Advertisment

গরু বা শূকরের মাংস প্রধান কারণ নয়, হাওড়ার জোম্যাটো ধর্মঘটের পিছনে আসলে বেতন বিক্ষোভ

"আমাদের ছেলেরা মূলত বেতন হ্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। তবে গো মাংস এবং শূকরের মাংস ডেলিভারি করার বিষয়টিও আছে এর সঙ্গে। কিন্তু হঠাৎ করেই মিডিয়া আমাদের মাংস ডেলিভারি দেওয়ার ইস্যুকেই হাইলাইট করছে"।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

জোম্যাটো বিতর্কে নয়া মোড়

গো-মাংস এবং শূকরের মাংস ডেলিভারি দেওয়াকে কেন্দ্র করে জোম্যাটোর ডেলিভারি কর্মীদের ধর্মঘটে এবার নয়া মোড়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে প্রতিবাদী ডেলিভারি বয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই সামনে এল অন্য তথ্য। জানা যাচ্ছে, তাঁদের বিক্ষোভের মূল কারণ কম বেতন বা আয়। গো মাংস বা শূকরের মাংসের বিষয়টিও এর সঙ্গে রয়েছে, তবে সংবাদমাধ্যমে যেভাবে তা মুখ্য বিষয় হিসাবে উঠে এসেছে সেটি সঠিক নয়। এই দুই ধরনের মাংস ডেলিভারি দেওয়া এবং কম বেতনের বিরোধিতা করে হাওড়া-সালকিয়ার জোম্যাটোর ডেলিভারিকর্মীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের যে ডাক দেন। উল্লেখযোগ্যভাবে সেই মঞ্চেই দেখা যায় বিজেপির স্থানীয় নেতা সঞ্জয় কুমার শুক্লাকেও। তবে ডেলিভারিকর্মীরা এই ধর্মঘটে কোনও রাজনৈতিক রং লাগাতে নারাজ। এ প্রসঙ্গে প্রায় দু'বছর ধরে জোম্যাটোতে কর্মরত সুজিত কুমার গুপ্ত বলেন, "আমাদের ছেলেরা মূলত বেতন হ্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। তবে গো মাংস এবং শূকরের মাংস ডেলিভারি করার বিষয়টিও আছে এর সঙ্গে। কিন্তু হঠাৎ করেই মিডিয়া আমাদের মাংস ডেলিভারি দেওয়ার ইস্যুকেই হাইলাইট করছে"।

Advertisment

আরও পড়ুন- হাওড়ার প্রবীণদের পাশে পুলিশ, চালু ‘শ্রদ্ধা’ প্রকল্প

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে জোম্যাটোর ডেলিভারি এক্সিকিউটিদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, ৫ অগাস্ট শুরু হওয়া তাঁদের এই প্রতিবাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল মাসিক বেতন হ্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। কিন্তু জাতীয় স্তরে যেভাবে ইস্যুটির উপর রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, তাতেই ক্ষুদ্ধ জোম্যাটোর ধর্মঘটীরা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বিজেপির স্থানীয় নেতা সঞ্জয় কুমার শুক্লা বলেন, "আমি বিজেপি নেতা হিসেবে প্রতিবাদীদের পাশে গিয়ে দাঁড়াইনি। সাধারণ নাগরিক হিসেবেই পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আমরা কখনোই চায়নি ইস্যুটিকে নিয়ে রাজনীতি করতে। কিন্তু কীভাবে একজন হিন্দুকে দিয়ে গো মাংস এবং মুসলিমকে দিয়ে শূকরের মাংস বিক্রি করাচ্ছে? এটা তো একজন মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে সরাসরি আঘাত করছে"।

আরও পড়ুন- পথ সচেতনতা বাড়াতে হাওড়ায় প্রতিযোগিতা, নতুন ভাবনা দিলেই মিলবে পুরস্কার

Advertisment

অন্যদিকে, জোম্যাটোর এই প্রতিবাদকে সমর্থন করায় বিতর্কে জড়ান মমতা সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি উন্নয়ন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "কোনও সংস্থাই কর্মীদের ধর্মের বিরুদ্ধে কোনও কিছু করতে জোর করতে পারে না। আমি নিজে এই বিষয়টি দেখছি"। তবে বেশির ভাগ ডেলিভারি এক্সজিকিউটিভের কথায়, তাঁদের মূল অভিযোগ ছিল বেতন হ্রাস। বেতন হ্রাসের দিকটি উল্লেখ করে জোম্যাটোতে কর্মরত সুজিতবাবু বলেন, "আমি দু বছর আগে এখানে যোগ দেই। তখন প্রত্যেকটা ডেলিভারির জন্য ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত পেতাম। আর এখন সেখানে পাই ২৫ টাকা। আগে যেখানে মাসে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা রোজগার হত, এখন সেখানে সারা দিন রাত কাজ করলে পাই মাত্র ১৫ হাজার টাকা"।

আরও পড়ুন- ২০০ বছরের পুরানো ছাপাখানার খোঁজ মিলল হাওড়ায়

জোম্যাটো কর্মীদের এই প্রতিবাদকে নেতৃত্ব দেওয়া মৌসিন আখতার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "আমরা আমাদের বেতন হ্রাস নিয়ে অভিযোগ জানানোর পর আমাদের বলা হয়, "না পোষালে ছেড়ে যান"। তিনি আরও বলেন, "দু'সপ্তাহ আগে আমাদের টিম লিডার বলেন যে কোম্পানি কয়েকটি রেস্তোরাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যারা গো-মাংসের নানা পদ প্রস্তুত করে। এরপরেই হিন্দু ডেলিভারিকর্মীরা এর বিরুদ্ধে সুর চড়ান। পাশাপাশি মুসলিম কর্মীরাও শূকরের মাংস বহন করতে অসম্মতত হন। আমরা বলেছিলাম, যা আমাদের ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করে তেমন কাজ করতে পারবো না"। যদিও জোম্যাটোর পক্ষ থেকে এই বিষয়ে নতুন করে কিছু জানানো হয়নি। আগামী ১৬ই অগাস্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কথা বলবে বলে জানিয়ে রেখেছে।

হাওড়া রাজ্যের সব খবর পড়ুন এখানে

Howrah West Bengal
Advertisment