Post Office Scam: বাংলার বুকে বিরাট দুর্নীতির পর্দা ফাঁস, লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণায় গ্রেফতার পোস্ট মাস্টার

Post Office Scam: সিআইডি অফিসারদের একটি দল রবিবার দুপুরে ওই বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সুরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে কলকাতার ভবানী ভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।সোমবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হবে বলে সিআইডি সূত্রে খবর

Post Office Scam: সিআইডি অফিসারদের একটি দল রবিবার দুপুরে ওই বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সুরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে কলকাতার ভবানী ভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।সোমবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হবে বলে সিআইডি সূত্রে খবর

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
Chit fund scam, Purba Bardhaman, Jamalpur Sub Post Office, Bidyut Sur, CID arrest, Hriday Ranjan Maity, fixed deposit fraud, Pal family, Bulchandrapur village, fraud case, Calcutta High Court order, post office corruption, Madhabdihi police station, postal agent arrest, depositor money embezzlement, handwriting test, financial fraud, CID investigation, court production, bail rejection.

বিদ্যুৎ সুরকে গ্রেপ্তার

Post Office Scam: চিটফান্ড খুলে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার ঘটনা এক সময়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল বঙ্গে। গ্রেপ্তার হয়েছিল বহু চিটফান্ড কর্তা।আর এবার একই রকম প্রতারণার অভিযোগে সিআইডি’র হাতে গ্রেপ্তার হলেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর সাব পোস্ট অফিসের প্রাক্তন পোস্ট মাস্টার।ধৃতের নাম বিদ্যুৎ সুর।জেলার মাধবডিহি থানার বুলচন্দ্রপুর গ্রামে ধৃতের বাড়ি।সিআইডি অফিসারদের একটি দল রবিবার দুপুরে ওই বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সুরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে কলকাতার ভবানী ভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।সোমবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হবে বলে সিআইডি সূত্রে খবর মিলেছে।আমানতকারীর লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রতারণা কাণ্ডের তদন্তে নেমে ১২ দিন আগে সিআইডি বিদ্যুৎ সুরের সহযোগী পোস্টাল এজেন্ট হৃদয় রঞ্জন মাইতিকে গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁর ঠাঁই এখন হয়েছে শ্রীঘরে।

Advertisment

জামালপুর সাব-পোস্ট অফিসে সঞ্চয়ের টাকা গচ্ছিত রেখে প্রতারিত হওয়া পরিবাটি জামালপুর হটতলা এলাকার বাসিন্দা। পরিবার সদস্য সুরজিৎ পাল জানিয়েছেন ,তাঁদের পরিবারের সকলেই পরিশ্রম করে রোজগার করা অর্থ থেকে কিছু কিছু করে জমিয়ে রাখতেন। জমানো অর্থ জামালপুর সাব-পোস্ট অফিসে গচ্ছিত রাখার জন্য তিনি এবং তাঁর বাবা, মা,দিদি ও জামাইবাবু আলাদা আলাদা অ্যাকাউন্ট খোলেন। ২০২১ সালে ১ বছরের ’ফিক্সড ডিপোজিট’ স্কিমে তাঁরা নিজের নিজের অর্থ অ্যাকাউন্টে জমা করেন। তাঁদের সবার মিলিয়ে জমা করা টাকার পরিমাণ ১২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তদানিন্তন জামালপুর সাব- পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার বিদ্যুৎ সুর ওই টাকা গ্রহণ করে নিয়ে শীল স্ট্যাম্প দিয়ে তাঁদের সবার অ্যাকাউন্ট বই ইস্যু করেদেন বলে সুরজিৎ জানিয়েছেন ।

ভারত সরকারের অধীন জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে সঞ্চয়ের টাকা ফিক্সিড ডিপোজিট করে নিশ্চিন্তেই ছিলেন পাল পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ফিক্সড ডিপোজিটের মেয়াদ ১বছর উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সুরজিৎতের মা রাধারাণী দেবী।তাঁকে চিকিৎসার জন্য কলকাতা সহ ভিন রাজ্যের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। তখন টাকার খুব প্রয়োজন হয়ে পড়লে পাল পরিবারের সদস্যরা অগ্রিম ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙিয়ে টাকা তুলে নেওয়ায় জন্য জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে যান।তখনই পোস্ট মাস্টারের কথা শুনে তাঁদের মাথায় হাত পড়ে যায়।

Advertisment

পাল পরিবারের সদস্যদের কথা অনুযায়ী, পোস্ট অফিস থেকে দেওয়া ফিক্সড ডিপোজিটের সমস্ত “নথি“ নিয়ে তাঁরা পোস্ট অফিসে টাকা তুলতে যান ।কিন্তু পোস্ট অফিসের একই পোস্ট মাস্টার বিদ্যুৎ সুর তখন সেই নথি হাতেনিয়ে দেখেই তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা শুরু করেদেন।সুরজিৎ পাল বলেন,’ওইদিন শুধু দুর্ব্যবহার করাই নয়,বিদ্যুৎ সুর আঙুল উঁচিয়ে আমাদের বলেদেন,“আমরা নাকি কোন টাকা পোস্ট অফিসে ফিক্সড ডিপোজিট’ই করিনি’। “যা করতে পারিস করে নিগে যা“, এই মন্তব্য করে বিদ্যুৎ সুর আমাদেরকে পোস্ট অফিষ থেকে এক প্রকার তাড়িয়ে দেন“।

সুরজিৎ জানান ,“এমন প্রতারণার বিহিত চেয়ে তাঁরা জামালপুর সাব পোস্ট অফিসের তদানিন্তন পোস্ট মাস্টার বিদ্যুৎ সুরকে আসামী করে বর্ধমান আদালতে মামলা রুজু করেন।একই সাথে জেলা পুলিশ সুপার সহ জেলা ও রাজ্যের প্রধান ডাক বিভাগ,এমনকি সিবিআই দফতরেও গোটা ঘটনা সবিস্তার লিখিত ভাবে জানান। কিন্তু কোন সুরাহা না মেলায় ন্যায় বিচার পেতে তাঁরা গত বছরের শেষের দিকে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন।সেই প্রতারণার মামালায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন"।

হাইকোর্টের সেই নির্দেশ মেনে সিআইডি জোরদার তদন্তে নামে।সিআইডি অফিসাররা জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে গিয়ে তদন্ত চালান।এছাড়াও হৃদয় রঞ্জন মাইতি সহ একাধীক পোস্টাল এজেন্ট কে একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ সারে সিআইডি।এসবের মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট বিদ্যুৎ সুরের জামিনের আবেদনও খারিজ করে দেয়। পোস্ট অফিসের আর্থিক প্রতারণা মামলায় সিআইডি গত ২৯ জুলাই প্রথম জালে পোরে জামালপুর পোস্ট অফিসের পোস্টাল এজেন্ট হৃদয় রঞ্জন মাইতিকে।

পোস্ট অফিসের অদূরে বিশ্বাস পাড়ায় হৃদয় মাইতির বাড়ি। তাকে হেপাজতে নিয়ে সিআইডি মূল অভিযুক্ত বিদ্যুৎ সুরের নাগাল পাওয়ার প্রচেষ্টা চালায় । অবশেষে রবিবার সিআইডি বিদ্যুৎ সুরকে জালে পুরতে সক্ষম হয়েছে।

সিআইডি-র এক অফিসারে কথায় জানা গিয়েছে,জামালপুর পোস্ট অফিসে সঞ্চয়ের টাকা জমা করে নিয়ে আমানত কারীদের ’পাস বই ’ ও অন্য নথি পোস্ট অফিস থেকে দেওয়া হয়েছিল।ওই নথিতে থাকা হাতের লেখার সঙ্গে পোস্টাল এজেন্ট হৃদয় রঞ্জন মাইতির হাতের লেখা এক বলে হ্যান্ড রাইটিং টেস্টে ধরা পড়েছে। এর থেকেই প্রতারণা কাণ্ডে হৃদয় রঞ্জন মাইতির যোগ স্পষ্ট হয়ে যায়।

তার পরেই তাকে গ্রেপ্তার করে হেপাজতে নোওয়া হয়। হৃদয় রঞ্জন মাইতিকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েপ্রতারণা কাণ্ডে বিদ্যুৎ সুরের কীর্তিকলাপের সবিস্তার তথ্য মেলে।বিদ্যুৎ সুরকে সোমবার বর্ধমান আদালতে পেশ করে সিআইডি হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে বলে জানা গিয়েছে।

পায়ের তলায় জাতীয় পতাকা! কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে সোচ্চার শুভেন্দু অধিকারী

 

burdwan post office Scam