শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার মুখে অবস্থান বিক্ষোভ 'স্থানান্তরিত' করলেন আন্দোলনকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা। বুধবার দুপুর থেকে বেতন কাঠামো সংশোধনের দাবিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাসভবন অভিযানের কর্মসূচি গ্রহণ করে পথে নামেন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বাধীন শিক্ষকরা। কিন্তু, পুলিশি বাধার মুখে বাঘাযতীনে পথ আটকে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এতে ভীষণ সমস্যায় পড়েন পথ চলতি সাধারণ মানুষ। বাড়তে থাকে চাপ। এরপরই দ্রুত সমাধান সূত্র খুঁজতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর বাসভবনে আন্দোলনকারীদের তিন প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠান। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর সেই বৈঠকেও মেলেনি সমাধান সূত্র। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, রাস্তা আটকে মানুষের সমস্যা করে আন্দোলন করা অনুচিত। রাস্তা থেকে অবস্থান তুলে নেওয়ার কড়া বার্তাও দেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপরই অবস্থান স্থলের পার্শ্ববর্তী সি ব্লকের মাঠে অবস্থান 'স্থানান্তরিত' করার সিদ্ধান্ত নেন আন্দোলনকারীরা।
এই আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সংগঠন উস্থি ইউনাইটেডের রাজ্য সহ সম্পাদক পৃথা বিশ্বাস জানিয়েছেন, 'আমাদের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। পার্থবাবু আমাদের রাস্তা থেকে অবস্থান সরিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তাঁর কথায় বেতন পরিকাঠামো সংশোধনের কোনো ইতিবাচক প্রতিশ্রুতি পাইনি। তাই অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই। তিনি আরও বলেন, বেতন কাঠামো বদলের পর সমান হারে বেতন বৃদ্ধি হয়নি। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, যিনি সাত বছর আগে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক হয়েছেন তিনি যা বেতন পাচ্ছেন তার সমান বেতন পাচ্ছেন সদ্য চাকরিতে যোগ দেওয়া শিক্ষকরা। বেতন বেড়েছে মাত্র ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা।
আরও পড়ুন: পার্থর বাড়ি ঘেরাওয়ের চেষ্টা প্রাথমিক শিক্ষকদের, পুলিশি প্রতিরোধে অবস্থান বিক্ষোভ
অন্যদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ''এই ধরনের আন্দোলন নিন্দনীয়। এই আন্দোলনকে সমর্থন করা যায় না। যাঁরা শিক্ষা দেন, তাঁরাই যদি রাস্তায় বসে পড়েন, মানুষের অসুবিধার কারণ হয়ে ওঠেন, তাহলে সেটা সঠিক কর্মসূচী নয়। এই আন্দোলনে পথচলতি মানুষদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মমতা সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভিন্ন পদক্ষেপ করছে। সরকারের পক্ষে যা বেতন দেওয়া সম্ভব ছিল তাই করা হয়েছে। ত্রুটি থাকলে আমরা অর্থ দফতরের সঙ্গে কথা বলব। কিন্তু সাধারণ মানুষের অসুবিধা করে কোনো আন্দোলন করাটা সঠিক পথ নয়। যদি কোনো ক্রটি থাকে তা নিয়ে আগে আলোচনা করা উচিত ছিল।''
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই রাজ্যের অধ্যাপক এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর দিনই প্রাথমিক শিক্ষকদের এই আন্দোলন বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।