আদালতের নির্দেশে ওএমআর শিট প্রকাশ করেছে রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু প্রকাশিত শিটের নম্বর দেখলে যে কারও চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। চুরি তো নয়- ডাকাতি। এভাবেও নম্বর ডাকাতি করা যায়! প্রকাশিত ওএমআর শিটে মোট ৩,৪৭৮ জনের নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকার প্রথম ১০০ জনের মধ্যে যাঁরা ০ ও ১ নম্বর পেয়েছে, তাঁদের নম্বর কীভাবে বাড়ানো হয়েছে তা একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
প্রথম ১০০ জনের মডেল তালিকা ধরে নিয়ে দেখা যাচ্ছে এখানে সকল পরিক্ষার্থীর নম্বর শুধু বেড়েই গিয়েছে। কারও নম্বর কিন্তু কমেনি। ০ থেকে ২৫ সকলেরই নম্বর বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এই তালিকার ৪ নম্বরে রয়েছে আব্দুল আজিজের নাম। তিনি প্রকৃত নম্বর পেয়েছেন ০। কিন্তু তা এক ধাক্কায় বেড়ে হয়েছে ৫৪। তালিকার ৮ নম্বরের আব্দুল মান্নান সরকারের নম্বর ছিল ০, তা বেড়ে হয়েছে ৫৭। এমন ভাবেই তালিকার ৮৭ নম্বরে থাকা অমল কুমার কয়ালের নম্বর ০ থেকে ৫৪ ও ১৪ নম্বরে থাকা আব্দুর রজ্জাক মিঁয়ার ০ নম্বর হয়েছে ৫৪। তালিকার ২৮ নম্বরে অভিষেক মাইতি পেয়েছিলেন ০। কিন্তু সেই নম্বর বেড়ে গিয়েছে, হয়েছে ৫৬। এ যেন গুপি-গাইন বাঘা বাইনের গল্পকে ছাড়িয়ে গিয়েছে শিক্ষা দফতরের ওএমআর শিট।
আরও পড়ুন- বড় ধাক্কা রাজ্যের, মেয়াদ-উত্তীর্ণ উপাচার্যদের পুনর্নিয়োগ নিয়ে কী নির্দেশ হাইকোর্টের?
প্রথম ১০০ জনের মধ্যে তালিকার ৬ নম্বরে থাকা আব্দুল হাদি পেয়েছে ১, কিন্তু বেড়ে করা হয়েছে ৫৪। এভাবে তালিকার ৩৭ নম্বরের আবু বক্কর সিদ্দিকের নম্বর ১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৪। তালিকার ৪১ নম্বরে থাকা আবুল হোসেন আলি সাহা প্রকৃত পেয়েছেন ১, সেই নম্বর বেড়ে হয়েছে ৫৬। তালিকার ৭৪ নম্বরে থাকা আখতার হোসেন পেয়েছেন ১। তার নম্বর বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫৬। এই তালিকার নম্বর দেখে রাজ্যবাসীও হতভম্ব। কোন যাদু বলে এই কাণ্ড! ভাবতেই পারছে শিক্ষাজগত।
আরও পড়ুন- ‘ওসব আমারই টাকা’, ইডি-র জেরা শেষে বেরিয়ে সদর্পে ঘোষণা বনি সেনগুপ্তর
আদালতের নির্দেশে এই ওএমআর শিট প্রকাশ হওয়ার পর বড়সড় দুর্নীতি খোলস বেরিয়ে সামনে চলে এসেছে। শুধু নম্বর বাড়ানো হয়নি, যে ০ পেয়েছে সে ৫৪, ৫৬ পেয়েছে। শিক্ষামহলের দাবি, এই ওএমআর শিটেই যদি এতবড় কেলেঙ্কারি হয়ে থাকে তাহলে শিক্ষাদফতর কত বড় ঘুঘুর বাসা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আদালত হস্তক্ষেপ না করলে এই দুর্নীতি চাপা পড়ে থাকত বলেই মনে করেন অভিজ্ঞমহল।