ভাবছেন বাঘের অভিভাবক হবেন? দত্তক নিতে পারেন অ্যানাকোণ্ডাও। এখন মাসিক চুক্তিতে দত্তক নেওয়া আরও সহজ। পশুপাখি দত্তক নিয়ে অভিনব ভাবনা আলিপুর চিড়িয়াখানার। শীতের শুরুতেই জু ফেস্টিভ্যালের মধ্যে দিয়েই উৎসবের মরশুমে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি উৎসাহিত করতে নেমে পড়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সবে শেষ হয়েছে জু ফেস্টিভ্যাল। ভিড় জমতে শুরু করেছে চিড়িয়াখানায়।
অতিমারী পর্ব কাটিয়ে রেকর্ড ভিড়ের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে আলিপুর চিড়িয়াখানা। ২০১৫ সাল থেকে ‘অ্যাডপ্ট এ ওয়াইল্ড চাইল্ড’ নামের একটি প্রকল্প শুরু করেছে আলিপুর চিড়িয়াখানা। মানুষ ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে নিবিড় মেলবন্ধন গড়ে তোলাই এই প্রকল্পের লক্ষ। চিড়িয়াখানা সব সময় সকলের কাছেই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বাঘ ভাল্লুক, সিংহ, অ্যানাকোন্ডা দেখতে সারাবছরই ভিড় লেগেই থাকে আলিপুর চিড়িয়াখানায়। চিড়িয়াখানা সূত্রে খবর মানুষের মধ্যে পশুপাখি দত্তক নেওয়ার প্রবণতা আগের থেকে বেড়েছে অনেকাংশেই।
এবিষয়ে আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত বলেন, “আগে একবছরের চুক্তি অনুসারে পশুপাখি দত্তক নিতে পারতেন সাধারণ মানুষজন। মানুষের মধ্যে আরও আগ্রহ বাড়াতে মাসিক ভিত্তিতে দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে আর তাতেই মিলেছে সাড়া”। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ১০৬ জন মানুষ ইতিমধ্যেই পশুপাখি দত্তক নিয়েছেন আর তা থেকে চিড়িয়াখানায় আয় হয়েছে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা। গত বছরে সেই অঙ্কটা ছিল ১৩ লক্ষের আশেপাশে।
আরও পড়ুন: < তাজ্জব কাণ্ড, এবার পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতেও বান্ডিল বান্ডিল টাকার পাহাড় >
অনেকেই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও একবছরের টাকার অঙ্কের কারণে দত্তক নিতে পিছপা হতেন, এবার তাদের কথা মাথায় রেখে মাসিক ভিত্তিতে পশুপাখি দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। আশীষবাবু আরও বলেন, মানুষের মধ্যে আগ্রহ বাড়াতে আমরা দত্তক নেওয়া মানুষের নামের সঙ্গে ছবিও ব্যবহার করছি। আগে যেখানে দত্তক নিলে কেবল নাম এবং ঠিকানা লেখা থাকত, সেখানে এখন নাম ঠিকানার সঙ্গে সঙ্গে যিনি দত্তক নিয়েছেন তার ছবিও সাইন বোর্ডে টানানো হচ্ছ”। নতুন ব্যবস্থাতে সাফল্য এসেছে। প্রতিদিনই মানুষজন আসছেন, দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করছেন, আমরা সবদিক বিবেচনা করে আবেদনকারীদের পশুপাখি দত্তক দেওয়ার ব্যবস্থা করছি”।
মাসিক ভিত্তিতে দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থার ফলে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়ারাও তাতে সামিল হচ্ছেন বলেই জানিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সেই তালিকায় রয়েছেন অনেকে সেলেব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। তবে পশুদের তুলনায় পাখিদের দত্তক নেওয়ার প্রবণতা মানুষের মধ্যে অনেকটাই বেশি। মাসিক ভিত্তিতে দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করাতেই যে এই সাফল্য তা এক কথায় মেনে নিয়েছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আলিপুর চিড়িয়াখানার তরফে জানানো হয়েছে ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যায় মানুষ যাতে মাসিক অথবা বার্ষিক চুক্তি অনুসারে পশুপাখি দত্তক নিতে পারেন সেব্যাপারে ভাবনা চিন্তা চালু রেখেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।