২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির লক্ষ্য ছিল ২০০ আসন। কিন্ত গেরুয়া শিবিরকে থামতে হয়েছে ৭৭-এ। ৭ জন বিজেপি বিধায়ক ইতিমধ্য়ে শিবির বদল করে তৃণমূলে গিয়ে ভিড়েছেন। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের পর থেকে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের মুখে নিয়মিত শোনা যাচ্ছে সাধারণের মহাজোটের কথা। বিরোধী শিবির যখন নীচের তলায় অলিখিত জোটের ভাবনায় মত্ত, তৃণমূল কংগ্রেস তার মোকিবিলায় নয়া কৌশল রচনা করে চলেছে।
সম্প্রতি রাজ্য়ের বিভিন্ন সমবায় নির্বাচনে রাম-বাম জোট করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে বিরোধীরা জয় পেলেও অনেক জায়গায় হইহই করে জয়ে পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সাগরদিঘি বিধানসভার উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসের জয়ে মনোবল বেড় গিয়েছে বিরোধীদের। সাগরদিঘিতে বিজেপি প্রার্থী থাকা সত্বেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, এই আসনে কে জিতবে জানি না তবে তৃণমূল কংগ্রেস জিততে পারবে না তা হলফ করে বলতে পারি। ২ মার্চ ফলপ্রকাশের পর দেখা গিয়েছে কংগ্রেস প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে। তবে উৎসাহিত বঙ্গ বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনের থেকে এখানে তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থীর ভোট শতাংশ কমে গিয়েছে। এই জয়ের পিছনে বিরোধীদের রামধেনু জোট দেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজনৈতিক মহলের মতে, সাগরদিঘি উপনির্বাচনকে মডেল হিসেবে দেখছে বিরোধীরা। পঞ্চায়েত নির্বাচন তো একেবারেই স্থানীয় স্তরের ভোট। ভোটার সংখ্যাও হাতে গোনা। সেক্ষেত্রে নীচের তলায় জোট হলে সহজেই তৃণমূলকে পরাস্ত করা যাবে, এই অঙ্ক কষছে বিরোধী দলগুলি। তারপর এই মুহূর্তে রাজ্য়ে একাধিক জ্বলন্ত ইস্যু রয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস, কীভাবে বিরোধীদের মহাজোটের মোকাবিলা করবে তার জন্য় চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। গ্রামবাংলায় মুসলিম ভোট ব্যাংক যাতে হাতছাড়া না হয়ে যায় সেদিকে নজর দিয়েছে দল। রামধেনু জোট নিয়েও তারা সরব হয়েছে।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ করেছিল, বামেদের ভোট বিজেপিতে ট্রান্সফার হয়েছে। তারপর ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস খাতাই খুলতে পারেনি। অভিজ্ঞ মহলের পর্যবেক্ষণ, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের বিরুদ্ধে বিরোধীরা প্রার্থী দিলেও যে প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেশি সেদিকেই ভোট ট্রান্সফার করে দিয়েছে। স্থানীয় স্তরে তা সংগঠিত করাও অনেক সহজ। কোনও ক্ষেত্রে হয় তো বিরোধীরা জোট করে একজন প্রার্থীকেই দাঁড় করিয়ে দিল। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্থানীয় স্তরে এমন সম্ভাবনার কথা ভাবছে রাজনৈতিক মহল।