তাঁর এখন শিয়রে শমন। এই পরিস্থিতিতে কোন পথে হাঁটতে পারেন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার? বিশিষ্ট আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়ের মতে, গ্রেফতারির আপাত সম্ভাবনা থাকলেও রাজীব এখনও বিপদসীমার বাইরেই রয়েছেন। তাঁর কথায়, রাজীব কুমারের সামনে আপাতত একটিই প্রধান পথ রয়েছে - যে কোনও নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৩৮ ধারা অনুযায়ী আগাম জামিনের জন্য আবেদন করা। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই আবেদন মঞ্জুর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, আজই জমা পড়বে আবেদন।
যদি সেই আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়, তবে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েও আগাম জামিনের আবেদন করতে পারেন রাজীব। হাইকোর্টও যদি কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে, সেক্ষেত্রে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। আইনজীবীদের মতে, কলকাতা হাইকোর্টে আপাতত বেসরকারি আইনজীবীদের ধর্মঘট চললেও রাজীব কুমারের তার ফলে কোনও সমস্যা হবে না। তিনি নিজেই আবেদন করতে পারেন, বা তাঁর হয়ে সরকারি কৌঁসুলি আবেদন করবেন।
আরও পড়ুন: বেকায়দায় রাজীব কুমার, গ্রেফতারির রক্ষাকবচ প্রত্যাহার সুপ্রিম কোর্টের
উল্লেখ্য, বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ শুক্রবার সকালে দেওয়া রায়ের মাধ্যমে রাজীব কুমারের গ্রেফতারের অন্তর্বতী রক্ষাকবচ সরিয়ে নেয়। ফলে কলকাতার প্রাক্তন নগরপালকে গ্রেফতার করতে আপাতদৃষ্টিতে আর কোনও বাধা নেই সিবিআই-এর। তবে আইনি পদক্ষেপের জন্য রাজীব কুমারকে সাতদিনের সময় দিয়েছে আদালত। যার কারণে আগামী সাতদিন রাজীবকে গ্রেফতার করতে পারবে না সিবিআই। এই সাতদিনের মধ্যে আগাম জামিনের আবেদন জানাতে পারেন কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল, এমনই বলা হয়েছে সুপ্রিম রায়ের শেষ অনুচ্ছেদে।
এর আগে এই মামলায় রায়দান স্থগিত রাখে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। তখন জানা গিয়েছিল, গ্রীষ্মের ছুটির পর আদালত খুললে জুলাই মাসের শুরুতে রায় দেবে বেঞ্চ। ইতিমধ্যে গত বুধবার রাতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে নির্দেশ জারি হয়, সিআইডি-র অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেলের পদ থেকে সরতে হবে রাজীব কুমারকে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দপ্তরে হাজিরাও দিতে হবে। সেই নির্দেশ মতোই দিল্লিতে উপস্থিত হয়েছিলেন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার।
সারদা এবং অন্যান্য সংস্থার দুর্নীতির তদন্তের উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালে সিট গঠন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, এবং পরিচালনার দায়িত্বে রাখা হয় রাজীব কুমারকে। ২০১৪-য় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই তদন্ত অধিগ্রহণ করে সিবিআই। ২০১৮ সালে সিবিআই অভিযোগ করে, তদন্ত সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ লোপাট অথবা নষ্ট করেছেন রাজীব কুমার।