Murshidabad Cooperative Bank Election: উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদ। দৌলতাবাদে কৃষি সমবায় ব্যাঙ্ক নির্বাচন পর্ব ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। বাম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তৃণমূলের। অপরদিকে ভোটারদের ভোটদানে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে দলের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগকে অস্বীকার করা হয়েছে।
দৌলতাবাদ থানার অন্তর্গত গুরুদাসপুর পঞ্চায়েতের মহারাজপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটকে ঘিরে রবিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে চরম উত্তেজনা। নিশীথ বরণী সিনহা উচ্চ বিদ্যালয় (উঃ মাঃ) প্রাঙ্গণে ভোটগ্রহণ চলাকালীন ঘটনাস্থলে একাধিক সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে। ১০৫৬ জন ভোটারের এই নির্বাচনে মোট ৮৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, যাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন ৪৩ জন।
ভোট শুরুর পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুপুর নাগাদ অভিযোগ ওঠে, সিপিআইএম এবং কংগ্রেস জোটের প্রার্থীদের টেন্টে হামলা চালায় তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা। তাঁরা তাবু ভাঙচুর করে এবং জোট প্রার্থীদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন প্রদীপ বিশ্বাস নামে এক প্রার্থী। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।
ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বহরমপুর বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক ও কংগ্রেস নেতা মনোজ কুমার চক্রবর্তী। তিনি অভিযোগ করেন, "সকাল থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের মদতে কিছু বহিরাগত এলাকা ঘিরে রাখে এবং সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেয়। এমনকি পুলিশ প্রশাসনের একাংশও এই ঘটনায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।"
সিপিআইএম নেত্রী জয়ন্তী দাস কড়া ভাষায় তৃণমূলকে আক্রমণ করে বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে মারধর করেও আমাদের দমন করা যাবে না। আমি একজন মেয়ে মানুষ, তবুও রুখে দাঁড়াবো। গণতন্ত্র রক্ষায় শেষ পর্যন্ত লড়াই করবো।"
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোঃ আইজুদ্দিন মন্ডল বলেন, সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে জানানো হয়েছে, এই অভিযোগগুলি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সাজানো নাটক, এখানে ঘুঘুর বাসা দীর্ঘ বছর ধরে ছিল আজ তার কিছুটা হলেও অবসান ঘটবে। তাঁদের বক্তব্য, "ভোট শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে। জনগণই ঠিক করবে কে জয়ী হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট হচ্ছে এবং বিরোধীদের ভিত্তিহীন অভিযোগ ভোটকে কলুষিত করার চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।"
পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত ১০ জনকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা যায়। এখন ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে চলছে বলে জানাই প্রশাসন।
এই ঘটনার জেরে দৌলতাবাদ থানা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ভোটের ফলাফল ও পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে গোটা এলাকা।