দুর্গা পুজোর অনুদানের টাকা বিনোদনে খরচ করা যাবে না। টাকা খরচের সম্পূর্ণ হিসাব রাজ্য সরকারকে হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে আদালতে। সরকারকে টাকা খরচের সব হিসাব বুঝিয়ে দেবে পুজো কমিটিগুলো। দুর্গা পুজোয় পঞ্চাশ হাজার টাকা অনুদান সংক্রান্ত রায়ে এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে, অনুদান বন্ধের নির্দেশ না দেওয়ায় স্বস্তিতে রাজ্য সরকার।
পুজোর অনুদানের টাকা কীভাবে খরচ করবে ক্লাব-কমিটিগুলো এ দিন তারও গাইড লাইন বেঁধে দিয়েছে আদালত। নির্দেশ হাইকোর্ট বলেছেন, মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিনতে অনুদানের টাকার ৭৫ শতাংশ খরচ করতে হবে। অবশিষ্ট অংশ পুলিশের মাধ্যমে জনসংযোগমূলক কাজে খরচ হবে। বিল-ভাউচার সমেত সব হিসাব সরকারকে বুঝিয়ে দেবে পুজো কমিটিগুলো।
বিভ্রান্তি দূর করতে পুলিশকে উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। রায়ে উল্লেখ, আদালত শুক্রবার অনুদান মামলায় যে নির্দেশ দিল তা তালিকা করে লিফলেট ছাপিয়ে পুজো কমিটিগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
আরও পড়ুন- ‘ঘরে বসে আবার দুর্গা পুজো হয় নাকি?’ উৎসব বন্ধের বিরুদ্ধে মমতা
দুর্গা পুজোয় এবার প্রত্যেকটি ক্লাব-কমিটিকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা হয়। মামলা করেন সিটু নেতা সৌরভ দত্ত। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারকে হাইকোর্টের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল।
আদালত রাজ্যের থেকে জানতে চায়, সরকার কি শুধু দুর্গা পুজোতেই অনুদান দেয়? নাকি অন্য উৎসবেও অনুদান দেওয়া হয়? ঈদেও কি অনুদান দেওয়া হয়েছিল? রাজ্য সরকার কি যেভাবে ইচ্ছা টাকা দিতে পারেন? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এই ভেদাভেদ কি করা যায়?
আরও পড়ুন- পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জমায়েতের ছাড়পত্র মমতার
হাইকোর্ট জানিয়েছিল, মাস্ক, স্যানিটাইজার কেনার জন্য যদি অনুদান হয় তবে তা সরকার নিজেই কেন্দ্রীয়ভাবে কিনে দিতে পারত। এতে খরচ অনেক কম হত। এছাড়াও, ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্লু-প্রিন্ট ও সুরক্ষাবিধির পদক্ষেপের কথা রাজ্যের থেকে জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতিরা। এই অনুদান দেওয়ার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কিনাও তাও খতিয়ে দেখার কথা বলা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য করোনা আবহেও আগাগোড়াই পুজো বন্ধের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবারই তিনি বলেছিলেন, 'রমজান, ঈদ,গণেশ পুজো বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে হয়েছিল।। কিন্তু, মা দুর্গার বড় সংসার। তাই পুজো ওইটুকুনি জায়গার মধ্যে করা অসম্ভব। দুর্গা পুজো বারোয়ারি। বেশিরভাগ পুজোই করে ক্লাব-কমিটি। বাড়ির পুজো খুব কম হয়। তাই অন্যসব রাজ্যের মতো বাংলায় পুরোপুরি পুজো বন্ধ করে দেওয়া অসম্ভব ব্যাপার। আমরা (রাজ্য সরকার) পুজো বন্ধ করতে চাই না, এটা ঠিক নয়।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন