একুশের বিধানসভা ভোটে দাঁড়ানোর আগে পর্যন্ত যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামে ফ্ল্যাট-বাড়ি-গাড়ি-গয়না কিছুই ছিল না, এ হেন সেই ব্যক্তিই টাকার পাহাড়ের মালিক! গল্প হলেও অর্পিতার বয়ান অনুযায়ী একথা 'সত্যি'। তাঁর টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে মেলা প্রায় ৫০ কোটি টাকার মালিক তিনি নন পার্থ, ইডির জেরায় 'ফাঁস' করেছেন অর্পিতা।
একুশের বিধানসভা ভোটে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ভোটে দাঁড়ানোর সময় নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন, সেটাই এখন জোর চর্চায়। কী ছিল সেই হলফনামায়? ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর হাতে ছিল নগদ ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৬৭৬ টাকা। দুটি ব্যাঙ্কের মোট চারটি শাখায় তাঁর ফিক্সড ডিপোজিট ও সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা ছিল। সেই টাকার পরিমাণ যথাক্রমে ২৪ লক্ষ ৮১ হাজার, ২৩ লক্ষ ৩২ হাজার ৯৩৫, ১৫ লক্ষ ১ হাজার ১৬১ ও ১ লক্ষ ৮ হাজার ৬৯।
একুশের বিধানসভা ভোটে কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তাঁর নিজস্ব আয়ে কেনা কোনও জমি-বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই। শুধুমাত্র পারিবারিক সূত্রে পাওয়া নাকতলায় একটি বাড়ি রয়েছে। হলফনামায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া নাকতলায় দেড় কাঠা জমির উপরে বানানো ওই বাড়িটি পেয়েছেন তিনি। ১৯৮৯ সালে ওই বাড়িটি তৈরি হয়েছিল। তৎকালীন মূল্যে সেই বাড়িটি তৈরি করতে খরচ পড়েছিল মোট ৬ লক্ষ টাকা। তবে ২০২১-এর বাজারদর অনুযায়ী ওই বাড়িটির আনুমানিক মূল্য ছিল ২৫ লক্ষ টাকা।
আরও পড়ুন- পার্থ ছাঁটাই, কোন ছকে ফিরবে তৃণমূলের ভাবমূর্তি?
এছাড়াও একুশের ভোটের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মোট আয় ছিল ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭২০ টাকা। তিনি হলফনামায় দাবি করেছিলেন, যে তাঁর কাছে সোনা-হীরে-প্ল্যাটিনামের গয়না নেই। এছাড়াও পার্থের জমা দেওয়া হলফনামায় বলা হয়েছে, তাঁর নামে কোথাও কোনও ঋণও নেই। পার্থের হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর মোট স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৯০ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৬৩ টাকা।
আরও পড়ুন- চিনার পার্কেও অর্পিতার ফ্ল্যাট! লোক-লস্কর নিয়ে হানা দিল ইডি
এহেন পার্থই এখন টাকার পাহাড়ের মালিক বলে দাবি করেছেন অর্পিতা। এখনও পর্যন্ত তাঁর ফ্ল্যাটে মেলা প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ এবং তাল-তাল সোনা, মুঠো-মুঠো রুপো, হীরের মালিকও পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেই দাবি করেছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই পার্থের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে বলে দাবি ইডি সূত্রের। জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাটের পাশাপাশি শ'খানেক ডাম্পারের মালিকও নাকি রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী, এমনই দাবি সূত্রের।