আদালতের নির্দেশ পেয়েই সিবিআইের মুখোমুখি হতে রাজি হলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। মঙ্গলবার সিবিআইয়ের অধিকর্তাকে চিঠি লিখে কলকাতার পুলিশ কমিশনার জানান, তিনি শিলংয়ে গিয়ে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হবেন। চিঠিতে নগরপাল লিখেছেন, ‘‘আগামী ৮ তারিখ শিলংয়ে গিয়ে হাজিরা দিতে পারব।’’ যে সিবিআই-এর ডাকে সাড়া না দেওয়ায় এত কাণ্ড, অবশেষে সেই সিবিআই-এর সঙ্গে দেখা করতে সম্মত হলেন রাজীব কুমার। রাজীব কুমারের বাড়িতে রবিবার সন্ধ্যায় সিবিআই হানার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ধর্না শুরু করেছিলেন, এদিন সন্ধ্যায় তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, রাজীব কুমারের চিঠি প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা বলেন, ‘‘চিঠি দিলেই তো হয় না, কবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তা ঠিক করবে সিবিআই।’’
আরও পড়ুন, কেলেঙ্কারি! মমতার ধর্না মঞ্চের সামনে রাস্তা অবরোধে চিটফান্ড ক্ষতিগ্রস্তরা
এখনই কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না, মঙ্গলবার এ কথা স্পষ্ট করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করার নামে রাজীব কুমারকে ডেকে গ্রেফতার করা যাবে না বলেও নির্দেশ শীর্ষ আদালতের। পাশাপাশি তদন্তে সহযোগিতার জন্য সিবিআইয়ের কাছে রাজীব কুমারকে হাজিরা দিতে হবে বলেও জানিয়ে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
তবে কলকাতার নগরপাল রাজীব কুমার, রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র ও মুখ্যসচিব মলয় দে’কে আদালত অবমাননার নোটিস ধরিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারির আগে কলকাতার সিপি রাজীব কুমার, ডিজিপি বীরেন্দ্র ও মুখ্যসচিব মলয় দে’কে এর জবাব দিতে হবে। জবাবে সন্তুষ্ট না হলে, ওই তিনজনকেই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি আদালতে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন, রাজীবের গ্রেফতারিতে সুপ্রিম নিষেধাজ্ঞা, আদালত অবমাননার নোটিস মুখ্যসচিব-ডিজি-নগরপালকে
এদিকে, রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। শৃঙ্খলা ও সার্ভিল রুল ভাঙার অভিযোগে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে রাজ্যকে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
উল্লেখ্য, রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। সেই মামলার শুনানিই ছিল মঙ্গলবার। এদিন প্রথমে হলফনামা পেশ করে শীর্ষ আদালতে সিবিআই জানায়, তদন্তে নেমে বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে কিছু তথ্যপ্রমাণ হাতে পেয়েছে তারা। সিবিআইয়ের হলফনামায় জানানো হয়, সারদা-সহ কয়েকটি চিটফান্ডের প্রাথমিক তদন্ত চালিয়েছিল রাজ্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। সিবিআই-এর দাবি, বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ, যেমন ল্যাপটপ, লাল ডাইরি, মোবাইল ইত্যাদি লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। আর সম্পূর্ণ কাজটাই হয়েছিল সিট-এর শীর্ষ দায়িত্বে থাকা রাজীব কুমারের নির্দেশে।