আবারও শুটআউট রাজ্যে। এবার উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল থানার ঢিলছোঁড়া দূরত্বে তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি-বোমা। সাতসকালে রোমহর্ষক এই কাণ্ডে তীব্র আতঙ্ক গোটা এলাকায়। গুলি তৃণমূল নেতার পিঠ ছুঁয়ে বেরিয়ে যাওয়ার অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা ওই ব্যক্তির। আসানসোল, গোয়ালপোখরের পর এবার জগদ্দলে শুটআউট নিয়ে রাজ্যের সার্বিক আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি প্রশ্নের মুখে।
রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাছেই একটি চায়ের দেকানে গিয়েছিলেন ভাটপাড়া পুরসভার ১২ নং ওয়ার্ড তৃণমূল সভাপতি অশোক সাহু। জগদ্দলের পালঘাটে সেই চায়ের দোকানেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। পরপ দুটি বোমাও ছোড়ে তারা। সাতসকালে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো হুলস্থূল কাণ্ড পড়ে যায়। আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন ঘটনাস্থলে থাকা অন্যরা। তৃণমূল নেতাকে গুলি করার পর ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
এদিকে, জখম অবস্থায় ওই তৃণমূল নেতাকে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও গুলি তৃণমূল নেতার পিঠ ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। তাকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃকতীদের ছোড়া বোমা দুটিও ফাটেনি বলেই সূত্রের খবর। সেই কারণেই প্রাণহানি এড়ানো গিয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা।
এদিন ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় ওই তৃণমূল নেতাকে। পরে জগদ্দল থানায় নিয়ে যাওয়া হয় জখম তৃণমূল নেতা অশোক সাহুকে। এই ঘটনার খবর পেয়ে এদিন জগদ্দল থানায় যান স্থানীয় বিধায়ক সোমনাত শ্যাম। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারে পুলিশকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেছেন বিধায়ক।
আরও পড়ুন- DA: সোম-মঙ্গল অফিসে না এলে কড়া মাশুল চোকাতে হবে, নির্দেশিকা জারি নবান্নর
এদিকে, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমা ফাটেনি। সেই কারণেই বড় বিপত্তি এড়ানো গিয়েছে। এদিন প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে অশোক সাহুকে জগদ্দল থানায় আনা হয়। সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু পুলিশ আধিকারিকদের। থানার সামনে বিপুল মানুষের ভিড় জমে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন পায়ে হেঁটে এসে তৃণমূল নেতার উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। তবে এখনও পর্যন্ত এই হামলার কারণ স্পষ্ট হয়নি।
দিন কয়েকের মধ্যেই এই নিয়ে রাজ্যের তিন জায়গায় শুটআউটের ঘটনায় বাংলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে ছররা গুলিতে যুবকের মৃত্যু-সহ আরও তিনজন জখম হয়েছিলেন। আাসানসোলে রাজ্যের মন্ত্রীর বাড়ির কাছেই একটি হোটেল ঢুকে মালিককে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এবার রবিবার জগদ্দলে তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি-বোমা।
আরও পড়ুন- দায় নিচ্ছে শীত, গরমে হাঁসফাঁস দশা কবে থেকে? জেনে নিন লেটেস্ট আপডেট
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এক্ষেত্রে রাজ্যের শাসকদলকেই নিশানা করেছেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, 'এটা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। রাজনৈতিক দখলদারি চালাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে গেছে সামজবিরোধীরা। তৃণমূলও নিয়ন্ত্রণহীন। দল বলছে ভোটের লিডেই পাপস্খালন হয়ে যাবে। পুলিশ-দল মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। সামজিবিরোধীরা ভয়মুক্ত হয়ে গেছে। সব দুষ্কৃতীরা এখন তৃণমূলের। এই সরকার দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবনে না।'