প্রকাশচিক বরাইক। চা বাগানের শ্রমিক নেতাকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘোষণা অবিশ্বাস্য ঠেকেছে ওই চা শ্রমিকের কাছেও। এখন তিনি আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি।
২০০৪-এশিলিগুড়ির সূর্য সেন কলেজ থেকে স্নাতক। তার আগে ওয়ার্কার্স হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পাশ কালচিনি হিন্দি হাইস্কুল থেকে। স্নাতক হয়েই চা বাগানের কাজে যোগ দেন বরাইক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে প্রকাশচিক বরাইক বলেন, 'দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এই ঘোষণা আমার কাছে একেবারে অবিশ্বাস্য। ভাবতেই পারছি না। এই দলেই এটা সম্ভব।' তিনি বলেন, 'বাবাও ছিলেন চা বাগানের কর্মী। শ্রমিক নেতা ছিলেন। কংগ্রেস করতেন। তারপরে তৃণমূল কংগ্রেস। আমি কলেজ জীবনে ছাত্র রাজনীতি করেছি। ২০০৪ সালে বাগানে শ্রমিকের কাজে যোগ দিয়েছি। তারপর চা বাগানে ট্রেড ইউনিয়ন করেছি।'
আরও পড়ুন- LIVE- কার দখলে গ্রাম বাংলা? তৃণমূলের টেক্কা, নাকি এগিয়ে বিরোধীরা? শুরু গণনা
সংসদীয় রাজনীতিতে বরাইকের অভিজ্ঞতা বলতে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫ বছরের সদস্য থাকা। প্রকাশচিক বলেন, '২০১৮ সালে কুমারগ্রাম এনকেএস গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য নির্বাচিত হই। একজন সাধারণ সদস্য হিসাবেই ছিলাম। ২০১৯-এ আলিপুরদুয়ারে লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করতে পারিনি আমরা। ২১ জুন ২০২০ আমাকে দিদি জেলা কো-অর্ডিনেটর করে। ২০২১ -এ কুমারগ্রাম বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর ইলেকশন এজেন্টের কাজ করেছি। ১৬ অগাস্ট ২০২১ আমাকে জেলা সভাপতি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরসভা নির্বাচনে ফালাকাটা ও আলিপুরদুয়ারে তৃণমূল জয়ী হয়। এই জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও অঘটন ঘটেনি। চা বাগানকে কেন্দ্র করে সংগঠনের দায়বদ্ধতা অনুযায়ী কাজ করি।'
রাজ্যসভার প্রার্থী হিসবে আপনার নাম ঘোষণার পর কি মনে হচ্ছিল? বরাইক বলেন, 'আমার জন্য অনেক বড় খুশির খবর। এটা অবিশ্বাস্য। এটা একমাত্র আমাদের দলেই হতে পারে। একটা গ্রামের চা বাগানের একটা ছেলেকে এরকম জায়গা দেওয়া সত্যি অভাবনীয়। আমার পরিবারে রয়েছেন মা, স্ত্রী ও ১১ বছরের ছেলে। এই ঘোষণায় আমার পরিবারের সদস্যরা খুব খুশি।'
রাজ্যসভায় প্রবেশ করে কী দায়িত্ব পালন করেবন? ৪৩ বছরের প্রকাশচিক বরাইক বলেন, 'আমার লড়াই চা বাগান নিয়ে। শ্রমিকদের নিয়ে। এই কথাগুলিই সংসদে তুলব। অনেক বিষয় আছে যেটা আমি পার্লামেন্টে বলব।' 'এখনও চা বাগানে যান বরাইক। একজন চা শ্রমিক হিসাবেই আছি।' জানিয়ে দেন চা বাগানের শ্রমিক নেতা।