মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর শুরুর কয়েক ঘন্টা আগেই এনআরসি আতঙ্কে ফের আত্মহত্যার ঘটনা জলপাইগুড়িতে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে 'আত্মহত্যার জন্য দায়ী' হিসাবে উল্লিখিত দুই ব্যক্তির নামে। মৃত আবদুল কাশেমের (৩৮) বাড়ি ডুয়ার্সের ক্রান্তি ফাঁড়ির অন্তর্গত চ্যাংমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পূর্ব দোলাইগাঁও গ্রামে। মৃতের স্ত্রী আনসুরা বেগমের দায়ের করা এফআইআর-এ তাঁর স্বামীর আত্মহত্যার জন্য 'নরেন্দ্র দামুদর দাস মুদি' ও 'অমিত সাহা'কে দায়ী করা হয়েছে।
LIVE: নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এবার উত্তরবঙ্গে মমতা, একটু পরেই শিলিগুড়িতে মিছিলে হাঁটবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী#mamatabanerjeehttps://t.co/WVwZw28YP8
— indianexpress bangla (@iebengali) January 3, 2020
জানা যাচ্ছে, মৃত আবদুল কাশেম পেশায় দিন মজুর ছিলেন। তাঁর পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির ভোটার কার্ড ও আধার কার্ডে নাম ভুল ছিল। নাগরিকত্ব প্রমাণ করার মতো জমির কাগজপত্রও তাঁর কাছে ছিল না। গত কয়েক মাস ধরে এনআরসি সংক্রান্ত নথিপত্র জোগাড় করা নিয়ে মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে ছিলেন কাশেম। সেখান থেকেই মানসিক অবসাদের সৃষ্টি। কাগজপত্র না থাকলে তাঁকে কি ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যেতে হবে? মাঝে মধ্যেই নাকি প্রতিবেশীদের এই প্রশ্ন করতেন কাশেম।
আরও পড়ুন: রাস্তায় দাঁড়িয়ে এনআরসি সমর্থন করব, সকলকে নাগরিকত্ব দিন: মমতা
আব্দুল কাশেমের স্ত্রী আনসুরা বেগম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, 'গতকাল সন্ধ্যায় সকলে টিভিতে খবর দেখছিলাম। ওই সময় টিভিতে এনআরসি সংক্রান্ত কিছু দেখাচ্ছিল। এরপর তাঁর স্বামী হঠাৎ বলেন, 'আমার বেঁচে থেকে লাভ নেই।' একথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যান তিনি। অনেকক্ষণ পর বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা। এরপরই বাড়ির কাছে একটি গাছ থেকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আব্দুল কাশেমের দেহ। পুলিশ দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। এফআইআরে কাশেমের স্ত্রী আনসুরা লেখেন, 'আমার স্বামী এনআরসি আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন। এর দায় নরেন্দ্র দামুদর দাস মুদি ও অমিত সাহার।'
ডুয়ার্সে আত্মঘাতী দিনমজুর আবদুল কাশেম। সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে এনআরসি আতঙ্কের কথা... pic.twitter.com/Rhn2S8TSXL
— indianexpress bangla (@iebengali) January 3, 2020
আরও পড়ুন: এনআরসি আতঙ্কে ফের আত্মঘাতী জলপাইগুড়িতে!
বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী এই প্রসঙ্গে জানান, "আমরা বিভিন্ন সুত্র থেকে খবর নিয়ে দেখেছি, আত্মঘাতী ওই ব্যক্তি কোনো সুইসাইড নোটই লিখে যাননি। তৃণমূলের ইন্ধনেই এই ধরনের অভিযোগ দায়ের করেছে এই পরিবার। যাতে ২ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়।"
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী জানিয়েছেন, 'অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।' এনআরসি আতঙ্কে এই নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলায় গত সেপ্টেম্বর থেকে ৬ জন আত্মঘাতী হলেন বলে অভিযোগ।