হাওড়ার জোম্যাটোকর্মীদের ধর্মঘট কাণ্ডে নয়া মোড়। ধর্মঘট প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোম্যাটো প্রতিষ্ঠাতা নিজেই। সংস্থার মালিক দীপিন্দ্র গোয়েল নিজেই এবার সংস্থার সমস্ত কর্মীদের ইমেল করে জানালেন, হাওড়ার জোম্যাটো কর্মীদের বিক্ষোভ আসলে খাবার অথবা ধর্মীয় বিশ্বাস সংক্রান্ত নয়, বরং বেতন সংক্রান্ত।
Advertisment
গত ৫ অগাস্ট থেকে ধর্মঘট করছিলেন হাওড়ার জোম্যাটো ডেলিভারি একজিকিউটিভরা। রবিবার থেকে দেশের সমস্ত কোনায় খবর ছড়িয়ে যায়, গরু এবং শুয়োরের মাংস ডেলিভারি দেওয়া নিয়ে জোম্যাটোর ‘দাদাগিরি’র বিরুদ্ধে এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে বসছেন হাওড়া-সালকিয়া জোম্যাটোর ডেলিভারি কর্মীরা।
কর্মীদের উদ্দেশে লেখা ইমেলে জোম্যাটো প্রতিষ্ঠাতা দীপিন্দ্র গোয়েল উল্লেখ করেছেন, "এই বিক্ষোভ শুধুমাত্র হাওড়াতেই হয়েছে। বিক্ষোভের মূল কারণ রেট কার্ড সংশোধন, যা আমরা নিয়মিত করে থাকি"।
জোম্যাটো মালিক দীপিন্দ্র গোয়েল
চিঠিতে তিনি আরো বলেছেন, "এরকম পরিস্থিতি খুব কমই এসেছে, যখন কর্মীরা রেট কার্ড সংশোধনের বিষয়টি না বুঝেই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এক্ষেত্রে জোম্যাটো কর্মীরা সংস্থার স্থানীয় একজিকিউটিভের শরণাপন্ন না হয়ে রাজনইতিক নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন এবং ঘটনাটির সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
"আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত, কারণ আমাদের ডেটাবেস খতিয়ে দেখেছি বিগত তিন মাসে গোটা এলাকায় কোনও বাড়িতেই শূকরের মাংস অর্ডার দেওয়া হয়নি। মাত্র একজন ব্যক্তিই গোরুর মাংস অর্ডার দেওয়া হয়েছিল, তাও অর্ডার দেওয়ার পরেই তা বাতিল করেন ওই ব্যক্তিই। তাই বিক্ষোভের সঙ্গে ধর্মীয় বিশ্বাস বা খাবারের কোনও সম্পর্কই নেই।
রবিবার থেকেই হাওড়ার জোম্যাটো কর্মীদের ধর্মঘটের খবর শিরোনামে উঠে আসে। কর্মীদের মূল অভিযোগ ছিল, জোম্যাটো সংস্থা ডেলিভারি কর্মীদের দিয়ে গোমাংস এবং শুয়োরের মাংস গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে বাধ্য করছে। উল্লেখ্য, যাঁরা প্রতিবাদ করছেন তাঁদের মধ্যে হিন্দু মুসলিম উভয় ধর্মের কর্মীরাই আছেন। তাঁদের এটাই বক্তব্য যে না চাইলেও জোর করেই তাঁদের দিয়ে এই ডেলিভারি দেওয়ায় জোম্যাটো।
প্রতিবাদকারীদের একজন, মৌসিন আখতার, বলেন, “আমাদের অভিযোগগুলি শোনার পরিবর্তে, কোম্পানি আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গরুর মাংস এবং শুয়োরের মাংস সরবরাহ করতে বাধ্য করছে। হিন্দুদের যেমন গোমাংস ডেলিভারি দিতে সমস্যা হয়, তেমন মুসলিমদেরও শুয়োরের মাংস ডেলিভারি দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা আছে। আমরা এই খাবারগুলি দিতে রাজি নই, কিন্তু আমাদের জোর করা হচ্ছে খাবারগুলি দিতে। এমনকি কোম্পানি আমাদের টাকা দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। সেই কারণেই অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে নেমেছি আমরা।”