Advertisment

টেট বিক্ষোভ ঘিরে ধুন্ধুমার! মমতা ঘনিষ্ঠ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, সুবোধ সরকাররা কী বলছেন?

টেট উত্তীর্ণদের বিক্ষোভ সামাল দিতে পুলিশি সক্রিয়তা নিয়ে মুখ খুললেন বিদ্বজনেদের একাংশ।

author-image
Joyprakash Das
New Update
TET protest, Kolkata Police

টেট উত্তীর্ণদের বিক্ষোভ সামাল দিতে পুলিশি সক্রিয়তা নিয়ে মতামত মমতা ঘনিষ্ঠ বিদ্বজনেদের।

বাম আমলে নন্দীগ্রামে গুলি চালনার ঘটনার পর কলকাতার রাজপথে নেমেছিলেন বিদ্বজনেরা। সেই সময় পুলিশি অত্যাচারের ঘটনা ঘটলেই প্রতিবাদে সোচ্চার হতেন বুদ্ধিজীবীরা। তাঁদের অনেককেই পাশে পেয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবর্তনের ১১ বছর পর এবার চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলনে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিরক্ত মমতা ঘনিষ্ঠ বিদ্বজনেদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের দাবি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করছেন।

Advertisment

সম্প্রতি চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন ও শিক্ষাক্ষেত্র নিয়ে সরকারের ভূমিকায় রীতিমতো বিরক্ত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ী। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে নৃসিংপ্রসাদবাবু বলেন, 'বিএ, এমএ পাশ করে এঁরা আর কোনও চাকরি পান না বোধ হয়। চাকরি পাওয়ার কোনও আশা নেই। এদের টেট ছাড়া গতি নেই। এটাই মুশকিল। বিপ্লব দেব মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সাড়ে ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছিল ত্রিপুরায়। ভালই হয়েছিল। যখন এত গন্ডগোল তখন পুরো প্যানেল বাতিল করা উচিত। রাজ্য় সরকার বসে বসে কি করছে?'

২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের বিক্ষোভে বুধাবার কলকাতার রাজপথে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটেছে। নিয়োগের দাবিতে আচমকা ধর্মতলা, এক্সাইড চত্বরে আন্দোলনকারীদের রক্ত ঝড়েছে। অভিযোগ, এক বিক্ষোভকারীর হাতে কামড়ে দিয়েছে পুলিশ। উর্দিধারীদের হাতে কামড় দেওয়ার ঘটনায় বিতর্ক ছড়িয়েছে। পুরাতত্ববিদ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, 'টেটের একটা চাকরির জন্য আন্দোলন কোন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে কামড়াকামড়ি পর্যন্ত গিয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে ভালই দোষ আছে। আমার মনে হয় এটা আদালতের অধীনস্ত ব্য়াপার, এই সব জিনিস নিয়ে তো কামড়াকামড়ির প্রয়োজন নেই। তাঁরা তো দেখছে ব্য়াপারটা। আমি তাঁদের উদ্দেশ্য বলব তাঁরা আদালতে যাক, গিয়ে বলুক তাঁরা ইন্টারভিউ দিতে পারবে কি পারবে না।' শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, 'পুলিশ এখন কৃত্তিম অস্ত্র ছেড়ে দিয়ে নখ-দন্ত ব্য়বহার করছে। সেটাই তো খুব আশ্চর্যের ব্য়াপার। পশুদের সম্বন্ধে বলি নখি-দন্তী, কিন্তু এখন পুলিশ যে নখ ও দন্ত ব্য়বহার করছে এটা দেখে আমার অবাক লাগছে।'

আন্দোলনকারীদের সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখা উচিত বলেন মন্তব্য করেছেন কবি ও অধ্যাপক সুবোধ সরকার। দ্রুত সমস্যার সমাধান করার কথা বলেছেন তিনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সুবোধ সরকার বলেন, 'যাঁরা আন্দোলন করছে সহানভূতির দৃষ্টিতে তাঁদের দিকে তাকানো উচিত। যাঁরা যোগ্যপ্রার্থী শাসক ও বিরোধী সবাই মিলে চেষ্টা করা উচিত তাঁরা যেন কাজ পায়। এটা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। আমার মনে হয় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই জটিলতাকে অতিক্রম করতে হবে। এমনকী মহামান্য আদালতেরও এতে সদর্থক ভূমিকা থাকা দরকার, সহানুভূতিশীল হয়েই তাঁরা কাজ করবেন আশা করি। সবাই মিলে এই ছেলেমেয়েগুলির দিকে তাকিয়ে সমস্যার সমাধান করা উচিত বলে আমি মনে করি।'

উল্লেখ্য, নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে গত বুধবার উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয় শহর কলকাতায়। ২০১৪-এর টেট উত্তীর্ণদের বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে অতি সক্রিয় ভূমিকায় নামে পুলিশ। টেনে-হিঁচড়ে বিক্ষোভকারীদের সরাতে দেখা যায় পুলিশকর্মীদের। পুলিশের সঙ্গে মারামারি-ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। শেষমেশ ৩০ জন আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করে রেখে তাঁদের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা দেওয়া হয়। যদিও বৃহস্পতিবার ধৃত ৩০ জনকেই ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে প্রত্যেককে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন বিচারক।

kolkata police Mamata Government Primary TET
Advertisment