Advertisment

Lok Sabha Polls-BJP: 'বাঙালরা ঝুলি উপুড় করে ভোট দিয়েছে BJP-কে', বিস্ফোরক দাবি তৃণমূল নেতার

Purba Bardhaman: এবারের লোকসভা ভোটে এরাজ্যে সার্বিকভাবে গতবারের চেয়ে বিজেপির ফল খারাপ হয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্য থেকে ১৮ সাংসদ পেয়েছিল বিজেপি তবে এবার এক দাক্কায় তা কমে গিয়ে ১২-য় নেমেছে। উল্টোদিকে, তৃণমূল গতবারের চেয়ে আসন সংখ্যা বেশ খানিকটা বাড়িয়েছে এবারের লোকসভা ভোটে।

IE Bangla Web Desk এবং Nilotpal Sil
New Update
rabindranath chatterjee says that people of East Bengal voted more for BJP in municipal areas

ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে বিস্ফোরক দাবি তৃণমূল নেতার।

BJP-TMC: পদ্ম ফুল চাষে সুনাম রয়েছে বাংলার। তবে সেই পদ্ম বাংলার চাষিরা মূলত গ্রামাঞ্চলের জলাশয়েই চাষ করে থাকেন। সেখানেই পদ্ম ফোটে। কিন্তু BJP নেতারা চেয়েছিলেন এবারের লোকসভা ভোটে বাংলার গ্রাম ও শহর, সর্বত্র তাঁদের পদ্ম ফোটাতে। কিন্ত তা আর হয়নি। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে 'BJP-র পদ্ম' গ্রামের তুলনায় ভাল ফুটেছে শহরে। আর গ্রামে রমরমিয়ে ফুটেছে তৃণমূলের 'ঘাস ফুল'। তারই দৌলতে জয়ের হাসি তৃণমূল হাসলেও শহর বিদ্ধ হয়েছে পদ্ম কাঁটায়। যদিও এই কাঁটাকে 'পদ্ম কাঁটা' বলে মানতে চাননি তৃণমূল নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, এই কাঁটা আসলে 'পূর্ব বঙ্গীয় কাঁটা'।

Advertisment

বাংলার ৪২ লোকসভা আসনের মধ্যে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনটি এবার ছিল নজরকাড়া। এই আসনে এবার মূল লড়াইটা ছিল BJP-র হেভিওয়েট প্রার্থী দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তৃণমূলের কীর্তি আজাদের। এই লোকসভার অধীনের রয়েছে বর্ধমান ও দুর্গাপুর পুরসভা। এই লোকসভার ১৮ লক্ষ ৫১ হাজার ৭৮০ জন ভোটারের মধ্যে ১৪ লক্ষ ৯৪ হাজার ৭৭৮ জন এবার ভোট দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে বর্ধমান পূর্ব লোকসভায় পদ্ম শিবিরের প্রার্থী অসীম সরকারের বিরুদ্ধে ভোটে লড়েছিলেন ঘাস ফুল শিবিরের চিকিৎসক প্রার্থী শর্মিলা সরকার। এই লোকসভা এলাকায় রয়েছে কাটোয়া, দাঁইহাট, কালনা ও মেমারি পুরসভা। বর্ধমান পূর্বের ১৮ লক্ষ ১ হাজার ৩৩৩ জন ভোটারের মধ্যে ১৪ লক্ষ ৯২ হাজার ৪৫৩ জন ভোটার ভোট দিয়েছিলেন। এই পাঁচটি পুরসভা ছাড়াও বোলপুর লোকসভার অধীন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে রয়েছে গুসকরা পুরসভা।

আরও পড়ুন- Eastern Railway: কল্পনাই করতে পারবেন না! ভ্রমণপিপাসুরা এখবরে খুশিতে ডগমগ হবেনই! অকল্পনীয় উদ্যোগ রেলের!

ভোটের ফলে পূর্ব বর্ধমানের দুটি লোকসভা আসনে ঘাস ফুল শিবিরের প্রার্থীরা লক্ষাধিক ভোটে জয়ী হয়েছেন ঠিকই। তবে ফলাফল খতিয়ে দেখা যাচ্ছে জেলার গ্রামীণ এলাকার ভোটাররা বহুলাংশেই ঘাস ফুল শিবিরের মান রক্ষা করেছেন। কিন্তু জেলার পুর এলাকাগুলিতে এবার পদ্ম কাঁটায় বিদ্ধ হয়েছে ঘাস ফুল শিবির। যা দেখে তৃণমূল শবিরও বেশ হতাশ।

আরও পড়ুন- Kolkata Metro: মেট্রোর যাত্রীদের জন্য বাম্পার খবর! ফাটাফাটি পরিষেবা রবিবারেও, জানুন বিশদে

ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করে পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূলের নেতারা দেখেছেন, বর্ধমান পুরসভার ৩৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯ টিতে পদ্ম ফুটেছে। কালনা পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের ১২ টিতে এবং কাটোয়া পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের ১৩ টিতে পদ্ম ফুটেছে।

আরও পড়ুন- Soham Chakraborty: রেস্তোরাঁ মালিককে পিটিয়ে বিরাট ফ্যাসাদে সোহম! বড় বিপদের আঁচ? হন্তদন্ত হয়ে ছুটলেন কোর্টে

কালনার তৃণমূল বিধায়ক ছাড়াও পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং দলের শহর সভাপতির ওয়ার্ডেও ফুটেছে পদ্ম। একইভাবে বিজেপি ভালো ফল করেছে কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডেও। কাটোয়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডটি পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের গড় হিসেবেই পরিচিত।

সেই ওয়ার্ডেও তৃণমূলকে ধরাশায়ী করেছে বিজেপি। এছাড়াও দাঁইহাট পুরসভার ১৪ টি ওয়ার্ডের ৯ টিতে এবং মেমারি পুরসভার ১৬ টি ওয়ার্ডের ৩ টিতে বিজেপি জিতেছে। দাঁইহাট পুরসভাতেও তৃণমূলের বলিষ্ঠ পদাধিকারীদের ওয়ার্ডে পদ্মের রমরমা ঘটেছে। বাদ যায়নি মেমারি পুরসভাও। মেমারি শহর তৃণমূলের সভাপতি স্বপন ঘোষাল ও সহ-সভাপতি আশিস ঘোষ দস্তিদাররা যে ২২৬ নম্বর বুথে ভোট দেন সেই বুথেও পদ্মের জয়জয়কার।

আরও পড়ুন- Puri-Jagannath temple: অভাবনীয় পদক্ষেপ! পুন্যার্থীদের জন্য অকল্পনীয় উদ্যোগ! পুরীর জগন্নাথ মন্দির নিয়ে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত

এমনকী পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন বিষয়ী তাঁর খাস তালুক ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ঘাস ফুলের বিজয়রথ ধরে রাখতে পারেননি। একুশের বিধানসভা ভোটের পর এবারের লোকসভা ভোটেও চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডে পদ্ম কাঁটা জিইয়ে রয়েছে। এইসব পুরসভা ছাড়াও তৃণমূলের গড় হিসাবে পরিচিত গুসকরা পুরসভার ১৬ টি ওয়ার্ডেরও ৭ টিতে জিতেছে বিজেপি। দুর্গাপুর পুরসভার ফলাফল আরও চমকে দেওয়ার মতো। এই পুরসভার ৪৩ টি ওয়ার্ডের ৩৩ টিতেই বিজেপি এগিয়েছে।

জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ ব্যাপারে বিজেপি নেতাদের কোনও কেরামতি দেখছেন না। এমনকী বিজেপির সংগঠন গ্রামীণ এলাকার চেয়ে শহরে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে বলেও তিনি মনে করছেন না। রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পূর্ব বঙ্গ থেকে আসা মানুষজন গ্রামের চাইতে শহর এলাকায় বেশি সংখ্যায় বসবাস করেন। লোকসভা ভোটে তাদের কাছে ধর্মীয় বিষয়টিই বড় ইস্যু হয়ে
যায়। এবারের লোকসভা ভোটেও সেটাই হয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের চেয়েও ধর্মীয় ইস্যু পূর্ব বঙ্গ থেকে আসা মানুষজনের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। তাই শুধু পূর্ব বর্ধমান জেলা নয়, রাজ্যের বহু পুরসভা এলাকায় ভোটের ফলে এমনটাই দেখা গিয়েছে।"

আরও পড়ুন- Kolkata Weather Today: জ্বালাপোড়া গরমে সেদ্ধ দক্ষিণবঙ্গ! আর দিন পাঁচেকেও আদৌ ঢুকবে বর্ষা? জানুন লেটেস্ট আপডেট

তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতির এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন জেলা বিজেপি সভাপতি অভিজিৎ তা। তিনি বলেন, "পুরসভা এলাকায় তৃণমূলের সিন্ডিকেটরাজ, তোলাবাজির বহর অনেক বেশি। কেউ নতুন বাড়ি তৈরি করুক বা বাড়ি মেরামত, তৃণমূলের তোলাবাজ সিন্ডিকেটবাজদের দাবি পূরণ না করে কিছুই করা যায় না । এছাড়াও চোখ রাঙানি, হুমকি শাসানিতো রয়েছে । পুরসভা এলাকার বাসিন্দারা এসবেরই জবাব ইভিএমে দিয়েছেন।"

তিনি আরও বলেন, "গ্রামের মানুষ নিরীহ, গরিব। তাঁরা অত রাজনীতি সচেতন নন। ওই সব নিরীহ মানুষকে ভয় দেখিয়ে,ভুল বুঝিয়ে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ও ১০০ দিনে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তৃণমূল তাদের ভোট কব্জা করে। শহর এলাকার শিক্ষিত ও রাজনৈতিক সচেতন মানুষকে তৃণমূল এভাবে কব্জা করতে পারেনি। তাই বর্ধমানের মতো রাজ্যের বহু পুরসভা এলাকায় পদ্ম কাঁটায় বিদ্ধ হয়েছে তৃণমূল।"

tmc bjp burdwan Purba Bardhaman loksabha election 2024
Advertisment