২৫শে বৈশাখ রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীতে শান্তিনিকেতনে বহু রবীন্দ্র অনুরাগীর ভিড় জমে। অন্যতম মূল আকর্ষণ অবশ্যই রবীন্দ্র ভবন। কিন্তু এবার হতাশ হলেন বহু পর্যটক। গত দু'দিনের মত ২৫শে বৈশাখও বন্ধ রইল রবীন্দ্র ভবন। এছাড়াও প্রচণ্ড গরমের জেরে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠান সূচিও কাটছাট করা হয়েছে। বাতিল করা হয় সকালের বিশ্বভারতীর মাধবীবিতানের অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যার শাপমোচন নাট্যানুষ্ঠানটি।
Advertisment
কেন বন্ধ রবীন্দ্র ভবন?
দু'দিন আগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নোটিস জারি করে জানিয়েছিল যে, ৬ ও ৭ মে পর্যন্ত অনিবার্য কারণবশত রবীন্দ্রভবন বন্ধ থাকবে। কিন্তু ঠিক কী কারণে এই পদক্ষেপ তা জানানো হয়নি।
সূত্রের খবর, অমর্ত্য সেনের পৈতৃক ভিটে 'প্রতীচী'র জমি বিতর্কে উত্তাল শান্তিনিকেতন। 'প্রতীচীর' ১৩ ডেসিমেলের কিছু বেশি জমি নোবেলজয়ী অর্থনীতীবিদ জোর করে দখল করে রেখেছেন বলে বলে দাবি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। ওই জমি ছেড়ে না দিলে পদক্ষেপ করা হবে বলে অমর্ত্য সেনের বাড়ির দেওয়ালে নোটিস সেঁটেছিল বিশ্বভারতী। যার উপর অবশ্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এরপরই শান্তিনিকেতনে 'প্রতীচী'র সামনে অমর্ত্য সেনের সমর্থনে গত দু'দিন অবস্থান করেন বিশিষ্ট জনেরা। সেখানে মানুষজন এসে বক্তব্য তুলে ধরছেন। চলে বাউল গানও। ফলে পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 'অস্বাস্থ্যকর' পরিবেশে দর্শক রবীন্দ্র ভবনে ভিড় জমান এমনটা সম্ভবত চাননি বিশ্বভারতী। তাই গত দু'দিন রবীন্দ্র ভবন বন্ধ করে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিনই কেন বন্ধ রবীন্দ্র ভবন তার কোনও সদুত্তোর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে মেলেনি।
এ প্রসঙ্গে শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিক তথা পাঠভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, 'শান্তিনিকেতনের মূল আকর্ষণ তো রবীন্দ্র ভবন। তা বন্ধ রাখা খুবই গর্হিত কাজ। কিছু বলার নেই।' পাল্টা বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সামগ্রিক পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেই রবীন্দ্রভবন বন্ধ রাখা হয়েছে।' তাঁর দাবি, মাধবীবিতানের অনুষ্ঠান এবং শাপমোচন নাট্যানুষ্ঠান রবীন্দ্রমাসের যেকোনও একদিন অনুষ্ঠিত হবে।