/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/09/baguihati-murder-case.jpg)
নিহত ছাত্রদের বাড়িতে পুলিশ। ছবি- শশী ঘোষ।
বাগুইআটি জোড়া খুন কাণ্ডে বারেবারে প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। যা নিয়ে বুধবার নবান্নের রিভিউ বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর হাতেই রয়েছে পুলিশের দায়িত্বও। ছাত্রদের নিখোঁজের অভিযোগ মিলতেই কেন পুলিশ আরও সক্রিয় হল না? কেন অভাব রইল সমন্বয়ের? তা জানতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ২২ অগাস্ট বাগুইআটি থেকে অপহৃত হয় অতনু দে এবং অভিষেক নস্কর৷ অভিযোগ, ওই দিন রাতেই তাদের খুন করে দুষ্কৃতীরা৷ বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানিয়েছিল নিখোঁজ দুই ছাত্রের পরিবার। অথচ প্রায় দু'সপ্তাহ ধরে দুই ছাত্রের দেহ বসিরহাটের পুলিশ মর্গে পড়ে থাকলেও সেই খবর পায়নি বাগুইআটি থানার পুলিশ৷ শেষ পর্যন্ত, গতকাল দুই ছাত্রের খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে৷ প্রশ্ন হল, পর পর দুই ছাত্রের দেহ উদ্ধারের পরও বসিরহাট জেলা পুলিশের সন্দেহ হল না কেন? যেখানে কয়েক কিলোমিটার দূরে বাগুইআটি থানায় দুই নাবালকের নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে, সেখানে কী ভাবে ১০-১২ দিন ধরে বসিরহাট মর্গেই পড়ে থাকল দুই কিশোরের দেহ?
কেন এমন হল? এই প্রসঙ্গেই রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেছেন, 'তদন্তের গোড়াতেই গলদ রয়েছে। এই ধরণের অপহরণের ঘটনায় পুলিশের কাজের এসওপি থাকে। সেটাই এখানে পালন করা হয়নি।' পঙ্কজবাবুর ব্যাখ্যা, 'কেউ নিখোঁজ হলে তাঁর বাড়ির লোক বা আত্মীয় থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাবেন। পোক্ত প্রমাণ থাকলে অপহরণের অভইযোগে ডায়েরি হবে। এরপর নিখোঁজের পরিবারের তরফে আট কপি ছবি ও থানায় দায়ের করা অভিযোগ নিয়ে রাজ্য পুলিশের দফতর ভবানীভবনে যেতে হবে। মিসিং পার্সন স্কোয়াডে সেটা জমা করতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক। সিআইডি নিখোঁজের তথ্য রাজ্যের সব থানায় পৌঁছে দেবে।' প্রাক্তন পুলিশ কর্তা পঙ্কজ দত্তের কথায়, 'এই বিষয়টিই এক্ষেত্রে হয়নি।'
আরও পড়ুন-বাগুইআটিতে জোড়া ছাত্র খুন: আরও কড়া নবান্ন, সাসপেন্ড আইসি কল্লোল ঘোষ
২২ অগাস্ট অতনু দে এবং অভিষেক নস্করকে খুন করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, তাঁদের দেহ বসিরহাট মর্গে ছিল ২৬ অগাস্ট থেকে। কিন্তু সেই খবর বিধাননগর কমিশনারেট বা বাগুইআটি থানার কাছে পৌঁছায়নি। এখানেই পঙ্কজ দত্তের প্রশ্ন, 'বসিরহাট থানার তরফে খবর দেওয়া হয়নি, নাকি খবর পেয়েও তেমন উদ্যোগ নেয়নি বাগুইআটি থানা? এখানেই সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট হচ্ছে। তাহলে জেলা ভাগ, পুলিশ জেলা তৈরি, কমিশনারেট তৈরি করে লাভ কী?'
পুলিশের ভূমিকায় শুরু থেকেই অসন্তুষ্ট বাগুইআটির মানুষ। প্রায় প্রত্যেকদিন থানাকে নিখোঁজ দুই নাবালকের পরিবার ততবির করলেও কাজের কাজ হয়নি। উল্টে নানা অছিলান প্রসঙ্গ এড়ানো হতে বলে দাবি স্থানীয়দের। কেন মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা হল না? পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে উদ্যোগ নেয়নি তা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
এসেবর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বাগুইআটিকাণ্ডের কিনারায় সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে ওই থানার আইসি কল্লোল ঘোষকে।