মৌমিতা ঘোষ
(২০১৪ প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড একতা মঞ্চের চাকরিপ্রার্থী)
গতকাল রাত পর্যন্ত আমরা একটানা প্রায় ৫৯ ঘণ্টা ধরে নির্জলা অনশন করছিলাম। এই পরিস্থিতিতে গতকাল রাত ১২টা ২০ মিনিট নাগাদ আসে পুলিশ। মাত্র ২ মিনিটের ওয়ার্নিং দিয়ে হাজার খানেক পুলিশ আমাদের উপর চড়াও হয়। ১৬-১৭ মিনিটের মধ্যেই আমাদের গাড়িতে তুলে দেয়। গোটা রাজ্য তথা দেশ দেখেছে যে পুলিশ কী নির্মমভাবে আমাদের তুলেছে। মেয়েদের ছেলে পুলিশ দিয়ে তোলা হয়েছে। আমাদের বহু চাকরিপ্রার্থীকে গতরাতে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত অনেকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগও হয়নি। গতরাতে করুণাময়ীর বিক্ষোভস্থল থেকে আমাদের টেনে-হিঁচড়ে তুলে বিধাননগর পূর্ব, দক্ষিণ ও উত্তর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অনেককে আবার নিউটাউন থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ফর্মালিটি মেইন্টেন করার পর বিধাননগর পূর্ব থানা রাত ২টো নাগাদ কয়েকজনকে বের করে শিয়ালদহে পৌঁছে দেয়। মহিলা পুলিশরাও অভদ্র আচরণ করেছে।
আমি ছিলাম নিউটাউন থানায়। আমাদের সঙ্গে নির্মম ব্যাবহার করেছে পুলিশ। আমাদের প্রসিডেন্ট অচিন্ত্য ধাড়ার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। গতকাল রাত দেড়টা নাগাদ আমার সঙ্গে ওঁর কথা হয়েছে। উনি সেই সময়ে কোনও একটি হাসপাতালে ছিলেন। পরে ওঁকে বিধাননগর উত্তর থানায় নিয়ে যায়। বিধাননগর উত্তর থানা থেকে ওঁকে আর পাওয়া যায়নি। অচিন্ত্য সামন্ত নামে আমাদের আরও এক প্রতিনিধিকে বিধাননগর পূর্ব থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে ওখান থেকে হাওয়া করে দেওয়া হয়। ওর ফোনটা অন্য প্রতিনিধিরা সংগ্রহ করেছেন। ওর ফোনটা বর্তমানে আমার কাছে আছে।
আরও পড়ুন- টানা ৪ দিনের ‘লড়াই’ এক ঝটকায় ‘শেষ’, ১৫ মিনিটেই করুণাময়ীর ধর্না তুলল পুলিশ
অর্ণব ঘোষকে কেউ দেখতেই পায়নি। রাতের অন্ধকারে ওঁকে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনশনমঞ্চ থেকে ওঁকে চারজন তুলে নিয়ে যায়। অর্ণবদাকে রাতে ফোন করেছিলাম, উনি ফোন তোলেননি। প্রায় ৫৮ ঘণ্টা অনশন করেছি। খোলা আকাশের নীচে ছিলাম, শারীরিক, মানসিক যন্ত্রণা উপেক্ষা করেই ছিলাম। হঠাৎ কাল রাতে মাত্র ২ মিনেটের ওয়ার্নিংয়ে আমাদের তুলে দিল। আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছি। মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে আমাদের প্রতিনিধিরা আছেন।