিলাকে হোটেলে মদ খেতে দেওয়া যাবেনা। এটাও তো আমাকেই দেখতে হয়। ওই মহিলারা যদি মদ খেতে যায়, যদি কোনও অঘটন ঘটে যায়, তখন কী হবে? সেজন্যে তো আমাদের পাহারা দিতে হচ্ছে।'
বেলেল্লাপনার অভিযোগ
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ রবিবারের গভীর রাতে বৃষ্টির মধ্যেও একটি জায়গায় দু'টি ছেলে ও একটি মেয়ের বিয়ার খাওয়ার ঘটনার কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, 'রাত তখন দুটো। দেখি, ওরা বিয়ার খাচ্ছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। ওই ছেলে-মেয়েদের বাবা-মাকে ফোন করে বলা হয়, রাত দু'টোর সময় আপনার মেয়ে কোন 'রাত জাগো' আন্দোলনে গেছে! পুলিশ এসে তাদের তুলে নিয়ে গেল। আমাদের ছেলেরা যদি পাহারা না দিত, তাহলে মদ্যপ অবস্থায় ওই মেয়েটার যদি কিছু হয়ে যেত, তখন তো লোকে আবার আমাদেরকেই দায়ী করত! কোনও মহিলাদের অসম্মান করার জন্য এসব কথা আমি বলছি না।' এসব বলে মন্ত্রী এমন ছেলেমেয়েদের বাবা-মায়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রতিবাদীদের সমালোচনা
আরজি করের ঘটনাকে দুঃখজনক, নিন্দনীয় বলে দাবি করলেও মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ আন্দোলনকারীদের স্বরূপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, 'টিভিতে দেখতে পাচ্ছি, আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে দিয়ে পরের দিনই বিদেশে বেড়াতে চলে গেল। পুজোয় মন নেই বললেও প্রতিবাদী মুখ, প্রতিবাদে অগ্রণী ব্যক্তিরাই পুজো উপলক্ষে স্ত্রীর জন্য কালনা শহরের বড় বড় দোকানগুলো থেকে দামি শাড়ি কিনছেন।' এমন ঘটনার সাক্ষী তিনি নিজে বলেও মন্ত্রী মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- টন টন মাছ উঠেছে গত কয়েকদিনেই! দারুণ সস্তায় সাধের ইলিশ আর দিন কয়েকেই?
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় বলেন,
'তৃণমূল সরকার বাংলায় এসে দু’হাত উজাড় করে শুধু মদের লাইসেন্স দিয়ে গেছে। মদ বিক্রি থেকেই সবচেয়ে বেশি রাজস্ব পায় রাজ্য সরকার। এমন রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে স্বপন দেবনাথ যদি আবার গভীর রাতে মদের দোকানে গিয়ে কে মদ খাচ্ছে দেখতে যান, সেটা আরও বড় লজ্জার। যেটা খোলসা করে দিয়েছেন মন্ত্রী নিজেই।'
Swapan Debnath: 'রাত জাগো'র সঙ্গে মদ্যপানে যাওয়া মহিলাদের তুলনা, বেফাঁস মন্ত্রী স্বপন
Minister Swapan Debnath: 'রাত জাগো' আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করতে তৃণমূল কংগ্রেস সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এই আন্দোলন শহর থেকে গ্রামবাংলা- সর্বত্র প্রভাব ফেলেছে। যা তৃণমূল কংগ্রেস মেনে নিতে পারছে না বলেই অভিযোগ।
Follow Us
Swapan Debnath: রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনামঞ্চে শনিবার উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ঝড়-জলের মধ্যে আপনারা রাস্তায়। তাই আপনাদের পাহারাদার হিসেবে আমাকে জেগে থাকতে হয়। আর, এবার রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ নিজেকে যাঁদের পাহারাদার বলে দাবি করলেন, তা শুনলে কার্যত চমকে উঠতে হয়। তিনি বলেছেন, 'আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাত জাগো কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মহিলাদেরকে এবং গভীর রাতে মদের দোকানে মদ খেতে যাওয়া মহিলাদেরকে আমাদেরই (তৃণমূল কংগ্রেস) পাহারা দিতে হচ্ছে।' রাজ্যের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর এহেন মন্তব্য যথেষ্টই শোরগোল ফেলেছে। স্বভাবতই, গোটা ঘটনায় বিরোধীরাও সুর চড়িয়েছেন।
বিশ্বকর্মা পুজোকে সামনে রেখে কালনায় নতুন বাসষ্ট্যান্ডে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে উঠেই মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে চলা আন্দোলনের কথা বলতে গিয়ে বেফাঁস নানা মন্তব্য করে বসেছেন। তিনি বলেন, 'রাত ২ টোয় হোক বা ১১টা, মিছিল করা কিংবা রাত জাগোয় অংশ নেওয়ার পরিবেশ বাংলায় আছে বলেই তো মায়েরা তা করতে পারছেন। আরজি কর-কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থন আছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা অর্থাৎ ফাঁসির দাবি মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছেন। আমিও তাই চাইছি।'
মদের দোকানে মহিলারা
এরপরই মন্ত্রী মহিলাদের রাত-বিরেতে মদের দোকানে গিয়ে মদ খেতে যাওয়া নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, 'আমার এলাকায় (পূর্বস্থলি দক্ষিণ বিধানসভা) আমি দেখেছি যে একটি দোকান থেকে রাত্রিবেলা মেয়েরা মদ কেনে। ওই দোকানটা পরিচিত 'বিকাশের দোকান' নামে। এই খবরটা পাওয়ার পর আমি দু'দিন পরপর সেখানে রাত্রিবেলায় গিয়েছি। কোন মেয়েরা হোটেলে মদ খেতে যায় তা দেখতে। আমি হোটেলওয়ালাকে বলে এসেছি এখন থেকে আর কোনও মহিলাকে হোটেলে মদ খেতে দেওয়া যাবেনা। এটাও তো আমাকেই দেখতে হয়। ওই মহিলারা যদি মদ খেতে যায়, যদি কোনও অঘটন ঘটে যায়, তখন কী হবে? সেজন্যে তো আমাদের পাহারা দিতে হচ্ছে।'
বেলেল্লাপনার অভিযোগ
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ রবিবারের গভীর রাতে বৃষ্টির মধ্যেও একটি জায়গায় দু'টি ছেলে ও একটি মেয়ের বিয়ার খাওয়ার ঘটনার কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, 'রাত তখন দুটো। দেখি, ওরা বিয়ার খাচ্ছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। ওই ছেলে-মেয়েদের বাবা-মাকে ফোন করে বলা হয়, রাত দু'টোর সময় আপনার মেয়ে কোন 'রাত জাগো' আন্দোলনে গেছে! পুলিশ এসে তাদের তুলে নিয়ে গেল। আমাদের ছেলেরা যদি পাহারা না দিত, তাহলে মদ্যপ অবস্থায় ওই মেয়েটার যদি কিছু হয়ে যেত, তখন তো লোকে আবার আমাদেরকেই দায়ী করত! কোনও মহিলাদের অসম্মান করার জন্য এসব কথা আমি বলছি না।' এসব বলে মন্ত্রী এমন ছেলেমেয়েদের বাবা-মায়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রতিবাদীদের সমালোচনা
আরজি করের ঘটনাকে দুঃখজনক, নিন্দনীয় বলে দাবি করলেও মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ আন্দোলনকারীদের স্বরূপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, 'টিভিতে দেখতে পাচ্ছি, আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে দিয়ে পরের দিনই বিদেশে বেড়াতে চলে গেল। পুজোয় মন নেই বললেও প্রতিবাদী মুখ, প্রতিবাদে অগ্রণী ব্যক্তিরাই পুজো উপলক্ষে স্ত্রীর জন্য কালনা শহরের বড় বড় দোকানগুলো থেকে দামি শাড়ি কিনছেন।' এমন ঘটনার সাক্ষী তিনি নিজে বলেও মন্ত্রী মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- টন টন মাছ উঠেছে গত কয়েকদিনেই! দারুণ সস্তায় সাধের ইলিশ আর দিন কয়েকেই?
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় বলেন,
'তৃণমূল সরকার বাংলায় এসে দু’হাত উজাড় করে শুধু মদের লাইসেন্স দিয়ে গেছে। মদ বিক্রি থেকেই সবচেয়ে বেশি রাজস্ব পায় রাজ্য সরকার। এমন রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে স্বপন দেবনাথ যদি আবার গভীর রাতে মদের দোকানে গিয়ে কে মদ খাচ্ছে দেখতে যান, সেটা আরও বড় লজ্জার। যেটা খোলসা করে দিয়েছেন মন্ত্রী নিজেই।'