Advertisment

Jhanklai: দেবীজ্ঞানে পূজিত বিষধর কেউটে 'ঝাঁকলাই'! সাপ নিয়ে বাংলার এতল্লাটের মানুষজনের কী বিশ্বাস জানেন?

Snake Pujo: বাংলার এপ্রান্তে বিষধর কেউটে সাপকেই দেবীজ্ঞানে পুজো করা হয়। সরল বিশ্বাস নিয়ে আজও ঝাঁকলাই সাপকে সঙ্গে নিয়েই ঘর করেন এঁরা। ঝাঁকলাই সাপের পুজো ঘিরে এতল্লাটে উৎসবের মেজাজ তৈরি হয়। টানা কয়েকদিন ধরে আনন্দোৎসবে সামিল থাকেন আট থেকে আশি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
people of purba bardhaman's bhatar and manglkote offers puja to jhanjlai snake, ঝাঁকলাই, সাপ পুজো, পূর্ব বর্ধমান

Snake Pujo: সাপকেই দেবীজ্ঞানে পুজো করেন এঁরা।

Jhanklai-Snake Puja: কারও কাছে তিনি পরিচিত 'ঝাঁকলাই' নামে। আবার কেউ তাঁকে বলেন 'ঝঙ্কেশ্বরী'। এমন নানা নামে যাঁর পরিচিতি তিনি আসলে বিষধর কেউটে সাপ। বংশ পরম্পরায় প্রতি বছর আষাঢ়ের শুক্লা প্রতিপদ তিথিতে তাঁকেই দেবীজ্ঞানে পুজো করে আসছেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ও মঙ্গলকোটের সাতটি গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisment

মহা ধুমধাম করে ঝাঁকলাইয়ের’ পুজো হল ভাতারের বড়পোশলা, শিকোত্তর, মুকুন্দপুর এবং মঙ্গলকোটের ছোট পোশলা, পলসোনা, মুশারু এবং নিগন গ্রামে। আগে এই সাতটি গ্রামে ঝাঁকলাইয়ের অবাধ বিচরণ থাকলেও বর্তমানে ভাতারের বড়পোশলা এবং মঙ্গলকোটের ছোটপোশলা, মুশারু ও পলসোনা গ্রামে এখনও ঝাঁকলাই সাপ দেখা দেয়। এই চার গ্রামে জ্যান্ত ঝাঁকলাই সাপকেই এদিন দেবীজ্ঞানে পুজো করা হয়।

এলাকার বাসিন্দাদের বিশ্বাস, ঝাঁকলাই বিষধর হলেও সে কাউকে কামড়ায় না। কোনও কারণে কাউকে ছোবল দিলে দেবীর মন্দিরের মাটি তার শরীরে লেপে দিলেই তিনি বিষমুক্ত হয়ে যান, এই সরল বিশ্বাস নিয়ে আজও ঝাঁকলাই সাপকে সঙ্গে নিয়েই ঘর করেন এই সব গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের বাসিন্দারা জানান, তাঁদের গ্রামে রান্নাঘর থেকে শোওয়ার ঘর এবং গ্রামের মন্দির সর্বত্রই বিষধর কেউটে প্রজাতির ঝাঁকলাই সাপের অবাধ বিচরণ দেখা যায়।

আরও পড়ুন- Hilsa Fish: থলে-ভর্তি করে নকল ইলিশ কিনছেন না তো? আসল চিনবেন কীভাবে?

গ্রাম গুলিতে এই ঝাঁকলাই সাপ নিয়ে অনেক লোককথা প্রচলিত আছে। এলাকার বাসিন্দাদের বিশ্বাস 'ঝাঁকলাই' আসলে কালনাগিনী। লক্ষ্মীন্দরকে লোহার বাসরঘরে দংশন করার পর পালানোর সময় বেহুলা তাকে লক্ষ্য করে কাজললতা ছুড়ে মারেন। কাজললতার আঘাতে কালনাগিনীর লেজ কেটে যায়। তাই ঝাঁকলাইয়ের লেজ কাটা।

পলসোনার বাসিন্দাদের কথায় জানা যায়, পলসোনা গ্রামে একটা ডাঙা আছে। সেই ডাঙার নাম খুনগোর। বেহুলার শাপে কালিয়াদহের কলনাগিনী মর্তে এসে খুনগোর ডাঙায় বাস করতে শুরু করে। গ্রামের বাসিন্দা মুরারীমোহন চক্রবর্তীকে স্বপ্নাদেশে কালনাগিনী তার পুজো করার কথা জানায়। সেই থেকেই পলসোনা গ্রামে ঝাঁকলাইয়ের পুজো হয়ে আসছে। আরও জানা গিয়েছে, ঝাঁকলাইয়ের গায়ের রং কালচে বাদামি।
যেসব গ্রামে ঝাঁকলাই সাপ দেখা যায় সেই সব গ্রামে সচরাচর অন্য কোনও বিষধর সাপ দেখা যায় না। ঝাঁকলাই রাতে বের হয় না। এমনকী এই সাপ এলাকা ছেড়েও বের হয় না।

আরও পড়ুন- TMC MLAs Oath: বিধানসভায় শপথ চার বিধায়কের, গরহাজির BJP, মুখ্যমন্ত্রী যা বললেন…

ঝাঁকলাই নিয়ে গ্রামের মানুষজনের ধর্মীয় বিশ্বাস যাই থাক বিজ্ঞানমঞ্চ বিষয়টিকে অন্য ভাবে দেখতেই আগ্রহী। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের বর্ধমান জেলা কার্যকরী সভাপতি চন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “সাপ এমনিতেই ঠান্ডা রক্তের প্রাণী। কোনও কারণ ছাড়া সাপ কামড়ায় না। তাছাড়া ধর্মীয় রীতিনীতির কারণে এখানকার মানুষেরা সাপকে বিরক্ত করেন না। তার কারণে উভয়ের মধ্যে সহাবস্থান তৈরি হয়েছে । দীর্ঘদিনের সহাবস্থানের ফলে ওই সব গ্রাম গুলিতে সাপের কামড়ের ঘটনা খুবই কম। তবে এই সাপের বিষ আছে। কামড়ালে হাসপাতালে যেতে হবে।"

আরও পড়ুন- Abhishek Banerjee on Budget 2024: ‘ব্যর্থ সরকারের ব্যর্থ বাজেট, ফের বঞ্চিত বাংলা’, বাজেটে ফুঁসছেন অভিষেক

Purba Bardhaman Jhanklai Snake Puja
Advertisment