Bangladesh Latest News: অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে BNP ও জামাত আশ্বাস দিলেও হামলার ঘটনা অব্যাহত। আজ, বৃহস্পতিবার নয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার শপথ নেবে। এরই মধ্যে ওই দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছে বাংলাদেশের হিন্দুদের একাংশ। গতকাল জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি সীমান্তে কয়েকহাজার হিন্দু জড় হয়েছিল এদেশে আসার জন্য। ইসকনের মন্দির-সহ একাধিক মন্দিরে লুটপাঠ, অগ্নিসংযোগ ঘটেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব পরিচয়ে দিয়ে গোবিন্দ প্রামাণিকের দুটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত।
প্রথম ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন, "বাংলাদেশে সেভাবে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে না।" এই প্রসঙ্গে আরএসএসের বক্তব্য, "ওখানকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে এটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। কিন্তু বাংলাদেশের ঘটনা অনভিপ্রেত।" তারপর বুধবার অন্য একটি ভিডিও ভাইরাল হয় গোবিন্দ প্রামানিকের। তাঁতে তিনি বলেছেন, "হামলা, লুটপাঠ, অগ্নিসংযোগ, মেয়েদের অপহরণের মতো ঘটনা ঘটায় বাংলাদেশে হিন্দুরা ওই দেশ থেকে পালিয়ে বাঁচতে চাইছেন।"
সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কেউ গোবিন্দ প্রামাণিকের সঙ্গে RSS সংযোগ রয়েছে বলেও দাবি করেছেন। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বক্তব্য শেয়ার করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে এখানে ফিরে এসে সেখানে হামলা, লুটপাঠে, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ করছেন লোকজন। মালদার বাসিন্দা সুশান্ত সরকার বলেছেন, "সংখ্যালঘুদের ওপর চরম অত্যাচার চলছে। যে কোনও মুহুর্তে খুন হয়ে যাওয়ার ভয়ে নিজের দেশে চলে এসেছি।"
ইসকনের পিআরও রাধারামন বলছেন, "তাঁদের মন্দিরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।" বাংলাদেশের হিন্দু মহাজোটের মহাসচিবের বক্তব্য প্রসঙ্গে, দক্ষিণবঙ্গ RSS প্রচার প্রমুখ বিপ্লব রায় গোবিন্দ বলেন, "এটা তাঁর মন্তব্য। ওখানকার পরিস্থিতি বিবেচনা এটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। তাঁর সঙ্গে আমাদের এত পরিচিত নেই। এটা আমাদের বিবেচনা করতে হবে সেখানে যে ঘটনা ঘটছে সেটা অনভিপ্রেত। এই ধরনের ঘটনা ঘটা উচিত নয়। মানুষের দাবি-দাওয়া থাকতেই পারে তারজন্য মানুষকে হত্যা করা, ৪০ জন পুলিশ কর্মীকে হত্যা করেছে সেটা তো ঠিক আছে নাকি?"
আরও পড়ুন- Bangladeshi refugees: ভিটেমাটিতেই আক্রান্ত! প্রাণ-মান বাঁচাতে একবস্ত্রে ভারত সীমান্তে ভিড় হিন্দু শরণার্থীদের
RSS-এর স্পষ্ট বক্তব্য, "বাংলাদেশে যে ঘটনা ঘটছে তা অনভিপ্রেত। ধর্মীয় ভাবে ব্যাক্তি বা ধর্মীয়স্থানে আক্রমণ ঠিক নয়। সেটা যে দেশেই হোক। এই মুহূর্তে সম্প্রীতি অটুট রাখাই কাজ। নিরীক্ষণ করে পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে। আন্দোলনকারী যুবকদের ভুল বোঝনো হয়েছে, একাত্তরের স্বাধীনতা সম্পর্কে তাঁরা হয়তো জানেন না। এই পরিস্থিতির নিরসন করার জন্য কিকি করা দরকার, সেটা করতে হবে।" এদিকে বিশ্বহিন্দু পরিষদের দাবি, "অত্যাচারিত হিন্দু শরণার্থীরা এদেশে এলে তাঁদের আশ্রয় দিতে হবে। আরএসএসের বক্তব্য, আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার নিয়ম আছে। তবে দেখতে হবে শরণার্থীদের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী না ঢুকে যায়।
আরও পড়ুন- Bangladesh Violence: ইস্কনে হামলা, আক্রান্ত হিন্দুরা, বাংলাদেশ কাণ্ডে ‘মোমবাত্তিওয়ালাদের’ খোঁজ রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির
প্রথম ভাইরাল ভিডিওতে তাঁর বক্তব্য, "আমি অ্যাডভোকেট গোবিন্দ প্রামানিক, মহাসচিব বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। শেখ হাসিনার পদত্যাগের ফলে হিন্দু সমাজ ভেবেছিল তাঁদের বাড়িতে হামলা অত্যাচার, লুটপাঠ হবে। কিন্তু বিএনপি ও জামাতের নেতারা লুটপাঠ, হামলা, অগ্নিসংযোগ যাতে না হয় তাই পাহারা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। হিন্দুদের মন্দির বা বাড়িতে হামলা হয়নি। কিছু আওয়ামী লিগের হিন্দু নেতা যাঁরা লম্ফঝম্প করেছে তাদের বাড়িতে হামলা করেছে। কিছু মন্দিরেও করেছে সেটা ব্যাপক বিষয় নয়।" ভিডিওর শেষে গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন, "মোদীকে সরিয়ে শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করার বিরাট সুযোগ আছে।"
আরও পড়ুন- West Bengal Assembly: বাংলাদেশ কাণ্ডে ‘চোখ জল’, স্মৃতি আওড়ে কী বললেন বিধান সভার স্পিকার?
বুধবার ১৮০ ডিগ্রি পাল্টি খেয়ে গোবিন্দ প্রামাণিকের আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে তিনি হিন্দিতে বলেন, "বাংলাদেশে প্রতিদিন কোনও না কোনও জায়গায় হামলা হচ্ছে। জমিদখল, মেয়েদের অপহরণ, বলাৎকার, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে। বাড়ি, ব্যবসা লুটপাঠ চলছে। হিন্দুরা পালিয়ে যাচ্ছে এর ফলে।" তবে দুটি ভিডিওর কোনওটাই যাচাই করেনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা। এখানকার হিন্দু সংগঠনগুলির বক্তব্য, পরিস্থিতির চাপে পড়ে প্রথমে অসত্য বয়ান দিতে বাধ্য হয়েছিলেন গোবিন্দ প্রামাণিক।