করোনা মোকাবিলায় দেশে লকডাউনের মেয়াদ বাড়তে পারে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এমনটাই মনে হয়েছে বলে জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এ বিষয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করা দরকার বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, একদিকে বলা হয়েছে কঠোরভাবে লকডাউন মানতে হবে, আবার সব দোকান খুলতেও বলা হয়েছে। এই দুই রকম নির্দেশ কীভাবে কার্যকর করা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বলেছি, কালকের মধ্যে এ বিষয়ে কেন্দ্রের ক্যাবিনেট সচিবকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করে নিতে। বুধবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মমতা সরকার।
সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ''প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে মনে হয়েছে, এটা (লকডাউন) অনেক দিন চলতে পারে। আমি ফুল লকডাউনের পক্ষে...২১ মে পর্যন্ত আমাদের সাবধানে থাকতে হবে''।
লকডাউন প্রসঙ্গে ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?
মমতা বলেন, ''বুঝতে পারছি না কতদিন পর্যন্ত লকডাউন চলবে। তবে আজ প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে যা মনে হয়েছে, তাতে মনে হয় এটা অনেকদিন চলবে...২১ মে পর্যন্ত আমাদের সাবধানে থাকতে হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হবে। কোথায় ছাড় দেওয়া হবে, তা দেখা হবে''।
আরও পড়ুন: ভারতে প্রথম! লকডাউনে বাংলায় অত্যাবশ্যকীয় নয়, এমন পযণ্যের হোম ডেলিভারিতে অনুমতি
এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''একদিকে বলছে লকডাউনে শক্ত হতে হবে, যাতে কেউ বেরোতে না পারে। আবার বলছে, সব দোকান খুলে দাও। আমরা চাই দোকান খুলুক। একটা সিদ্ধান্ত তো নিতে হবে। দোকান খুললে লোক যাতায়াত করবে। লোক দোকানে গেলে রাস্তায় ভিড় বাড়বে। আর ভিড় হলে লকডাউন ব্যর্থ হবে, তাহলে কোনটা করব? কেন্দ্র যা বলছে আর যা নির্দেশ দিয়েছে, তার মধ্যে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে, বিভ্রান্ত করা হচ্ছে''।
আরও পড়ুন: বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া ৫০০ পেরোল
এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ''আমরা কেন্দ্রের নির্দেশিকা মানব, কিন্তু স্বচ্ছতা থাকতে হবে। আজ-কাল অপেক্ষা করব, পরশু সিদ্ধান্ত নেব। রেড জোনকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা রাজ্যে গ্রিন জোন, রেড জোন, অরেঞ্জ জোনের তালিকা তৈরি করেছি''।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''আমরা ৩ ঘণ্টা বোবার মতো শুনেছি। কারও কিছু বলার ছিল না। আমাদের বলতে দেয়নি''।
কেন্দ্রীয় দলকে নিশানা করে এদিন মমতা বলেন, ''কেন্দ্রীয় দলের নামে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা রোজ মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে ডেকে পাঠাচ্ছেন, তাঁরা হাজিরা দেবেন না কাজ করবেন! যুদ্ধের সময় এসব ত্যাগ করা উচিত। আমরা মানসিকভাবে ত্যাগ করতে পেরেছি বলেই মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও একসঙ্গে কাজ করছি''।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন