দফায় দফায় আন্দোলন করে আসছেন এসএসসি-তে বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রার্থীরা। ২০১৯-এ প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন, তারপর ২০২১-এ সল্টলেকে সেন্ট্রাল পার্কের পাশে, এবার আন্দোলন চলছে মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ও রেড রোডের মুখে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির কাছে। আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি চাই। স্বাগত জানালেন আদালতের রায়কে। পাশাপাশি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অবস্থান চলবে বলেও এদিন ফের জানিয়ে দিলেন তাঁরা।
মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সিবিআই দফতরে হাজিরা দেবেন কিনা সেটা নির্ভর করছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের সিদ্ধান্তের উপর। কিন্তু, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি ধরতে পার্থবাবু যে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন, সেই কমিটির চার সদস্য শান্তি প্রসাদ সিনহা, অলোক সরকার, সুকান্ত আচার্য ও প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন সিজিও-তে হাজির হয়েছেন।
রাজ্যের নানাপ্রান্ত থেকে আন্দোলনকারীরা শহরের দুই জায়গায় ধরনায় বসে রয়েছেন। আদালতের রায়ে খুশি এসএসসির কর্মপ্রার্থীরা। মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্বেও তাঁরা চাকরি পায়নি বলেই তাঁরা ধরনায় সামিল হয়েছেন। এদিকে এদিন আদালত জানিয়ে দেয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬টার মধ্যে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজির হতে হবে। মন্ত্রী এর বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন। পাশাপাশি এসএসসির পাঁচ উপাচেষ্টাকেও ৪টের মধ্যে সিবিআই দফতরে হাজির হতে নির্দেশ দেয় আদালত। ইতিমধ্যে শান্তিপ্রসাদ সিনহা নিজাম প্যালেসে পৌঁছে গিয়েছেন।
২১৪দিন টানা ধরনায় বসা মতিউর রহমান ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির অবসান চেয়ে এসেছি আমরা। আইন আইনের পথে চলুক। যাঁরা অপরাধ করেছে, আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। যারা দোষী তাদের শাস্তি হোক। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে বঞ্চিত হয়ে পথে বসে আছি। মুখ্যমন্ত্রী ঈদের দিন আশ্বাস দিয়েছেন নিয়োগের। নিয়োগও চাই, শাস্তিও চাই।'
রহমানের দাবি, 'এর আগে ২০১৯-এ মুখ্যমন্ত্রী ৫জনের প্রতিনিধি দলের কথা বলেছিলেন কথা বলার জন্য। আমরা পাঁচজনের কমিটি গঠন করেছিলাম। তালিকায় পিছনের দিকে নাম থাকা সত্বেও ওই পাঁচজনকে চাকরি দিয়ে সরকার কিনে নিয়েছিল। আজ যে দুর্নীতি প্রকাশ হচ্ছে তা আমরা কমিশনের কাছে জমা দিয়েছি। কালীঘাটেও দিয়ে এসেছি।' রহমানের মতো অন্য আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, '২০১৪ থেকে ৬টা বছর জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে। আর যেন নষ্ট না হয়। অবিলম্বে নিয়োগের দাবি তুলেছেন তাঁরা।'
এসএসসি শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার প্রার্থীরাও পৃথকভাবে ৪১দিন ধরে ধরনায় বসেছে রোড রোডের মুখে। মহম্মদ সলমন শেখ বলেন, 'যতক্ষণ না নিয়োগ করা হচ্ছে বিশ্বাস করা যায় না। ওরা দুর্নীতি করেছে বলেই আমরা বসে আছি। আমাদের কারও বাবার নাম পরেশ অধিকারী নয়, মন্ত্রীর ছেলে না, প্রভাবশালীও নয়। তাহলে চাকরি পেয়ে যেতাম। দুর্নীতিগ্রস্তদের আইনি পথে শাস্তি হওয়া উচিত। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্যই প্রাপ্য অধিকার ফিরে পেতে চলেছি।' নিয়োগ না হলে ধরনা প্রত্যাহার নয়, জানিয়ে দিয়েছেল সলমন শেখ।
আরও পড়ুন- বার বার আশ্বাসে বিশ্বাস তলানিতে, এবার ধরনা মঞ্চেই নোটিফিকেশনের দাবি SSC-র আন্দোলনকারীদের