নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হতেই দল তাঁকে ছেঁটে ফেলেছে। কিন্তু তিনি রয়েছেন দলের সঙ্গেই। আগাগোড়া তা প্রমাণে মরিয়া তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন এই মন্ত্রীকে। আদলতে প্রবেশের মুখে দলীয় সহকর্মীদের ইংরেজি নতুন বছরের আগাম শুভেচ্ছাবার্তা দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জোকা-তারাতলা মেট্রোর বাসতবায়ণ নিয়েও মুখ খুলেছেন শাসক দলের অপসারিত মহাসচিব। যা নিয়ে হইচই পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। পার্থ ও তৃণমূল যে সমার্থক বলে দাবি বিরোধীদের। অন্যদিকে পার্থর মন্তব্যের দায় নিতে রাজি নয় তৃণমূল।
কী বলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়?
এ দিন আলিপুর আদালতে ঢোকার সময় গাড়ি থেকে নেমে সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়ান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বলতে থাকেন, 'আমি সর্বপ্রথম ২০২৩ এর শুভ নববর্ষে তৃণমূলের ২৫ তম প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে সকল সহকর্মীদের শুভেচ্ছা জানাই। বেহালাবাসী, আমার অঞ্চলের সকলকেও শুভেচ্ছা। বহু প্রতীক্ষিত আমাদের স্বপ্নের জোকা-তারাতলা মেট্রো রেল চালু হোক। আমাদের বহুদিনের শখ যেন পূর্ণতা পায়।'
এই প্রথম নয়, জুলাইয়ে ২৩ তারিখ গ্রেফতারের পর সাংগঠিন পদ, মন্ত্রিত্ব থেকে পার্থকে অপসারিত করা হয়েছিল। তারপর অগাস্টে তিনি বলেছিলেন, 'দলের সঙ্গে ছিলাম, দলের সঙ্গে আছি।' পঞ্চায়েত ভোটেও তৃণমূল ভালো ফল করবে বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি। দিন কয়েক আগে শুভেন্দু অধিকারীর ডিসেম্বর হুঁশিয়ারি নিয়েও মুখ খুলেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। বলেছিলেন, 'তৃণমূলের কেউ ক্ষতি করতে পারবে না।'
অর্থাৎ, বারে বারে তৃণমূলের পক্ষে কথা বলে জেলবন্দি প্রাক্তন মহাসচিব প্রমাণে মরিয়া যে, দল তাঁকে বাতিলের পর্যায়ে ফেললেও তিনি রয়েছেন তৃণমূলের সঙ্গেই। যা নিয়েই শাসক দলকে টিপ্পনি কেটেছেন বিজেপি ও সিপিআইএম নেতারা।
বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, 'পার্থ চট্টোপাদ্যায় আরেকবার প্রমাণ করলেন যে উনি তৃণমূলের আছেন। আসলে তৃণমূলের নিয়োগ কর্মসূচি ভালো করে রূপায়িত করতে গিয়েই উনি জেলে রয়েছেন। তাই পার্থ ও তৃণমূল পৃথক নয়। দুটো সত্ত্বাই মিলেমিশে একাকার।'
<আরও পড়ুন- চিনে করোনা-বিস্ফোরণ! উদ্বিগ্ন মমতার নির্দেশে নজরদারি কমিটি গঠন স্বাস্থ্য দফতরের>
সিপিআইএম নেতা শমীক লাহিড়ি বলেছেন, 'পার্থ তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছেন। একের পর দুর্নীতি হয়েছে। যার অপরেটার তিনি। তৃণমূলের গোটাটাই দুর্নীতিপরায়ণ। মুখে ওরা যা বলেই পুরোটাই লোক দেখানো।'
তবে দলের প্রাক্ন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্যের দায় নিয়ে রাজি নয় তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, 'পার্থবাবু বয়স্ক মানুষ। তৃণমূল কংগ্রেস সম্পর্কে যা বলেছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। মন্ত্রিসভা এবং দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পার্থবাবুকে নিয়ে দলের অবস্থায় মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন। তাই কে কী বলছেন তার দায় দল নেবে না।'