সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে দলের একের পর এক নেতা শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। ঘুরিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, এই অশান্তি তাঁরা পছন্দ করছেন না। যা কার্যত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই আঙুল তোলার শামিল। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই রয়েছে রাজ্যের প্রশাসনিক ক্ষমতা। তিনিই রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ভারও তাঁরই হাতে। ভোটের সময় কমিশনের হাতে যাবতীয় ক্ষমতা থাকলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ভার রাজ্যের।
এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ, দলের প্রবীণ থেকে নবীন নেতাদের মুখে পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসার বিরোধিতা শুনে রীতিমতো বেকায়দায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সামনেই ২১ জুলাই। দলের বাৎসরিক শোক দিবস বা শহিদ দিবস পালন। সেই অনুষ্ঠানে এবার তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাদে অন্য কোনও নেতার ছবি ব্যানার-হোর্ডিংয়ে থাকবে না-বলে জানিয়ে দিলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনিই তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরি। পাশাপাশি, অসুস্থ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচন দলের কন্ট্রোল রুম থেকে কার্যত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই সামলেছেন।
সেই সব কথা মাথায় রেখে তাঁর ছবিও ২১ জুলাইয়ের ব্যানার এবং হোর্ডিংয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। এই নির্দেশ শুধু শহর কলকাতার কিছু অংশে নয়। রাজ্যের সর্বত্র পালন করতে হবে বলেই তৃণমূল হাইকমান্ডের নির্দেশ। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন এলাকায় ২১ জুলাইয়ের জন্য কীভাবে প্রচার চালাতে হবে, তার সিডিও পাঠানো হয়েছে দলীয় নেতাদের কাছে। সেই সিডি অনুযায়ীই বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের দেওয়াল লিখতে হবে। এর পাশাপাশি, প্রচারে স্থানীয়স্তরে দেওয়াল কারা লিখেছে, তা দেওয়ালেই সংগঠনের স্থানীয়স্তরকে নাম দিয়ে জানাতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব।
আরও পড়ুন- ‘তৃণমূল এভাবে সন্ত্রাস চালালে রাজ্যসভায় ভোট দেব না’, চরম বার্তা দলেরই প্রবীণ বিধায়কের
দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, প্রচারে বিজেপিকে টেক্কা দিতে এবারের সমাবেশকে কীভাবে কাজে লাগাতে হবে। সেই অনুযায়ী এবারের ২১ জুলাইকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিহত দলীয় কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ব্যবহার করা হবে। তবে যে প্রচার কর্মসূচিই চলুক না-কেন, তা হোয়াটসঅ্যাপে জেলা সভাপতিকে জানাতে হবে। আর, জেলা সভাপতি তা জানিয়ে রাখবেন তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বকে।