কলকাতার রাজপথে টেনে হিঁচড়ে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে উত্তপ্ত হয়েছে ধর্মতলা। জামিনও মেলেনি আইএসএফের একমাত্র বিধায়কের। নওশাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বুধবার শিয়ালদা থেকে ধর্মতলা মিছিল, তারপর ধর্মতলায় অবস্থান করে শহর অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পিরজাদা কাসেম সিদ্দিকি। কিন্তু আইএসএফের মুখ বা প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকি ওরফে ভাইজান এখনও পর্যন্ত ভাইয়ের গ্রেফতার নিয়ে মুখ খোলেননি। ঘটনার পর থেকে একাধিকবার ফোন বা মেসেজ করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি আব্বাস সিদ্দিকির তরফ থেকে।
গত শনিবার, ২১ জানুয়ারি ছিল আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কলকাতা প্রেস ক্লাবে ২০২১-এর ২১ জানুয়ারি ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেছিলেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। বাম-কংগ্রেসের জোটসঙ্গী হয়ে ভাঙর কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন ভাইজানের ভাই পিরজাদা নওশাদ সিদ্দিকি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দুর্নীতিমুক্ত ও আদর্শ পঞ্চায়েত গঠনের লক্ষ্যে জনসভার আয়োজন করে ধর্মতলায়। সভার আগে ভাঙরে তৃণমূলের সঙ্গে আইএসএফের ব্যাপক সংঘর্ষ ঘটে। তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে ধর্মতলার রাস্তায় বসে পড়লে নওশাদ সিদ্দিকিকে টেনেহেঁচড়ে পুলিশ প্রিজন ভ্যানে তোলে। শনিবার ধুন্দুমার কান্ড ঘটে ধর্মতলায়।
আইএসএফ প্রশ্ন তুলেছে একজন বিধায়ককে এইভাবে কেন গ্রেফতার করা হল? এক্ষেত্রে বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি? পিরজাদা কাসেম সিদ্দিকি কলকাতা অবরুদ্ধের কথা বললেও আব্বাস সিদ্দিকি এখনও পর্যন্ত বিধায়ক ভাইয়ের ওপর পুলিশের কার্যকলাপ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। আইএসএফ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই ফুরফুরা শরিফ দুভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। পিরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি ও আব্বাস সিদ্দিকিকে পরস্পর বিরোধী মন্তব্যে জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে একাধিকবার।
আইএসএফ প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে দলের মুখ ছিল ভাইজান। তিনি ভাই নওশাদকে এগিয়ে দেন রাজনীতিতে। আব্বাস সিদ্দিকি নিজে নির্বাচনে প্রার্থী হননি। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেসের ব্রিগেড জনসভার বক্তাদের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন ভাইজান। শনিবারের ঘটনার পর থেকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার পক্ষ থেকে আব্বাস সিদ্দিকিকে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও সাড়া মেলেনি। মেসেজের জবাবও তিনি দেননি। এবার দেখার বিষয় কলকাতায় আইএসএফের প্রতিবাদ মিছিলে কি দেখা যেতে পারে ভাইজানকে? ভাইয়ের ঘটনায় কেনই বা নীরব আইএসএফের প্রতিষ্ঠাতা? রাজনৈতিক মহলে এটাই লক্ষ টাকার প্রশ্ন।