পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর একাধিক মন্তব্যে ক্ষুব্ধ তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। কেউ অন্যায় করলে শাস্তি পাবে, তাতে দলের কিছু এসে যায় না।' এরপরও এসএসসি দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হয়নি। বহাল পার্থর দলীয় মহাসচিব সহ অন্যান্য পদও। বিরোধী শিবির মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবির আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। এবার বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় সব পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠল তৃণমূলের অন্দর থেকেই। টুইটে বিস্ফোরক দাবি করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
Advertisment
বৃহস্পতিবার টুইটে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অবিলম্বে মন্ত্রিত্ব এবং সমস্ত দলীয় পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। তাকে বহিষ্কার করা উচিত। যদি এই বক্তব্য ভুল বলে মনে করা হয়, তাহলে আমাকে সব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার অধিকার দলের রয়েছে। আমি তৃণমূলের একজন সৈনিক হিসাবে কাজ চালিয়ে যাব।'
Partha Chatterjee should be removed from ministry and all party posts immediately. He should be expelled. If this statement considered wrong, party has every right to remove me from all posts. I shall continue as a soldier of @AITCofficial.
কেন এমন দাবি করলেন কুণাল? তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'পার্থবাবু সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলছেন। অথচ একবারও বলছেন না যে তিনি নির্দোষ। এর ফলে তৃণমূল ও আমাদের প্রিয় নেত্রীকে নিশানা করছেন বিরোধী দলগুলো। যাঁরা ভালোবেসে তৃণমূল করেন তাঁদের নানা অপ্রস্তুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমি জেলে থাকার সময় পুলিশ প্রিজন ভ্যান বাজাত, বলতে দেওয়া হত না। কিন্তু এখন তো সেই অবস্থা নয়। অনেকেই মনে করছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দলীয় সব পদ ও মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হোক। আমি সেটাই টুইট করে দাবি করেছি। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি মমতাদির হাতে।'
একই দাবি করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র বিস্বজিৎ দেব-ও। তাঁর কথায়, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য মানুষ তৃণমূলকে ভুল বুঝছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ভাল কাজ করা সত্ত্বেও সেগুলো গুরুত্ব পাচ্ছে না। সবাই ভাবছেন তৃণমূলের সবাই টাকা লুকিয়ে রেখেছেন। তাই ওঁকে সরানো হোক। নির্দোষ প্রমাণিত হলে ফের স্বপদে, মন্ত্রিত্বে ফেরানো হবে।'
যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু ভট্টাচার্যের টুইট, 'ঠাকুমা বলতেন, ফোঁড়া যখন পুঁজে ভরে এসেছে, অনতিবিলম্বে তাকে ফাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। শরীর ভালো থাকে, শান্তিতে ঘুমানো যায়। একটি ফোঁড়ার জন্য গোটা শরীরকে কষ্ট দেওয়া বৃথা।'
ঠাকুমা বলতেন,
ফোঁড়া যখন পুঁজে ভরে এসেছে, অনতিবিলম্বে তাকে ফাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। শরীর ভালো থাকে, শান্তিতে ঘুমানো যায়।
একটি ফোঁড়ার জন্য গোটা শরীরকে কষ্ট দেওয়া বৃথা।
— Debangshu Bhattacharya Dev (@ItsYourDev) July 28, 2022
গ্রেফতারের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কী মন্ত্রিত্ব ও দলীয় সব পদ থেকে সরানো হবে? এই জল্পনা চলছে। এসবের মধ্যেই আজ রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে। পার্থকে বহিষ্কারে বিরোধীদের চাপ, দলের একাংশের নেতা, কর্মীদের দাবি ঘিরে এখন অস্বস্তিতে তৃণমূল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শিল্প-পরিষদীয় দফতর ও দলের মহাসচিব পদ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরানোর আগে কুণাল ঘোষ, বিশ্বজিৎ দেব দেবাংশুরা পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিরোধীদের চাপে নয়, দলের কড়া সিদ্ধান্তেই যে পার্থকে সরানো হতে পারে তা প্রমাণে মরিয়া চেষ্টা চলছে।