আবারও বিস্ফোরক মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিলেন এক তৃণমূল বিধায়ক। আগামী বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী। তৃণমূল নেতার মুখে পঞ্চায়েত দখলের হুমকি শুনে তিতিবিরক্ত বিরোধীরা। অবিলম্বে ওই বিধায়ককে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে সোচ্চার বামেরা। দখল হুঁশিয়ারি রাজ্যের শাসকদলের অন্য কর্মসূচিগুলিরই একটি বলে কটাক্ষ বিজেপির। তবে ফের দলের বিধায়কের মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ জোড়াফুলের শীর্ষ নেতারা।
আবারও সরগরম রাজ্য রাজনীতি। নেপথ্যে ফের এক তৃণমূল বিধায়ক। এবার আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই দখল-হুমকি দিয়ে জোর চর্চায় মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী। মঙ্গলবার নিজের বিধানসবা কেন্দ্রে দলের একটি সভায় যোগ দিয়েছিলেন অপূর্ব চৌধুরী। বক্তৃতায় কর্মীদের উৎসাহিত করতে গিয়ে বেফাঁস বলে বসেন তিনি। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফের 'দখল' হুমকি তৃণমূল নেতার গলায়।
তিনি বলেন, ''যেমন প্রত্যেক পঞ্চায়েত দখল করেছিলাম, এই বছরও সেই পঞ্চায়েতটা দখল করব। কে কী বলল কে কী করল আমার দেখার দরকার নেই। সামনে যে পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে প্রত্যেকটা সিটে যেন জয়লাভ করতে পারি।''
আরও পড়ুন- আর রাখঢাক নয়, নতুন তৃণমূল ঠিক কী? এতদিনে স্পষ্ট করলেন অভিষেক
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ৩৪ শতাংশ আসনে মনোয়ননপত্রই জমা দিতে পারেননি বিরোধী প্রার্থীরা। সেবারই উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে তত্ত্ব শোনা গিয়েছিল বর্তমানে জেলবন্দি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গলায়। ২০১৮-এর পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বেলাগাম সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সুর চড়িয়েছিল বিরোধীরা। এবার ফের একবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে এক তৃণমূল বিধায়কের মুখে এমনি হুমকি শুনে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিরোধীরা।
বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের তোপ দেগে বলেন, ''অবিলম্বে ওঁকে বরখাস্ত করুন। প্রতিবার যেমন দখল করেছি, এবারেও তেমন দখল করব, এসব বলছে। অ্যাকশন নিন, অ্যাকশন নেবেন না বা নিতে পারবেন না। দখলদারি ছাড়া তৃণমূল এক ইঞ্চি এক মুহূর্তও থাকতে পারবে না।''
আরও পড়ুন- শুভেন্দুর মানসিক অবস্থা ঠিক নেই, উদাহরণ তুলে যুক্তি অভিষেকের
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ''অপূর্ব চৌধুরী যেটা বলেছেন এটাই তো তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচি। ২০১৮-এ যে নির্বাচন হয়েছে তার রিপ্লে ২০২৩-এ হবে না। কারণ মার্চ মাসে তৃণমূল আজকে যে অবস্থায় আছে আর সেই অবস্থায় থাকবে না।''
আরও পড়ুন- দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দোকানে চুরির অভিযোগ, জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা
এদিকে, দলের বিধায়কের এমন মন্তব্যে বেজায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এদিন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ''যদি এটা অফিসিয়ালি ও বলে থাকে তবে দল ব্যবস্থা নেবে। তাড়িয়ে দেওয়া হবে। দল বলে দিয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে হবে। মানুষের অধিকার, মানুষই ভোট দেবেন।''