PM Modi Invited at G7 Summit: কানাডায় আয়োজিত হতে চলেছে চলতি বছরের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন। সেই সম্মেলনে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ কানাডার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মার্ক জে. কার্নির। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী মোদী ইতিমধ্যে সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। আশা করা হচ্ছে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে মোদী আগামী ১৫-১৭ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করবেন।
জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন আগামী ১৫ থেকে ১৭ জুন কানাডার আলবার্টার কানানাস্কিস রিসর্টে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, পশ্চিম এশিয়ার অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। জি-৭ গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি হল- কানাডা, আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
কানাডার তরফে আমন্ত্রণ পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত মোদী। প্রধানমন্ত্রী নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে লিখেছেন, “কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক জে. কার্নির সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পেরে আমি খুশি। তাঁকে সাম্প্রতিক নির্বাচনে জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছি এবং জি-৭ সম্মেলনের আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছি। ভারত এবং কানাডা উভয়ই গণতান্ত্রিক দেশ, যারা পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।”
দুই দেশের সম্পর্কে নতুন সম্ভাবনা
জি-৭ সম্মেলনে ভারতের আমন্ত্রণকে ইতিবাচক বলে আখ্যা দিয়েছেন কানাডার রাজনীতিক ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের এমপি ডালাস ব্রডি। তিনি জানান, “ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভারতীয় সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ কানাডায় বসবাস করে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়া প্রয়োজন।”
খালিস্তানি ইস্যুতে আলোচনা প্রত্যাশিত
উল্লেখ্য, ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক বিগত বছরগুলিতে খালিস্তান ইস্যুতে সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়েছে। ২০২৩ সালে খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার ঘটনায় কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো প্রকাশ্যে ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন, যার ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটে। ব্রডি জানান, “খালিস্তানি সমস্যা নিঃসন্দেহে একটি বড় সমস্যা। কানাডায় হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ এই পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট নন। আমি আশা করি, এবারের জি-৭ সম্মেলনে ভারত ও কানাডার নেতারা এই বিষয়ে সরাসরি আলোচনা করবেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের পথে এগোবেন।”
আমন্ত্রণ নিয়ে জল্পনা, কংগ্রেসের কটাক্ষ
জি-৭ সম্মেলনে ভারতের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে প্রথমে অনিশ্চয়তা থাকায় দেশের রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। কংগ্রেস জানিয়েছিল, যদি ভারতকে আমন্ত্রণ না জানানো হয়, তবে তা হবে এক বড় কূটনৈতিক ব্যর্থতা। তবে মোদীকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পাঠানোর পর সেই জল্পনায় আপাতত ইতি পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর কানাডা সফর এবং জি-৭ সম্মেলনে উপস্থিতি শুধু ভারত-কানাডা সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে তাই নয়, বরং বৈশ্বিক স্তরেও ভারতের অবস্থানকে আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে। কানাডা ও ভারতের মধ্যে আলোচনার মূল এজেন্ডা হতে পারে বাণিজ্য, নিরাপত্তা এবং অভিবাসন নীতি। এখন নজর থাকবে ১৫ জুন থেকে শুরু হওয়া ঐতিহাসিক সম্মেলনের দিকেই।