নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের ওপর ভরসা করেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করেছিলেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে সেই জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা প্রলয় পাল। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এই বিজেপি নেতা রাজনীতি ছাড়তে চলেছেন বলে জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে। প্রশ্ন উঠেছে কি এমন হল নন্দীগ্রামের বিজেপির হাল ধরা নেতা এভাবে দল ছাড়তে চলেছেন। তার বিজেপি ছাড়ার ঘোষণায় তোলপাড় পূর্ব মেদিনীপুর।
রাজনীতি ছাড়তে চলেছেন? একদা দাপুটে বিজেপি নেতা প্রলয় পালের জবাব, 'ঠিকই শুনেছেন। রাজনীতির প্রতি ঘেন্না ধরে গিয়েছে।' তাহলে কি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন? না এক্ষেত্রে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তিনি। খোলসা করেননি আগামী দিনে তিনি কী করতে চলেছেন। তবে রাজনীতি করতে গিয়ে যে মানসিক ভাবে বড় ধাক্কা খেয়েছেন তাঁর ধরা গলাতে স্পষ্ট করতে চাইছেন প্রলয় পাল।
আদ্যোপান্ত রাজনীতির পরিবারের সদস্য বছর ৪৪-এর প্রলয় পাল। তাঁর বাবা চিত্তরঞ্জন পাল টানা দীর্ঘ বছর ধরে পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। প্রলয় সক্রিয়ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসই করতেন। কিন্তু ২০১১-এ রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ওই বছরই বিজেপিতে চলে যান প্রলয়। বিরুলিয়া বাজারে বিজেপির দফতর খুলে বসেন তিনি। ধীরে ধীরে নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকে গেরুয়া শিবিরকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করেন তিনি। অল্প সময়ের মধ্যেই এলাকায় বিজেপির জনপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়ে যান প্রলয়।
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিলেও নন্দীগ্রাম ২-এর দায়িত্ব প্রলয়ের ওপরেই বর্তায়। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে দিন-রাত এক করে দলের দায়িত্ব সামলেছেন প্রলয় পাল। নন্দীগ্রামে কান পাতলেই শোনা যায়, ওই নির্বাচনে শুভেন্দুর জয়ের অন্যতম ভূমিকায় ছিলেন প্রলয়। সেই প্রলয় দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করতেই দলের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি দলে গুরুত্ব হারিয়েছেন প্রলয়?
পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরবেন কিনা সে বিষয়টা এখনও স্পষ্ট করেননি তিনি। তবে রাজনীতি যে তিনি একেবারেই পছন্দ করছেন না সেকথা জানিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রলয় বিজেপি ছাড়লে নন্দীগ্রামে তা দলের পক্ষে বড় ধাক্কা। একসময় বিতর্ক ছিল ২০২১-এর নির্বাচনের আগে তৃণমূলের হয়ে কাজ করার প্রস্তাবও পেয়েছিলেন প্রলয়।
আরও পড়ুন- হোস্টেল যেন বেনিয়মের আখড়া! ছাত্র মৃত্যুর পর বিরাট হইচই, অবস্থা আদৌ বদলাবে?
তখন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় ও প্রলয় পালের অডিও কল ভাইরাল হয়েছিল। এখন কী এমন ঘটল রাজনীতি করতে ঘেন্না লাগছে প্রলয়ের? দলের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে কি ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন তিনি? নাকি তথাকথিত দর কষাকষি? এই সব প্রশ্নেই তোলপাড় বিজেপির অন্দরমহল।