Advertisment

পাহাড়-জঙ্গলের মাঝে লুকিয়ে জলপ্রপাত, ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির নজর কাড়বেই অফবিট এই হিল স্টেশন

কথিত আছে, এখানকারই এক গুহায় জন্মেছিলেন রামচন্দ্রের একনিষ্ঠ ভক্ত হনুমান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Netarhat hill station may be a perfect short tour destination

অপূর্ব এই এলাকার অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের যত তারিফ করা যায় ততই যেন কম।

কথায় বলে বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। ফাঁক পেলেই দিন কয়েকের জন্য বেড়াতে যেতে ভালোবাসেন না এমন বাঙালির হদিশ মেলাই দুষ্কর। তাঁদের জন্যই আরও এক চিত্তাকর্ষক ট্যুরিস্ট স্পটের হদিশ এই প্রতিবেদনে। স্ট্রেসফুল জীবন থেকে দিন কয়েকের আরাম নিতে ছুটে যেতেই পারেন এতল্লাটে। অপূর্ব এই এলাকার অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের যত তারিফ করা যায় ততই যেন কম।

Advertisment

বেরিয়ে আসুন নেতারহাট থেকে। সবুজ বন ও নিচু পাহাড় ঘেরা এই বনাঞ্চল বাংলার পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে। এটিই নাকি প্রাকৃতিক সম্পদে ভরা ঝাড়খণ্ডের অন্যতম সেরা গোপন রহস্য। পাহাড়ি ঝর্ণা আর শাল, পলাশ, কেন্দু, পাইন, ইউক্যালিপটাস সারি দিয়ে ঘিরে রয়েছে এই হিল স্টেশনকে। একটা সময় বেশ কিছু উপজাতির মানুষজন এই এলাকায় বসবাস করতেন। ব্রিটিশরাই এই এলাকাকে হিল স্টেশনে রূপান্তরিত করেছিল। ছোট নাগপুরের 'রানী' বলেও নেতারহাটকে।

স্থানীয়দের বিশ্বাস, রামভক্ত হনুমান মালভূমি এই এলাকার খুব কাছেই অঞ্জন গ্রামের একটি গুহায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এখানেই নাকি হনুমান ফল ভেবে সূর্যকে খেতে ছুটে গিয়েছিলেন। তবে এসবই জনশ্রুতি। চাইলে এটিকে উপেক্ষা করতেই পারেন। তবে নেতারহাটের সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ হারাবেন না।

আরও পড়ুন- পাহাড়-ঢালে সবুজ গ্রামের বুক বেয়ে বয় নদী, উত্তরবঙ্গের এতল্লাট এককথায় অসাধারণ!

স্থানীয়দের আরও বিশ্বাস, ব্রিটিশ আমলে ম্যাগনোলিয়া নামে এক ইংরেজ স্থানীয় এক কৃষকের প্রেমে পড়েছিলেন। পরে এখানাকার পাহাড় থেকে লাফিয়ে তিনি নাকি আত্মহত্যা করেছিলেন। তখন থেকেই এখানাকার একটি জায়গা 'ম্যাগনোলিয়া পয়েন্ট' নামে পরিচিতি পায়। এখান থেকে সূর্যাস্তের সেরা দৃশ্য দেখা যায়। এছাড়াও সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে কুল কুল শব্দে কোয়েল নদীর বয়ে চলাও এতল্লাটে বেশ উপভোগ্য হতে পারে।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই এলাকার উচ্চতা তিন হাজার ৬৯৬ ফুট। অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতেই দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে যান এপ্রান্তে। বিস্তীর্ণ এএই এলাকা আদতে একটি মালভূমি। গোটা এলাকা গভীর জঙ্গলে ঢাকা। ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি থেকে কয়েক ঘন্টার দূরেই রয়েছে এই নেতারহাট। এককথায় ব্যস্ত জীবন থেকে দিন কয়েকের আরামের জন্য যেতেই পারেন নেতারহাটে। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগের ষোলোআনা রসদ পাবেন এখানে।

আরও পড়ুন- বেড়ানোর ১৬ আনা আনন্দ এখানেই! কান পাতলেই শুনবেন জল-জঙ্গলের অদ্ভুত ফিসফিসানি!

নেতারহাটে কী কী দেখবেন?

প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের জন্য এজায়গার জুড়ি মেলা ভার। বেতলা জাতীয় উদ্যান ঘেঁষা এই এলাকা। চাইলে বেতলা জাতীয় উদ্যানের এলাকা ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন। জঙ্গল সাফারি পর্যটকদের দারুণ আনন্দ দিতে পারে। নেতারহাটের মাত্র চার কিলোমিটার দূরেই রয়েছে একটি আপার ঘাঘরি জলপ্রপাত। দেশের বিভন্ন প্রান্ত থেকে এই জলপ্রপাত দেখতে মানুষ ভিড় জমান। সড়কপথে নেতারহাট থেকে ঘণ্টাখানের দূরত্বে রয়েছে আরও একটি জলপ্রপাত। সাপের আকারে দেখতে সাদনি জলপ্রপাতের শোভাও নজরকাড়া। এছাড়াও কোয়েল ভিউ পয়েন্ট, সানরাইজ পয়েন্ট-সহ কয়েকটি এলাকাও ঘুরে দেখতে পারেন।

নেতারহাট রাঁচি থেকে প্রায় ১৫৬ কিলোমিটার পশ্চিমে। সাধারণত পর্যটকরা বেতলা জাতীয় উদ্যানের সঙ্গেই নেতারহাটে ঘুরে আসেন। যেহেতু এটি একটি অফবিট পর্যটন কেন্দ্র, তাই পর্যটকদের এখানে খানিকটা সতর্ক হয়ে চলতেই হবে। এখানাকার আদিবাসীদের ছবি তোলার আগে অনুমতি নিন। এতল্লাটে ভ্রমণের সেরা সময় নভেম্বর থেকে মার্চ।

আরও পড়ুন- এখানেতেই প্রাণের সুখ, মনের আরাম! পাহাড় কোলের অপূর্ব এগাঁয়ে হদয় বাঁধা পড়বেই!

নেতারহাটে থাকবেন কোথায়?

নেতারহাটে থাকার সেরা জায়গা অবশ্যই রাজ্য পর্যটন দফতরের ট্যুরিস্ট লজ। এই লজ থেকেই পাহাড় জুড়ে সূর্যোদয়ের সেরা দৃশ্য দেখা যায়। আপনি এখানে থাকলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগের সেরা সুযোগ পাবেন। তবে এছাড়াও বেশ কয়েকটি হোটেল রয়েছে এখানে।

নেতারহাটে যাবেন কীভাবে?

নেতারহাট হল বাংলার পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে। হাওড়া থেকে রাঁচি-হাতিয়া এক্সপ্রেস, শতাব্দী এক্সপ্রেসে রাঁচি পৌঁছে যেতে হবে। জামশেদপুরে পৌঁছে সেখান থেকেও বাস বা গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছনো যায় নেতারহাটে। রাঁচি রেলস্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করেও নেতারহাটে যাওয়া যাবে। আকাশপথে গেলে রাঁচির বীরসা মুন্ডা বিমানবন্দরে নেমে সেখান থেকে বাস বা ট্যাক্সিতে নেতারহাট হিল স্টেশনে পৌঁছতে পারবেন।

আরও পড়ুন- কোলাহলহীন অপূর্ব এই সমুদ্রতট মন কাড়বেই! কলকাতার কাছেই সাগড়পাড়ে অনাবিল আনন্দ

tourism Tourist Spot
Advertisment