সিবিআই-এর মুখোমুখি হতে এক দিন আগেই শিলং পৌঁছে গেলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। বহু ‘বাধা-বিপত্তি-ঝড়’ সামলে অবশেষে রাজীব কুমারকে নাগালে পেতে চলেছে সিবিআই। রাত পোহালেই সিবিআইয়ের মুখোমুখি হবেন রাজীব কুমার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ‘নিরপেক্ষ জায়গা’ হিসেবে শিলংকে বাছা হয়েছে। শনিবার সিবিআই-এর কাছে হাজিরা দিতে এদিনই শিলং-এ পৌঁছে গেলেন কলকাতার নগরপাল। এদিকে, সারদা কেলঙ্কারির তদন্তে রাজীবের মতো দুঁদে আইপিএস-কে জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআই-এর কাছে রীতিমতো ‘বড় পরীক্ষা’। সে পরীক্ষায় পাশ করতে তাই চেষ্টার খামতি রাখছেন না তদন্তকারীরা। রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের শেষ মুহূর্তে সিবিআইয়ের ভরসা এখন ‘করণবাবু’।
শুক্রবার যখন কলকাতা থেকে শিলং রওনা দিলেন রাজীব কুমার, তখন সেই ‘করণবাবু’কে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠালেন সিবিআই আধিকারিকরা। কে এই করণবাবু? সারদা কাণ্ডের প্রাক্তন তদন্তকারী অফিসার ফণীভূষণ করণ। এ মামলার আগাগোড়া যাঁর নখদর্পণে। সারদা কাণ্ডের সেই প্রাক্তন তদন্তকারী আধিকারিককেই এদিন সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে ডেকে পাঠালেন সিবিআই-এর বর্তমান আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন, শিলং-এ কাদের প্রশ্নের মুখে পড়বেন রাজীব কুমার?
কিন্তু হঠাৎ কেন ফণীভূষণ করণের ডাক পড়ল সিজিও-তে? সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, রাজীব কুমারকে এমন প্রশ্নবাণের সামনে ফেলতে চায় সিবিআই, যাতে ‘দিশেহারা অবস্থা’ হয় নগরপালের। সেই কঠিন প্রশ্নাবলী সাজাতেই করণবাবুর শরনাপন্ন হয়েছেন বর্তমান অফিসাররা।
আরও পড়ুন- রাজীব কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের অন্দরে ঘুরছে বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ! কী লেখা তাতে?
কী কী প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন রাজীব কুমার? সূত্রের খবর, কুণাল ঘোষের বয়ানের উপর ভিত্তি করে যেমন প্রশ্ন করতে পারে সিবিআই, তেমনই সারদার ভাইস প্রেসিডেন্ট সোমনাথ দত্তের বয়ানের উপরও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে কলকাতার সিপির দিকে প্রশ্ন তাক করতে পারেন সিবিআই আধিকারিকরা। আরও জানা যাচ্ছে, রাজীব কুমারকে যখন একবার হাতের নাগালে পাচ্ছে সিবিআই, তখন প্রশ্নজালে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টাই করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
উল্লেখ্য, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর নেতৃত্বে ছিলেন রাজীব কুমার। সিবিআইয়ের অভিযোগ, সিটের দায়িত্বে থাকার সময় সারদা মামলার বহু তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছেন রাজীব কুমার। বহুবার নগরপালকে সমন পাঠালেও তিনি সিবিআইয়ের ডাক উপেক্ষা করেছেন। গত রবিবার কলকাতায় সিপির সরকারি বাসভবনে ‘সিক্রেট অপারেশন’ চালাতে সটান পৌঁছে যায় সিবিআইয়ের একটি দল। এই ঘটনায় ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর কেন্দ্র অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করছে দাবি করে ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আপাতত গ্রেফতারি থেকে রেহাই পেয়েছেন রাজীব কুমার। তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে এখনই গ্রেফতার করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।