নীলরতন সরকার হাসপাতালে জীবন বাঁচানোর আর্তি নিয়ে মায়ের কোলে শুয়ে আট মাসের ছোট্ট শাহিদ শেখ। এনআরএসে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে চিকিৎসার নূন্যতম সুযোগটুকুও পায়নি সাহিদ। চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরে এই মুহূর্তে এনআরএস চত্বরে চিকিৎসাহীন ভাবে শুয়ে আছে শাহিদ। এই শিশুর শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কান্নার শক্তিটুকুও হারিয়েছে সে।
গত তিন দিন ধরে সাহিদকে কোলে নিয়ে শহরের সমস্ত সরকারি হাসপাতালে ঘুরে বেরিয়েছে তার মা-বাবা। কিন্তু আট মাসের শিশুটির চিকিৎসা করতে অস্বীকার করেছে কলকাতার সব সরকারি হাসপাতাল। এদিকে শাহিদের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। শিশুটির দিকে তাকালেই দেখা যাচ্ছে, পেটের ডান দিকটা ফুলে উঠেছে। আর সেই ব্যথাতেই কাতর আট মাসের শিশুটি। কিন্তু, শিশুটির এই কান্না চাপা পরে গিয়েছে আন্দোলনের আওয়াজে।
আরও পড়ুন-মমতার ক্ষমতা প্রদর্শন: প্রতিবাদে ইস্তফা আট সরকারি ডাক্তারের
ক্যানিংয়ে বসবাসকারী শাহিদের পরিবার ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রথমে ক্যানিংয়েরই এক বেসরকারি ডাক্তারের কাছে যান। তিনি কলকাতায় নিয়ে গিয়ে আলট্রাসোনোগ্রাম করে ভালো চিকিৎসক দেখানোর পরামর্শ দেন। সেই আশাতেই কলকাতায় এসে বিপাকে বিপাকে পড়েছে পরিবারটি। অসহায় শিশুটি দু'দিন ধরে মায়ের বুকের দুধ আর জল ছাড়া কিছুই খেতেও পারছে না। এমনকি মল-মূত্রও ত্যাগ করতে পারছে না সে।
আরও পড়ুন- মমতার হুঁশিয়ারির প্রতিবাদে ৮ চিকিৎসকের ইস্তফা
এদিন, নীলরতন সরকার হাসপাতালে শাহিদকে কোলে নিয়ে তার হতাশ মা কাঁদতে কাঁদতে প্রশ্ন করলেন, "কখন উঠবে অবরোধ? আর বেশি দেরি হলে বাঁচবে না আমার ছেলেটা"। কোলের শিশুটি জানে না প্রশাসন, অবরোধের সংজ্ঞা। তার চোখে মুখে কেবল ফুটে উঠেছে শারীরিক কষ্টের ছাপ। গলা দিয়ে তার আর শব্দ বের হচ্ছে না।