Murshidabad violence: ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদ। ইতিমধ্যেই হিংসার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। গোটা ঘটনায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিতে সওয়াল তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। অশান্ত সামশেরগঞ্জে এই মুহূর্তে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজিপি রাজীব কুমার। থানা থেকে বসেই তিনি গোটা পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন তিনি। মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার।
এদিকে মুর্শিদাবাদ কাণ্ডের জেরে কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর। যেখানে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে, বিশেষ করে মুর্শিদাবাদ, মালদা, নদীয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আফস্পা জারির আহ্বান জানানো হয়েছে। চিঠিতে বাংলায় হিন্দুদের পরিস্থিতির সঙ্গে ১৯৯০ সালে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের তুলনা টেনেছেন বিজেপি সাংসদ।
অশান্তির আশঙ্কায় থমথমে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সামশেরগঞ্জ এবং সুতির মোট ন’টি স্পর্শকাতর এলাকায় শনিবার রাত ৯টা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে। রাতে একাধিক সংবেদনশীল এলাকায় টহল দেয় বাহিনী। পাশাপাশি সকাল থেকে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ।
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ এবং হিংসাপরবর্তী অশান্তিতে এখনও থমথমে মুর্শিদাবাদ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে শনিবার রাত থেকে জেলার বেশ কিছু এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রাতভর তারা সুতি, সামসেরগঞ্জ থানা এলাকায় টহল দিয়েছে। গ্রামে গ্রামে ঘুরেছে পুলিশও। রাতভর তল্লাশি অভিযানে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
রবিবার সকাল থেকেও কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশ যৌথ রুটমার্চের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুর্শিদাবাদের স্পর্শকাতর এলাকায়। রয়েছে সব সংগঠনকে নিয়ে শান্তি বৈঠকের ভাবনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত জঙ্গিপুর পুলিশ জেলায় হিংসার ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদে এখনও পর্যন্ত মোট গ্রেফতারির সংখ্যা ১৩৮। এদিকে এই হিংসার ঘটনায় মোট তিন জন মারা গিয়েছে। আজ, রবিবার সকাল থেকে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী অশান্তি উপদ্রুত এলাকাগুলিতে যৌথ ভাবে রুটমার্চ করছে। এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে।
স্থানীয় জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। রাতভর তল্লাশি চলছে, ধরপাকড় করেছে পুলিশ। তবে আমরা এই ধরপাকড় নিয়ে এসপিকে জানিয়েছি। আর মৃত্যুর ঘটনার নিন্দা জানাই আমরা। কোনও মৃত্যুই কাম্য নয়। শনিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদে এসেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। জেলা আধিকারিকদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। বিএসএফের সঙ্গেও হয় বৈঠক।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং ডিজিপি রাজীবের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করেন। এ ছাড়া, এডিজি সিদ্ধিনাথ, বিনীত গোয়েলরা মুর্শিদাবাদে রয়েছেন। আরও পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ঝাড়খণ্ড থেকে মুর্শিদাবাদে আসছে। সব মিলিয়ে মুর্শিদাবাদ এর পরিস্থিতিকে কঠোর হাতে মোকাবিলা করতে উঠে পড়ে নেমেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য সরকারের পুলিশ প্রশাসন।