রায়গঞ্জে দুর্গাপুজোর কার্নিভালে উন্মত্ত ষাঁড়ের তাণ্ডব! ষাঁড়ের গুঁতোয় বৃদ্ধের প্রাণহানির ঘটনায় এবার নাম জড়াল স্থানীয় বিধায়কের। বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া বিধায়ক তথা অনুশীলনী ক্লাবের পুজো কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ কল্যাণীকে কাঠগড়ায় তুললেন মৃত বৃদ্ধের মেয়ে জুলি কর্মকার। আয়োজক ক্লাবের সভাপতি, সম্পাদক এবং সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
গত ৭ অক্টোবর রায়গঞ্জের পুজো কার্নিভালে ষাঁড়ের গুঁতোয় মৃত্যু হয় সাধন কর্মকার নামে ওই বৃদ্ধের। কলকাতার পাশাপাশি এবছর থেকে জেলায়-জেলায় দুর্গাপুজোর কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুর জেলার কার্নিভাল হয় রায়গঞ্জে। ওই দিন সন্ধেয় রায়গঞ্জে জেলার অন্য পুজো কমিটিগুলির পাশাপাশি দুর্গা কার্নিভালে অংশ নিয়েছিল রায়গঞ্জের অনুশীলনী ক্লাবও। ষাঁড়ের গাড়িতে প্রতিমা চাপিয়ে কার্নিভালে অংশ নিয়েছিল অনুশীলনী ক্লাব।
সেই সময়ে কার্নিভাল উপলক্ষে তৈরি অনুষ্ঠান মঞ্চে তারস্বরে বাজানো হচ্ছিল ডিজে। কার্নিভালের মঞ্চের কাছে আসতেই ডিজের বিকট আওয়াজ সহ্য করতে না পেরে দৌড় শুরু করে একটি ষাঁড়। প্রতিমা ফেলে রাস্তা ধরে প্রাণপণে ছুটে থাকে ষাঁড়টি। ঠিক সেই সময় উল্টোদিক থেকে বন্দর ভারত সেবক সমাজের প্রতিমা নিয়ে কার্নিভালে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ওই ক্লাবেরই সভাপতি সাধন কর্মকার (৬৮)। দৌড়ে এসে একটি ষাঁড় সোজা গিয়ে বৃদ্ধের বুকে ধাক্কা মারে। ষাঁড়ের সিংয়ের গুঁতোয় জখম হন তিনি। তিনি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন আহত হন। সাধন কর্মকারকে তড়িঘড়ি রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা চলকালীন শুক্রবার রাতেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন কার্নিভালে ডিজে-র আওয়াজে ‘উদভ্রান্ত’ ষাঁড়, গুঁতিয়ে মারল বৃদ্ধকে
এই ঘটনার পর রায়গঞ্জের বিধায়ক দেখা করে সাধনবাবুর পরিবারের সঙ্গে। এমনকী আর্থিক সাহায্যের কথাও বলেন। কিন্তু সেই সাহায্য নিতে চাননি জুলি। মৃতের মেয়ে নিজের অভিযোগপত্রে কারও নাম না করলেও ক্লাবের সভাপতি, সম্পাদকের কথা উল্লেখ করেছেন। অনুশীলনী ক্লাবের পুজো কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ কল্যাণী। স্বভাবতই অভিযুক্তদের মধ্যে তাঁর নাম উঠে আসছে।
মৃত সাধন কর্মকারের মেয়ে জানিয়েছেন, "এত লোকজন, আলো, শব্দের মধ্যে অবুঝ প্রাণীগুলোকে কেন ছেড়ে দেওয়া হল? সেদিনের ঘটনায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন, আরও অনেকের মৃত্যু হতে পারত। এত লোককে বিপদে ফেলার কোনও মানে হয় না। এই মৃত্যুর দায় পুরোপুরি পুজো কমিটির সভাপতির।"
এদিকে, এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেছেন, বিধায়কের নামে তো অভিযোগ হয়নি। হয়েছে ক্লাবের সভাপতির নামে। ষাঁড়ের গাড়ির অনুমতি প্রশাসন দিয়েছিল কি না পুরোটাই পুলিশ তদন্ত করবে।