Advertisment

চিতাবাঘ মেরে মাংস খেয়ে চামড়া বিক্রির চেষ্টা, ধৃত পাঁচ

ক্রেতা সেজে টোপ ফেলে বন দপ্তর। সেই টোপ গিলে ১০ লক্ষ টাকায় চিতাবাঘের চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে গতকাল রাতে ডুয়ার্সের ওদলাবাড়িতে হাতেনাতে গ্রেফতার হলো পাঁচ পাচারকারী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

চিতাবাঘের চামড়া বেচতে গিয়ে ধৃত পাঁচজন

চিতাবাঘ মেরে মাংস দিয়ে ভুরিভোজের পর চামড়া বিক্রির ছক ফেঁদেছিল পাচারকারীরা। উলটে বনদপ্তরের পাতা ফাঁদে বমাল সমেত গ্রেফতার হলো তারা। ক্রেতা সেজে টোপ ফেলে বন দপ্তর। সেই টোপ গিলে ১০ লক্ষ টাকায় চিতাবাঘের চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে গতকাল রাতে ডুয়ার্সের ওদলাবাড়িতে হাতেনাতে গ্রেফতার হলো পাঁচ পাচারকারী। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ডুয়ার্স অঞ্চলে।

Advertisment

সম্প্রতি টাস্কফোর্সের প্রধান সঞ্জয় দত্তর কাছে গোপন সুত্রে খবর আসে, ডুয়ার্স এলাকায় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে চিতাবাঘের চামড়া বিক্রির চেষ্টা চলছে। টাস্কফোর্স বনবস্তি সহ বিভিন্ন এলাকায় সোর্স লাগিয়ে শুরু করে খোঁজখবর নেওয়ার কাজ। সঞ্জয়বাবু জানান, "ক্রেতা সেজে আমি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হই। এরপর শুরু হয় দরদাম। ওরা ১২ লক্ষ টাকা দর হাঁকে। আমি দাম দিই ১০ লক্ষ টাকা। ওরা রাজি হয়ে যায়। কথা হয়, রবিবার বেলার দিকে ওদলাবাড়ি এলাকায় আমার হাতে চিতাবাঘের চামড়া তুলে দেবে।"

আরও পড়ুন: পরপর চিতাবাঘের হামলা চা বাগানে, এবার বলি শিশু

তিনি আরো জানান, "কথামত রবিবার আমরা টাস্ক ফোর্সের পুরো টিম নিয়ে বেলার দিকে ওদলাবাড়ি এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে বসি। পাচারকারীরা একটি স্কুল ব্যাগে চামড়াটি নিয়ে বাইকে চেপে চলে আসে। এরপরে আমরা বমাল সমেত তাদের গ্রেফতার করি। এদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় গুঁড়ো হলুদ মাখানো ১০ ফুট লম্বা চিতাবাঘের চামড়া। ধৃতরা জেরায় জানিয়েছে, ফাঁদ পেতে ডুয়ার্সের জঙ্গলে এই চিতাবাঘটিকে মেরে প্রথমে তার মাংস খায় তারা। এরপর চামড়া বিক্রি করার চেষ্টায় ছিল। তার আগেই আমরা ধরে ফেলি।"

publive-image হলুদ মাখানো চিতাবাঘের চামড়া

ধৃতদের গ্রেফতার করার পর খবর যায় জলপাইগুড়ি পুলিশ ও গরুমারা বন্যপ্রাণী শাখায়। রবিবার রাতেই এসডিপিও মালবাজার ও গরুমারা বন্যপ্রাণী শাখার পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা ধৃতদের একপ্রস্থ জেরা করেন। আরো তথ্য জানতে তাদের আজ জলপাইগুড়ি আদালতে তুলে রিমান্ড চাইবে টাস্কফোর্স। ঘটনায় ধৃতরা হলো নাগরাকাটার বাসিন্দা বিকাশ রাই (৩০) ও কিশানগঞ্জ তামাং (৩৭), এবং লাটাগুড়ির রঞ্জিত মোহন্ত (২৪), সঞ্জয় অধিকারী (২২), ও মোহন মুন্ডা (২৮)।

ঘটনার প্রেক্ষিতে পরিবেশপ্রেমি সংগঠন 'স্পোর'-এর সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ পান্ডেকে প্রশ্ন করা হয়, কেন মানুষ বাঘের মাংস খায়? তিনি জানান, "এই ঘটনা নতুন নয়, আগেও হয়েছে। এক শ্রেণীর মানুষ কুসংস্কারে ভোগেন। তাঁদের ধারণা, বাঘের মাংস খেলে শরীরেও বাঘের মতো বল হবে। তাই এসব করে থাকেন। প্রয়োজন আরো বেশি সচেতনতা শিবিরের।"

এরপর জলপাইগুড়ির বিশিষ্ট চিকিৎসক সুমন্ত্র মুখার্জীকে প্রশ্ন করা হয়, বাঘের মাংস আদৌ কি মানুষের খাওয়ার যোগ্য? খেলে মানুষের কী হতে পারে? ডুয়ার্সে বাঘের মাংস খাওয়া হয়েছে শুনে তাঁর চক্ষু চড়কগাছ। তিনি স্পষ্ট জানান, "এই মাংস আদৌ মানুষের খাওয়ার যোগ্য নয়। খেলে জলাতঙ্ক সহ অন্যান্য জুনোটিক (অর্থাৎ মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণী একে অপরের মধ্যে ছড়ায় এমন) রোগ হতে পারে।

Advertisment