Physically Challenged Couple Marriage: অবশেষে চারহাত এক হলো এই শীতের লগনে। গত বুধবার শ্রীরামপুরের ইন্দ্রনীলের সঙ্গে মহুয়ার বিয়ে হয়ে গেল বেশ জাঁকজমক ভাবেই। এটা অবশ্য সাধারণ বিয়ে ছিল না। আসলে এটি ছিল একটি অসাধারণ বিবাহ অনুষ্ঠান। পাত্র পাত্রী দুজনেই বিশেষভাবে সক্ষম।
শ্রীরামপুরের বেল্টিংবাজার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ইন্দ্রনীল মুখার্জি। বছর বত্রিশের ইন্দ্রনীল বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানিতে কর্মরত। ৮ মাস বয়সে চিকিৎসার ভুলের কারণে শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেন ইন্দ্রনীল। তারপর থেকে কথা বলা বা শেখা কোনটাই পারেননি তিনি। পরিবারের লোকজন অনেক চেষ্টা করেছিলেন ছেলেকে স্বাভাবিক করার। কিন্তু দুর্ভাগ্য তা হয়নি। তবে ইন্দ্রনীল বর্তমানে যা করছে তা একজন স্বাভাবিকের থেকেও অনেক বেশি ভালো। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হয়েও জীবনের প্রতিটা লড়াই লড়েছে একজন সাধারণ মানুষের মতই। পড়াশোনা থেকে খেলাধুলা সবেতেই নজর কাড়া পারফরম্যান্স ইন্দ্রনীলের। শ্রীরামপুর কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে বর্তমানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে উচ্চপদে কর্মরত করেন ইন্দ্রনীল।
চাকরি করতে গিয়েই তিনি খুঁজে পান তার মতনই আরো এক জনকে। কলকাতার বাসিন্দা মহুয়া, সেও ছোট বয়স থেকে মুক ও বধির। মহুয়াও প্রতিবন্ধকতাকে পেরিয়ে নিজের জীবন সংগ্রাম লড়ে চড়েছিলেন একাই। পড়াশোনা, বাস্কেটবল এ সব নিয়েই তার জীবন চলছিল। কিন্তু পারিপার্শ্বিক চাপে খেলাধুলা ছেড়ে নামতে হয় কর্মজীবনে। জীবনের মোচড়টা আসে বছর কয়েক আগে। কাজের সূত্রে দুজনের একে অপরের সঙ্গে পরিচয়। দুজনের কেউই কথা বলতে পারেন না শুনতেও পারেন না তাতে কি হয়েছে? এই নিঃশব্দের ভালোবাসা পেয়েছে তাদের পরিণতি। অবশেষে চার হাত এক হয়েছে দুজনের। ঠিক যেমন একজন সাধারন মানুষ তার জীবন যাপন করেন সেভাবেই মহুয়া ও ইন্দ্রনীল ঘর বেঁধেছে একসঙ্গে বাঁচার জন্য।
দুজনের কথোপকথন হয় ইশারাতে। অনেক সময় একে অপরের দিকে তাকিয়েই তারা দুজন দুজনের মনের কথা বুঝতে পেরে যান। বাইরের লোক খুব একটা না বুঝলেও তারা দুজন দুজনের জন্য যে একেবারে উপযুক্ত সে কথা বলছেন গোটা পরিবারের লোকজন।